গোলানে ইসরায়েলের বড় ধরনের মহড়া, যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা

ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গোলান মালভূমিতে গত বুধবার থেকে বড় ধরনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে। এ মহড়ায় হাজার হাজার সেনা অংশ নিচ্ছে। ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে থাকা উত্তেজনা এবং প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েল এ মহড়া শুরু করেছে।


এদিকে ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা যদি ইরানে হামলা চালায় তাহলে মিসর ও জর্দানের সঙ্গে থাকা ইসরায়েলের শান্তিচুক্তি হুমকির মুখে পড়বে।
ইরানের পরমাণু স্থাপনাকে লক্ষ্য করে ইসরায়েল আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হামলা চালাতে পারে_বেশ কিছুদিন ধরেই এমন কথা শোনা যাচ্ছে। এ মহড়া এরই অংশ হতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছেন। তবে ইসরায়েলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা এ আশঙ্কা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, এ মহড়া তাদের রুটিনমাফিক কাজেরই অংশ। কোনো বিষয়ে যে দেশ সতর্ক তা বোঝাতে এ মহড়ার আয়োজন করা হয়নি। গত বছরও একই ধরনের মহড়া হয়েছিল। প্রসঙ্গত, পারস্য উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনসহ ২৫টি দেশ ১২ দিনের সামরিক মহড়া শুরু করেছে। এরই মধ্যে ইসরায়েলও মহড়া শুরু করেছে।
ইসরায়েলি নেতারা বরাবরই বলছেন, সিরিয়ায় মজুদ থাকা রাসায়নিক অস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলবিরোধীদের হাতে চলে যেতে পারে। এ ছাড়া ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরির কাছাকাছি পেঁৗছে গেছে বলেও অভিযোগ করেছে। এ জন্য সাম্প্রতিক সময়ে ইসরায়েলি নেতারা তেহরানে হামলা করার হুমকিও দিয়েছেন। তবে তেহরান সেসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে।
সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর কয়েকটি ইউনিটের কাজের সামর্থ্য ও প্রস্তুতি পরীক্ষা করতে সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল বেনি গানৎজ এ মহড়া করার নির্দেশ দিয়েছেন। ইসরায়েলের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে মহড়ার আয়োজন করা হয়েছে। মহড়ায় অংশ নেওয়ার জন্য সেনাদের ইহুদি নববর্ষের সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ১০ হাজারেরও বেশি সেনা এ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। সেনাবাহিনীর গোলন্দাজ ইউনিট ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা বৃহত্তম এ সমারিক মহড়ায় যোগ দিয়েছেন। ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তাদের মতে, মহড়াটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কারণ এতে জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তারাও অংশ নিয়েছেন। ইসরায়েল ১৯৬৭ সালে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধের সময় সিরিয়ার কাছ থেকে দখল করে নেয় এ মালভূমি।
এদিকে ইসরায়েলকে সতর্ক করে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা যদি ইরানে হামলা চালায় তবে মিসর ও জর্দানের সঙ্গে থাকা ইসরায়েলের শান্তিচুক্তি হুমকির মুখে পড়বে। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ইয়েদিয়ৎ আহরনৎ এ কথা জানিয়েছে। পত্রিকাটি জানিয়েছে, ওয়াশিংটন সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ইরানে হামলা চালালে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা ইসরায়েলের বন্ধু দেশগুলো আরব জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। সাম্প্রতিক সময়ে ইসলামবিদ্বেষী সিনেমার কারণে মুসলিম বিশ্বে বিক্ষোভ চলছে। সেই বিক্ষোভ থামাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকারগুলো। আর ইরানে ইসরায়েলি হামলা হলে পুরো আরব এবং মুসলিম বিশ্ব প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসবে। সূত্র : বিজনেস উইক, টেলিগ্রাফ, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.