ভারতের আদালতে আজ সাক্ষ্য দেবেন ফেলানীর বাবা

কোচবিহারে বিএসএফ সেক্টর সদর দফতরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টের ডাক পেয়ে ভারত গেছেন ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম। তার সঙ্গে রয়েছেন মেজর এটিএম হেমায়েতুল ইসলাম ও পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন। রোববার বেলা ১১টার দিকে কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবির সদর দফতর থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেন তারা। বিকালে বুড়িমারি স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন হয়ে তারা ভারতে প্রবেশ করেন। আজ সকাল ১০টায় ওই কোর্টে সাক্ষ্য দেবেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম।
ভারতে রওনা দেয়ার সময় কাঁদতে কাঁদতে ফেলানীর বাবা বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে কষ্টদায়ক দৃশ্যটি আমি নিজের চোখে দেখেছি। আগেরবার বিচার পাইনি। এবার ন্যায়বিচারের আশা নিয়ে যাচ্ছি। আমার একটাই চাওয়া, ফেলানীর খুনি অমিয় ঘোষের ফাঁসি। নুরুল ইসলাম জানান, তিনি আদালতে খুলে বলবেন সেদিন কিভাবে তার মেয়ে ফেলানীকে খুব কাছে থেকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
অ্যাডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন বলেন, পুনর্বিচারের ভেতর দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে আগেরবার ন্যায়বিচার হয়নি। বিএসএফের হাবিলদার অমিয় ঘোষ আত্মস্বীকৃত খুনি। আশা করছি, তার সাজা নিশ্চিতের মাধমে ফেলানীর বাবা ও বাংলাদেশ ন্যায়বিচার পাবে।
মেজর এটিএম হেমায়েতুল ইসলাম বলেন, ন্যায়বিচার হলে সীমান্তে রক্তপাত বন্ধ হবে। বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় (অনিচ্ছাকৃত খুন) এবং বিএসএফ আইনের ৪৬ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন এবং সর্বনিু ৭ বছরের কারাদণ্ড।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্য অমিয় ঘোষ ১৫ বছরের কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে। ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্স কোর্টে ফেলানী হত্যার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। ওই বিচারে বিএসএফ সদস্যকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেয়া হয়। রায় প্রত্যাখ্যান করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি ও ক্ষতিপূরণ দাবি করে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে মানবাধিকার সংগঠন আসকের (আইন ও সালিশ কেন্দ্র) মাধ্যমে আবেদন করেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি পুনর্বিচারের সিদ্ধান্ত নেয় বিএসএফ।

No comments

Powered by Blogger.