মাহজাবিন হত্যা- টিপু দম্পতির জামিন ছেলে রিমান্ডে

স্ত্রী হত্যার অভিযোগে যশোর-৫ আসনের সাবেক এমপি খান টিপু সুলতানের পুত্র সুলতান সাদাবের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আনোয়ার সাদাত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গত শুক্রবার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এরফান উল্লাহর আদালতে তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক কাজী শরিফুল। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক জানান, হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সুলতান সাদাবকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে এ বিষয়ে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলেই পুলিশের ধারণা। জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি। এদিকে মেহজাবিনকে হত্যার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় অন্য দুই আসামি সাবেক এমপি খান টিপু সুলতান ও তার স্ত্রী আগাম জামিন নিয়েছেন।
মামলার বাদী নিহতের পিতা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবরসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে বলেন, হত্যাকা-কে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য প্রভাব খাটাচ্ছেন খান টিপু সুলতান। সুষ্ঠু তদন্ত হলেই তার মুখোশ উন্মোচন হবে বলে তিনি মনে করেন। অন্যদিকে, মাহজাবিনের মৃত্যুকে আত্মহত্যা দাবি করে খান টিপু সুলতান বলেন, আমার কোন কন্যা সন্তান নেই। মাহজাবিনকে আমি নিজের কন্যা মনে করতাম। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে, মাহজাবিনের ঘাতকদের সুষ্ঠু বিচার দাবিতে রাজপথে নেমেছে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। রোববার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায় মানববন্ধন করেছেন তারা। এ সময় তারা এ ঘটনাকে হত্যাকা- হিসেবে আখ্যায়িত করে এর সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানান। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে তারা জানান।  মাহজাবিন রাজধানীর হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করে ইন্টার্নি শেষ করার পর বিএসএমএমইউতে এফসিপিএস ডিগ্রি নিতে ভর্তি হয়েছিলেন। মাহজাবিনের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর ধানমন্ডির ৬ নম্বর সড়কের ১৪ নম্বর প্লটের কেয়ারী তাজ অ্যাপার্টমেন্টের তিন তলার ডি-২ ফ্ল্যাটে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে থাকতেন মাহজাবিন। ১৩ই নভেম্বর বিকালে সেন্ট্রাল হাসপাতাল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মাহজাবিনের শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানান, ওইদিন দুপুরে খাবারের জন্য ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে বাথরুমের দরজা ভেঙে মাহজাবিনকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

No comments

Powered by Blogger.