নিজেদের ছোট ভাবতে নারাজ মুশফিক

ইশতিয়াক পারভেজ, ক্যান্ডি, (শ্রীলঙ্কা) থেকে: ২০০৭ সালে একবারই বাংলাদেশ খেলতে পেরেছে সুপার এইট-এ। প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ যে আশার আলো জাগিয়েছিল পরে ২০০৯ ও ২০১০ সালের বিশ্বকাপে তার ছিটে-ফোঁটাও ধরে রাখতে পারেনি। তবে এবার চতুর্থ বিশ্বকাপে আবারো স্বপ্ন দেখাচ্ছে টাইগার বাহিনী। আজ নিউজিল্যান্ডকে হারাতে পারলে সেই স্বপ্নের কাছাকছি থাবকবে বাংলাদেশ। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের এই লড়াইয়ে বাংলাদেশ এখনও ছোট দল বলেই বিবেচিত। কিন্তু বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম তা মানতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ফরমেটে ছোট দল আর বড় দল বলে কিছু নেই। যে দিন যে দল নিজেদের  সেরাটা খেলতে পারবে সেদিন তারাই পরবে জয়ের মালা। তাই ৫৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২৫টি জয় তুলে নেয়া নিউজিল্যান্ডকে হারানোর স্বপ্নই দেখছে বাংলাদেশ। দৃঢ় আত্মবিশ্বাস নিয়ে মুশফিক বলেন, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী। আমরা কিছু করে দেখাবোই। অন্যদিকে নিউজাল্যান্ডের অধিনায়ক রস টেইলরও  ছেড়ে কথা বলতে রাজি নন। গতকাল ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা নিজেদের প্রস্তুত রেখেছি। যে  কোনভাবে জয় পেতে চাই। আর সুপার এইট-এ জায়গা করে নিতে চাই।’ বাংলাদেশ সময় বিকাল চারটায় শুরু হবে খেলাটি।
বাংলাদেশের অধিনায়ক অবশ্য প্রতিপক্ষকে কোনভাবেই খাটো করে দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘আমাদের ভুলে গেলে চলবে না ওরা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আমাদের চেয়ে বেশি খেলেছে। ওরা আমাদের চেয়ে বেশি অভিজ্ঞ। আমরা যেমন গত তিন মাস ধরে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলছি। ওরাও কিন্তু সম্প্রতি ভারতকে হারিয়েছে টি-টোয়েন্টি সিরিজে।’ বাংলাদেশ এই পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে ২৪টি  আর জয় পেয়েছে ৮টি ম্যাচে। এছাড়াও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ এই পর্যন্ত খেলেছে একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। ২০১০ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের সর্বনিম্ন ৭৮ রানের  রেকর্ডটি সেই ম্যাচেই। বাংলাদেশ ম্যাচটি হেরেছিল ১০ উইকেটে।
তবুও বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক স্বপ্ন দেখছেন। কারণ এবারের দলটি আগের যে কোন দলের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী। দলে রয়েছেন তামিম ইকবালের মতো ব্যাটসম্যান। আর তার সঙ্গে ওপেনার হিসেবে নতুন ভূমিকায় ফর্মে ফিরেছেন মোহাম্মদ আশরাফুলও। তার পরেই আছেন বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তার পর নামবেন বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। আছেন সহ-অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও। তবে ব্যাটিংয়ের চেয়ে বাংলাদেশের বোলিং শক্তিকেই বেশি ভয় নিউজিল্যান্ড অধিনায়কের। বিশেষ করে বাঁহাতি স্পিনাররাই রস টেইলরের আতঙ্কের কারণ। ভয় থাকলেও নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক প্রস্তুত এই ঘূর্ণি মোকাবিলায়। তিনি বলেন, ‘আমরা ওদের ভালভাবেই খেলবো। আর আমাদের দলেও ভাল স্পিনার আছেন।’ আর নিউজিল্যান্ডের  আরেক তারকা গাপটিল তো বলেছেনই, ভারতের স্পিনাদের যেভাবে আমরা  মোকাবিলা করেছি সেভাবে খেলতে পারলেই বাংলাদেশকে হারানো খুব ভালভাবেই সম্ভব।
অন্যদিকে ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামও হাতছানি দিচ্ছে নিউজিল্যান্ডের পেসারদের। গতকাল বিকালে বৃষ্টি হওয়ায় এখনও উইকেট রয়েছে রহস্যময় হয়ে। তাই বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড দলের অধিনায়ক আজ কেমন দল নিয়ে মাঠে নামবেন তা নিয়ে সংশয়ে আছেন। এই বিষয়ে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা এখনও ঠিক করিনি কেমনভাবে দল সাজাবো। স্পিনার বেশি নিবো না পেসার তা- আমরা কাল (আজ) সকালেই ঠিক করবো।’ তিনি স্পিনারদের পাশাপাশি দলের পেসারদের উপরও ভরসা রাখছেন। বিশেষ করে ইনজুরি কাটিয়ে দলের ফিরেছেন বাংলাদেশ দলের পেস আক্রমণের মূল শক্তি মাশরাফি বিন মতুর্জা। সঙ্গে আছেন শফিউল ইসলাম আর তরুণ আবুল হোসেন। আর ব্যাটের সঙ্গে পেসটাও করতে পারেন নবাগত জিয়া। নিউজিল্যান্ডের অধিনায়কও দল গঠন নিয়ে আছেন চিন্তায়। আর সে কারণেই আজ দুই দলের জন্যই ক্যান্ডির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামের পিচ হতে পারে  সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্য। আর আজ দুই দলের মাঠের লড়াই প্রমাণ করে দিবে সুপার এইট-এর লড়াইয়ে এগিয়ে যাবে কে।

No comments

Powered by Blogger.