লৌহজংয়ে মুয়াজ্জিনের লাশ পদ্মায়

লৌহজং উপজেলার দক্ষিণ হলদিয়া গ্রামে প্রেমিকার বাড়িতে রাত যাপন করতে এসে লাশ হয়ে ফিরল আবদুল্লাহ নামে কেরানীগঞ্জ শুভঢ্যা মসজিদের মুয়াজ্জিন। মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার সকালে পদ্মা নদী থেকে তার ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আবদুল্লাহর ভগ্নিপতি মো. সোহেল শেখের দাবি, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। থানা পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার চরকামালদি গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে মো. আবদুল্লাহ কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ার সুভাঢ্যা পূর্বপাড়া জামিয়া চান মিয়া ওহাবুল উলুম মাদ্রাসার দাওরা হাদিসের ছাত্র ও মাদ্রাসা সংলগ্ন মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে দুই বছর কর্মরত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি শুভাঢ্যা এলাকায় এক বাসায় প্রাইভেট পড়াতেন। সেখানে পড়াতে গিয়ে পরিচয় হয় লৌহজং উপজেলার দক্ষিণ হলদিয়া গ্রামের মৃত হাছেন মাদবরের মেয়ে সানজিদা আক্তার সেতুর সঙ্গে। সেতু এ বাড়ির চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া তার স্বামী সাঈদ মালয়েশিয়া থাকেন। তার সাত বছর বয়সের একটি ছেলে ও তিন বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। প্রাইভেট পড়াতে গেলে প্রায় প্রতিদিন সেতুর সঙ্গে দেখা হতো আবদুল্লাহর। সেই থেকে দুজনের মন দেয়া-নেয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেতু আর আবদুল্লাহর পরকীয়ার বিষয়টি আবদুল্লাহর ভগ্নিপতি সোহেল জেনে ফেলে এবং মহল্লাবাসীর মধ্যে জানাজানি হলে সেতু বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চুনকুটিয়ার বাসা ছেড়ে লৌহজংয়ের দক্ষিণ হলদিয়ায় বাবার বাড়িতে চলে আসে। কিন্তু আবদুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ থাকে। এর আগে সেতুর ফোন পেয়ে আবদুল্লাহ বেশ কয়েকবার হলদিয়ায় সেতুর সঙ্গে দেখা করতে আসে। মঙ্গলবার আবদুল্লাহ রাত ১২টা নাগাদ মাওয়া থেকে সেতুদের দক্ষিণ হলদিয়ার বাড়িতে পৌঁছে। আবদুল্লাহ তার মোবাইল ফোনে মসজিদের খাদেম আবুল বাসারকে জানান তার আসতে সকাল হবে। ফজরের জামাতটা যেন তিনি পড়ান। এর পর থেকে আবদুল্লাহর সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করা যায়নি। একদিন পার হয়ে যাওয়ায় আবদুল্লাহ ফিরে না আসায় তার ভগ্নিপতি সোহেল কেরানীগঞ্জ থানায় একটি জিডি করেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে লৌহজং থানার পুলিশ এলাকাবাসীর কাছে খবর পেয়ে দক্ষিণ হলদিয়া এলাকায় আহাদ আলী মোল্লার বাড়ির সামনে নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় আবদুল্লাহর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে। এ বিষয়ে নিহতের ভগ্নিপতি মো. সোহেল শেখ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সানজিদা আক্তার সেতুর খোঁজে তার বাবার বাড়িতে গেলে ঘরে তালা ঝোলানো দেখতে পায়।

No comments

Powered by Blogger.