একটি টিকিট চাই তাঁদের

শুধু একটি টিকিট চাই তাঁদের। নিজ দেশে ক্রিকেট বিশ্বকাপ উপভোগের লোভ ছাড়তে চান না তাঁরা কেউই। তাই তো টিকিট সংগ্রহের লক্ষ্যে নাম নিবন্ধনের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা। এই অপেক্ষার পালা শেষে কেউ হাসিমুখে বাড়ি ফিরে গেছেন, কেউ বঞ্চিত হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এই চিত্র কেবল রাজধানীর নয়, সারা দেশের। এরই কিছু খণ্ডচিত্র তুলে এনেছেন আমাদের প্রতিনিধিরা:
সাতক্ষীরা: নাম নিবন্ধনের আশায় গত শনিবার গভীর রাত থেকে সাতক্ষীরায় সিটি ব্যাংকের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ায় কয়েক শ ক্রীড়ামোদী। অনেক প্রতীক্ষার পর গতকাল রোববার সকাল ১০টা থেকে নাম নিবন্ধনের কার্যক্রম শুরু হয়। তবে ইন্টারনেটের সার্ভার ঠিকমতো কাজ না করায় প্রথম দিনে শ খানেকের বেশি নাম নিবন্ধন করা সম্ভব হয়নি।
গতকাল রোববার ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা শহরের কাটিয়া এলাকার ইদ্রিস আলী, পলাশপোল এলাকার আবদুর রহমানসহ অনেকে জানান, তাঁরা দুপুর দুইটা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও নাম নিবন্ধন করাতে পারেননি।
সিটি ব্যাংক সাতক্ষীরা শাখার ব্যবস্থাপক মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা না আসায় উদ্বোধনী খেলার টিকিটের জন্য নাম নিবন্ধন করা হয়নি। তবে অন্য খেলা দেখার জন্য টিকিট পেতে নাম নিবন্ধন করা হয়েছে।
নীলফামারী: নাম নিবন্ধন করতে গতকাল ভোর থেকেই উৎসাহী লোকজন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শহরের সবুজপাড়ার মজিদুল হোসেন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নিজের নাম নিবন্ধন করান। তিনি বলেন, এর আনন্দই অন্য রকম। দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ খেলা দেখতে পারব, ভাবতেই দারুণ লাগছে।
মৌলভীবাজার: শনিবার রাত থেকে সিটি ব্যাংকের সামনে আগ্রহী ব্যক্তিদের ভিড় জমে। তারা শুয়ে-বসে রাত পার করে। সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয় নাম নিবন্ধনের কাজ। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলে এ কার্যক্রম।
সিটি ব্যাংক মৌলভীবাজার শাখার ব্যবস্থাপক মো. হুমায়ূন কবীর গতকাল জানান, ‘আমরা কম্পিউটারের মাধ্যমে নাম রেজিস্ট্রেশন করে টাকা নিয়ে রসিদ দিয়েছি। রসিদ দেখিয়ে নির্দিষ্ট স্থান থেকে খেলার এক সপ্তাহ আগে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। ব্যবস্থাপক জানান, গতকাল প্রায় ২০০ জনকে রসিদ দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
টাঙ্গাইল: সকাল ১০টার দিকে নাম নিবন্ধন শুরু হয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলে। সিটি ব্যাংকের টাঙ্গাইল শাখার ব্যবস্থাপক আনিসুর রহমান জানান, ইন্টারনেটের গতি কম থাকায় নাম নিবন্ধনের কাজে দেরি হয়েছে।
গতকাল ভোর থেকেই টিকিট কিনতে আসা লোকজন ব্যাংকের সামনে লাইনে দাঁড়ায়। উপচে পড়া ভিড় সামাল দিতে ব্যাংকের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীদের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ দায়িত্ব পালন করে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, সারা দিন লাইনে দাঁড়িয়েও তাঁরা ব্যাংকে ঢুকতে পারেননি। মওলনা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মিজানুর রহমান জানান, লাইন ভেঙে অনেকে ব্যাংকে ঢুকে পড়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।
নারায়ণগঞ্জ: লাইনে টোকেন দেওয়ার পরও সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ১০ থেকে ১২ জন মাত্র ব্যাংকে প্রবেশ করে নাম নিবন্ধন করাতে পেরেছেন। নিবন্ধন করতে না পেরে দুপুর দুইটার দিকে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করে। একপর্যায়ে তারা ব্যাংক লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে ব্যাংকের সামনের কাচ ভেঙে যায়। পরে পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপক শরীফুল আজিজ জানান, ইন্টারনেটে ধীরগতি থাকায় কিছুটা সমস্যা হয়েছে। প্রয়োজনে পুরো জানুয়ারি মাস টিকিট বিক্রি হবে।

No comments

Powered by Blogger.