পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের প্রত্যাবর্তন

মানবজমিন ডেস্ক: নানা নাটকীয়তা আর জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ঋণচুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ১শ’ ২০ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা দেয়ার কথা থাকলেও বাংলাদেশে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত ২৯শে জুন তা বাতিল করেছিল বিশ্বব্যাংক। একই সঙ্গে কানাডীয় একটি প্রতিষ্ঠানের কতিপয় নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ উত্থাপন করেছিল বিশ্ব ঋণদাতা এ সংস্থাটি। বাংলাদেশ সময় আজ সকালে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে দেয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন পুনরুজ্জীবিত করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের সঙ্গে দুর্নীতির সম্পৃক্ততা পাওয়ার পর ঋণচুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করতে কয়েকটি শর্ত জুড়ে দিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার সে পদক্ষেপগুলো নিতে ব্যর্থ হয়েছিল। বিশ্বব্যাংকের বেঁধে দেয়া শর্তসমূহের মধ্যে ছিল: ১) তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুর্নীতির সঙ্গে সন্দেহভাজন সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তাদের ছুটিতে পাঠানো ২) বাংলাদেশের দুর্নীতি-দমন কমিশনের আওতায় একটি বিশেষ তদন্ত ও বিচার কমিটি নিয়োগ ৩) তদন্তে প্রাপ্ত সব ধরনের তথ্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের গঠিত একটি প্যানেলের কাছে পেশ করা যাতে তারা বিশ্বব্যাংক ও অর্থ সহযোগিতা দেয়া সহ-প্রতিষ্ঠানগুলোকে তদন্তের অগ্রগতি, পর্যাপ্ততা ও নিরপেক্ষতা সম্পর্কে দিকনির্দেশনা দিতে পারেন, ৪) প্রকল্পের জন্য কিছু নতুন ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে সম্মত হওয়া যা বিশ্বব্যাংক ও সহযোগী অর্থ-লগ্নিকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রকল্পের ক্রয়-সংক্রান্ত প্রক্রিয়া সম্পর্কে আরও স্পষ্ট ধারণা দেবে। তবে ঋণচুক্তিটি বাতিল করে দেয়ার পর সরকার এখন বিশ্বব্যাংক আনীত দুর্নীতির প্রমাণসমূহ নিয়ে কাজ করা শুরু করেছে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। এদিকে অর্থায়নে রাজি হলেও এতে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে যে কোন দুর্নীতির ব্যাপারে সতর্ক ও সজাগ দৃষ্টি থাকবে বিশ্বব্যাংকের। ভবিষ্যতেও যে কোন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকার ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ঋণদাতা সংস্থাটি। এদিকে বাংলাদেশ সরকার ব্যাংকটির কর্তৃপক্ষের সহায়তায় নির্ধারিত শর্তগুলোর সন্তোষজনক বাস্তবায়ন ঘটাতে পারলে প্রকল্পে যোগ দেয়ার ব্যাপারে কোন আপত্তি থাকবে না বিশ্বব্যাংকের। তদন্ত সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মাচারীকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে ও একটি নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের কাজ এখন শুরু হয়েছে বলেও মনে করছে ব্যাংকটির কর্তৃপক্ষ।

No comments

Powered by Blogger.