বনশ্রী থেকে ভুয়া এসপি গ্রেফতার

পুলিশের ইউনিফর্ম, র‌্যাঙ্ক ব্যাজ, ক্যাপ সবই আছে। আছে ছড়ি, ব্যাগ, পিস্তলের খাপ, খেলনা পিস্তল এবং ওয়াকিটকি। পুলিশ সুপার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন জনের সঙ্গে প্রতারণা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করাই তার পেশা। এরকম এক ভুয়া এসপি কাম এসিকে শনিবার গ্রেফতার করেছে খিলগাঁও থানা পুলিশ। আটক ব্যক্তির নাম এমআর মাসুদ ওরফে কাজী মাসুম ওরফে কেএম রেজাউল। খিলগাঁও থানার ওসি মোস্তাফিজ ভূঁইয়া যুগান্তরকে জানান, আটক হওয়া ব্যক্তি একেক সময় একেক নাম ও পদবি ব্যবহার করত। বিভিন্ন সময়ে পুলিশের এসি (অ্যাসিসট্যান্ট কমিশনার), সিনিয়র এএসপি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পুলিশ সুপার পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি ও প্রতারণা করত। শুক্রবার দুপুরে বনশ্রী এলাকার লাল রায় ও রাজন বিশ্বাস নামে দুই ব্যবসায়ীকে আটক রেখে এসপি পরিচয় দিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে মাসুদ। তিনি কোন ব্যাচের, কোন এলাকার এসপি এসব নিয়ে প্রশ্ন করার একপর্যায়ে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হয়। তারা থানা পুলিশকে বিষয়টি জানায়। পুলিশ তার বনশ্রীর বাসায় অভিযান চালিয়ে মাসুদকে গ্রেফতার করে।
ভুয়া পুলিশ কর্মকর্তার বাসা থেকে র‌্যাঙ্ক ব্যাজসহ পুলিশের ইউনিফর্ম পরিহিত ৩টি ফ্রেমে বাঁধানো বড় ছবি, বিভিন্ন র‌্যাঙ্কসংবলিত সিল, প্যাড, পুলিশের ক্যাপ, জুতা, হ্যাংগিং ব্যাজ, সাভারের বিপিএটিসির ৩৯তম এফটিসি লেখা ট্রেনিং ব্যাগ, ৪টি মোবাইল ফোন সেট (যেগুলোর স্ক্রিন সেভারে পুলিশ ইউনিফর্ম পরিহিত ছবি), ১০টি পুলিশ পরিচয়ধারী ভিজিটিং কার্ড ও একটি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়েছে।
শুক্রবার খিলগাঁও থানায় স্থানীয় অপু কুমার সাহা বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, মাসুদ এসপি পরিচয় দিয়ে দুলাল রায় ও রাজন বিশ্বাসকে জিম্মি করে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। অন্যথায় তাদের ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে মামলা দেয়ার হুমকি দেয়। বিষয়টি জানার পর খিলগাঁও থানা পুলিশ ওই ভুয়া পুলিশ কর্মকর্তার ভাড়া বাসায় অভিযান চালায়। তার বাসা থেকে জিম্মি করে রাখা দুলাল রায় ও রাজন বিশ্বাসকে উদ্ধার করা হয় এবং গ্রেফতার করা হয় মাসুদকে।
ওসি আরও জানান, বিভিন্ন স্থান থেকে তার প্রতারণার বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। মাস দুয়েক আগে মিরপুরে এক ব্যক্তির কাছ থেকে সে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল। ভুয়া এসপির বিরুদ্ধে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির আরও কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.