প্রথমে শ্বাসরোধ, পরে গুলি শেষে মৃতদেহে আগুন!

মেক্সিকোয় নিখোঁজ ৪৩ শিক্ষার্থীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে সন্দেহভাজন মাদক চোরাকারবারি দলের সদস্যরা। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল জেসাস মুরিলো শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন। ছয় সপ্তাহ আগে ওই শিক্ষার্থীরা নিখোঁজ হয়েছিল। জেসাস জানান, তিনটি মাদক চোরাকারবারি দলের সদস্যদের দাবি, পুলিশ ওইসব শিক্ষার্থীদের তাদের হাতে তুলে দিয়েছিল। এদের মধ্যে কাউকে শ্বাসরোধ করে এবং কাউকে গুলি করে হত্যা করে তারা। এরপর আগুন দিয়ে মৃতদেহ পুড়িয়ে দেয়। ২৬ সেপ্টেম্বর ইগুলা শহরে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষের সময় ওই ৪৩ শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়। তাদের উদ্ধারের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। শিক্ষার্থীদের নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সম্প্রতি গুয়েরিরস ইউনিডসের বেশ কয়েকজন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা জানিয়েছে, যে এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা নিখোঁজ হয়েছিল সেই এলাকা থেকে তারা ছয় ব্যাগ দেহাবশেষের সন্ধান পেয়েছে। এর আগে ওই এলাকায় গণকবরের সন্ধান পাওয়া যায়। তবে প্রাথমিক পরীক্ষার পর জানা যায়, ওইসব কবর নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের নয়। অ্যাটর্নি জেনারেল মুরিলো বলেন, দেহাবশেষ কাদের তা নিয়ে এই মুহূর্তে মন্তব্য করা কঠিন। ডিএনএ পরীক্ষার পরই নিশ্চিত করে বলা যাবে আসলে দেহাবশেষ নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের কিনা। অ্যাটর্নি জেনারেল আরও জানান, ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে এসব লাশ শনাক্ত করা অত্যন্ত কষ্টকর। কেননা তাদের ১৪ ঘণ্টা ধরে আগুনে পোড়ানো হয়েছিল। তবে এসব ধ্বংসাবশেষ শনাক্ত করা না গেলে ওই ছাত্রদের নিখোঁজ হিসেবেই বিবেচনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন ওই অ্যাটর্নি জেনারেল।
এদিকে চক্রের অভিযুক্ত তিন সদস্য জানিয়েছে, এসব ছাত্রদের পুলিশই তাদের হাতে তুলে দিয়েছিল। এদের মধ্যে ১৫ জনকে আগেই শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছিল পুলিশ। বাকিদের গুলি করে হত্যা করে মাদক সন্ত্রাসীরা। হত্যার পর তারা মৃতদেহগুলোর ওপর টায়ার, কাঠ এবং নানা প্লাস্টিকসামগ্রী রেখে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টা ধরে মৃতদেহগুলো আগুনে পোড়ানো হয়। পরে দেহাবশেষ বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দেয় তারা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে মঙ্গলবার দক্ষিণাঞ্চলীয় ইগুয়ালা নগরীর সাবেক মেয়র যোসে লুই আব্রাকা ও তার স্ত্রীকে মেক্সিকো নগরীর এক শহরতলি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিবিসি।

No comments

Powered by Blogger.