প্রাণভিক্ষা চাইবেন না কামারুজ্জামান

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না বলে জানিয়েছেন তার বড় ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামী। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সরকার আমাদের প্রতি যদি ভদ্র আচরণ করতো, তবে হয়তো প্রাণভিক্ষার ব্যাপারে আবেদন করার একটা রাস্তা থাকত। বাবা প্রেসিডেন্টের কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না।
ওয়ামী বলেন, সরকার যেখানে রায়ের রিভিউ আবেদনের সুযোগ দিচ্ছে না, পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি প্রকাশ করার অপেক্ষা রাখছে না। সেখানে কীভাবে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন তিনি। তিনি জানান, মঙ্গলবার সকালে বাবার সঙ্গে দেখা করার জন্য গাজীপুর কারা কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়। কারা কর্তৃপক্ষ বলেছে, আজ ছুটির দিন, তাই দেখা করার কোন সুযোগ বিধান নেই। এর কিছুক্ষণ পর জানতে পারি, বাবাকে গাজীপুর কারাগার থেকে ঢাকায় নেয়া হচ্ছে। সরকার তড়িঘড়ি করে আমার বাবাকে হত্যা করতে চাইছে।

হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অস্থির সরকার, বুধবারও হরতাল : জামায়াত
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডাদেশের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এবং তিনিসহ জামায়াতের নেতাদের মুক্তির দাবিতে আগামীকাল বুধবার ভোর ৬টা থেকে শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত আবার ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি দিয়েছে জামায়াত। দলের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ ও ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান গতকাল এক বিবৃৃতিতে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
জামায়াতের আমির মাওলানা নিজামীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেয়ার প্রতিবাদে এবং তার মুক্তি দাবিতে জামায়াতের পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার, রোববার ও গতকাল সোমবার দেশব্যাপী হরতাল পালিত হয়। এ ছাড়া রোববার জামায়াতের নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রদানের পরিপ্রেক্ষিতে তার প্রতিবাদে এবং তার মুক্তির দাবিতে জামায়াত আগামী বৃহস্পতিবার হরতালের কর্মসূচি দিয়েছিল।
বিবৃতিতে জামায়াত নেতৃদ্বয় বলেন, সরকার পরিকল্পিতভাবে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দকে হত্যা করার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য অস্থির হয়ে পড়েছে। ১৯৭১ সালে মুহাম্মদ কামারুজ্জামান উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। এ বয়সের একজন তরুণের বিরুদ্ধে সরকারের আনীত অভিযোগ কত গভীর ষড়যন্ত্রমূলক তা সবার কাছে স্পষ্ট। সুপ্রিম কোর্টের রায়ে দেশবাসী হতাশ। পূর্ণাঙ্গ রায় পাওয়ার পর মুহাম্মদ কামারুজ্জামান রিভিউ দায়ের করবেন। ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হলে তার রিভিউ গৃহীত হবে বলে আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি।
মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে হত্যার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে এবং এই মুহূর্তে তার মুক্তির দাবিতে জামায়াত ৪ নভেম্বর মঙ্গলবার পবিত্র আশুরার দিন মুহাম্মদ কামারুজ্জামানসহ জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর কাছে দেশব্যাপী দোয়ার অনুষ্ঠান এবং ৫ নভেম্বর বুধবার সকাল ৬টা থেকে ৭ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার সর্বাত্মক হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.