হিউজের মৃত্যু: হেলমেটের সুরক্ষা নিয়েই প্রশ্ন?

হেরে গেলেন হিউজ। দুদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে অষ্ট্রেলিয়ান এ ক্রিকেটার আজ সিডনির একটি হাসপাতালে মারা যান। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৬ টেস্ট ও ২৫ ওয়ানডে খেলা এই ক্রিকেটারের বয়স হয়েছিল মাত্র ২৫ বছর। গত ২৫শে নভেম্বর ঘরোয়া ক্রিকেটের খেলায় প্রতিপক্ষের বোলারের বাউন্সারে সংজ্ঞা হারান হিউজ। মাথায় হেলমেট থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে ফিল হিউজেস সিডনিতে বাউন্সারে মাথায় চোট পেলেন, তা খতিয়ে দেখছে তার হেলমেট প্রস্তুতকারক সংস্থা মাসুরি৷ প্রাথমিক তদন্তে দেখা যাচ্ছে, হিউজেস পুরোনো মডেলের হেলমেট পরেছিলেন৷ সেই মডেলের হেলমেটে ব্যাটসম্যানের মাথা পুরোপুরি সুরক্ষিত থাকে না৷ অনেকের মতে, হিউজেস নতুন মডেলের হেলমেট পরলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না। ইংল্যান্ডের সংস্থা মাসুরি এখন ‘দ্য ভিশন সিরিজ’ বলে যে হেলমেট বের করেছে, তা নাকি সব দিক দিয়ে সুরক্ষিত। নতুন হেলমেট পরলে যে এমন হত না, এমন দাবি অবশ্য মাসুরির পক্ষ থেকে করা হয়নি। বরং বলা হয়েছে, টিভি ফুটেজ দেখে বিশেষজ্ঞরা  বোঝার চেষ্টা করছেন, কেন এমন হল। এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘ভিশন সিরিজের হেলমেটে ঘাড়ও অনেকটা সুরক্ষিত থাকবে। সে ভাবেই এর নকশা করা হয়েঠে।’ সত্তরের দশকে ক্রিকেটে প্রথম ব্যাটসম্যানরা হেলমেটের ব্যবহার শুরু করেন। এই ব্যাপারে পথিকৃৎ ছিলেন ইংল্যান্ডের ওপেনার ডেনিস অ্যামিস। তিনি বলেছেন, ‘আমার প্রথম হেলমেটটা ছিল মোটরসাইকেলের  হেলমেট। তখন হেলমেটে গ্রিল থাকত না। পরে এসব আসা শুরু হয়।’ ১৯৭৫ সালে পিটার লিভারের বাউন্সারে ইওয়ান চ্যাটফিল্ডের লুটিয়ে পড়া দেখেছেন অ্যামিস। ইংল্যান্ডের ফিজিও বানার্ড টমাস সে বার চ্যাটফিল্ডকে বাঁচিয়েছিলেন। যে যা-ই বলুন, হিউজেসের ঘটনার পরে বিশ্ব ক্রিকেটে ফের নতুন করে উঠে পড়েছে বাউন্সারের সামনে ব্যাটসম্যানের সুরক্ষার প্রশ্ন। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেকানিক্স বিশেষজ্ঞ এডুয়ার্ড ফার্নান্দো বলেছেন, ‘হেলমেটের ভিতরে স্কালক্যাপ ব্যবহার করার কথা উঠঠে। কিন্তু শতকরা ১০০ ভাগ সুরক্ষা তার পরেও পাওয়া কঠিন। কারণ বল বেকায়দায় লাগতেই পারে। এটা অনেকটা ফর্মুলা ওয়ান রেসিংয়ের মতো। আপনি সুরক্ষা ব্যবস্থা বাড়াতেই পারেন, কিন্তু তাতেও দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকেই যায়।’ দুবাইয়ে এক সভায় যোগ দিতে আসা বিতর্কিত আইপিল চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার সুন্দর রামন আবার ব্যাটসম্যানের সুরক্ষা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছেন। ‘সব দেশের ক্রিকেট বোর্ড এবং আইসিসি-র সুরক্ষা নিয়ে নতুন করে ভাবা দরকার। খেলায় দুর্ঘটনা ঘটতেই পারে, কিন্তু সুরক্ষাটা যত বেশি সম্ভব, নিশ্চিত হওয়া দরকার।

No comments

Powered by Blogger.