আলোচনা- 'মেয়েদের লাঞ্ছনা বন্ধ করতে কঠোর হতে হবে' by আতাউস সামাদ

ভ টিজিং তথা নারীকে যৌন হয়রানি বন্ধ করার জরুরি প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে দেশের সব মহল একমত। সরকারও নারীকে উত্ত্যক্তকারীদের হুঁশিয়ার করেছে। মোবাইল কোর্ট বসিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। ফলে আশা করা হচ্ছিল যে নারী ও কিশোরীদের উত্ত্যক্ত এবং যৌন হয়রানি করা কমে আসবে। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, এখন পর্যন্ত তা হয়নি। বরং ওই বিকৃত যৌন মানসিকতার কিশোর, যুবক ও বয়স্ক লোকদের দ্বারা উৎপাত ও অত্যাচার সম্প্রতি যেন বেড়ে গেছে।
এমনকি তারা তাদের অনাচারের প্রতিবাদকারী কয়েকজনকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা এখন কেবলই ইভ টিজিংয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। তা এখন কিলিং ফর ইভ টিজিং অর্থাৎ নারী উত্ত্যক্ত করার জন্য হত্যায় পরিণত হয়েছে। এই ধারা বলতে গেলে রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু। ২৪ মার্চ রুবেল নামে এক বখাটে একটি মেয়ের মা-বাবাকে তাঁদের ঘরে ঢুকে গুলি করে হত্যা করে। ঘাতক তার পিস্তলটি সংগ্রহ করেছিল তার মামা যুবলীগ ক্যাডার ইস্রাফিলের কাছ থেকে।
কোনো মেয়ের শরীরে হাত দেওয়া, তার পথ রোধ করা, তাকে যৌন মিলনের কুপ্রস্তাব দেওয়া, অপহরণ করা এবং জোর করে বিয়ে করা_এ সবই ফৌজদারি অপরাধ। এমনকি রাস্তায় দাঁড়িয়ে কুৎসিত অঙ্গভঙ্গি করাও 'নুইসেন্স' সৃষ্টি করার দায়ে ফৌজদারি আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তবু এসব অপরাধ ঘটছেই এবং বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে প্রাণ নেওয়াতে ঠেকেছে।
এ-সংক্রান্ত কিছু পরিসংখ্যান ও কয়েকটি মর্মান্তিক ঘটনা আমরা বর্ণনা করব। তবে তার আগে ইভ টিজিং তথা এক বিশেষ ধরনের নারী নির্যাতন অবিলম্বে দেশজুড়ে পরিচালিত অভিযানের মাধ্যমে বন্ধ করতে সরকারি দৃঢ় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ জানানো হচ্ছে, তার কয়েকটি কারণ উল্লেখ করি।
প্রথমত, নারীদের প্রাণের নিরাপত্তা ও তাদের মান-ইজ্জত রক্ষা করার জন্য। শুধু আমাদের মতো প্রাচ্যের একটি দেশে যেখানে নারীরা তাদের ইজ্জতকে প্রাণের চেয়েও বেশি মূল্যবান মনে করে সেখানেই নয়, পাশ্চাত্য দেশগুলোতেও শালীনতা বিনষ্ট হলে মেয়েরা একেবারে ভেঙে পড়ে। কেউ কেউ সারা জীবনের মতো মানসিক স্থৈর্য হারিয়ে ফেলে এবং সব সময় পুরুষদের দ্বারা আক্রান্ত হবে বলে ভয় পায়। পাশ্চাত্যে এ নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ নেই। আমাদের দেশে তো কথাই নেই। তার ওপর আমাদের দেশে ধর্মপরায়ণ ও ধর্মভীরু মানুষের সংখ্যা বেশি। ইজ্জত হরণের পাপ এখানে অসহনীয়। একই কারণে ইজ্জত হারানোর বেদনা লাঞ্ছিত নারীটিকে মানসিকভাবে তো শেষ করেই দেয়, তার আপনজন ও আত্মীয়স্বজনের মনকেও অসহায়ত্ব ও শক্তিহীনতার গ্লানিতে ডুবিয়ে দেয়। অর্থাৎ নারী লাঞ্ছনা করার পাপ অন্যায় যাকে সইতে হয়, তার জন্য বড়ই ভয়াবহ ফল বয়ে আনে। আর এ জন্যই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অধিকারী সরকারকেই নারী অবমাননাকারীদের শক্ত হাতে দমন করতে হবে।
দ্বিতীয়ত, কয়েক দশকে বাংলাদেশে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিপুলভাবে বেড়ে গেছে। গ্রামে গরিব পরিবারের মেয়েরাও আজকাল বিদ্যালয়ে পাঠ নিতে যায়। এটা আমাদের জন্য আশার কথা। গুটিকয় ব্যক্তির যৌন লালসা ও বিকৃতির জন্য আমরা নারীশিক্ষার অগ্রগতির ধারাকে বিপরীতমুখী হতে দিতে পারি না।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশে শ্রমজীবীদের মধ্যে নারীর উপস্থিতি পষ্টভাবে লক্ষণীয়। বস্ত্রশিল্পে তো কথাই নেই, চালকল, মাটি কাটা, কৃষিকাজ, ইমারত নির্মাণ, মাছের ঘের, চিকিৎসাসেবা, শিক্ষকতা ও ব্যাংক কর্মীদের উল্লেখযোগ্য অংশ নারী। বহু সংসারেই নারীর আয় জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে পুরুষের আয়ে যে ঘাটতি থাকে তা পূরণ করছে। বাংলাদেশে নারী এখন পুরুষের মতোই অর্থনৈতিক শক্তির জোগানদার। দেশের বার্ষিক জাতীয় আয়ের উল্লেখযোগ্য হিস্যা সৃষ্টি হয় মেয়েদের হাতে। কোনো কারণে এতে ঘাটতি পড়া মানেই দেশ অর্থনৈতিক অবনতির পথে যাওয়া। বস্ত্রশিল্পে নারী শ্রমিকদের দক্ষতা ও পরিশ্রম দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হচ্ছে। বিদেশে যে প্রবাসী বাঙালিরা কাজ করছেন, তাঁদের অধিকাংশই পুরুষ। দেশে তাঁদের পরিবার সামাল দিচ্ছেন নারীরা। সম্প্রতি প্রস্তাব এসেছে, কানাডায় কৃষি শ্রমিক পাঠানো হবে। আরেক প্রস্তাব আছে যে আফ্রিকার কয়েকটি দেশে কৃষিযোগ্য পতিত জমি বাংলাদেশ সরকার ইজারা নিয়ে সেখানে বাংলাদেশি কৃষি শ্রমিকদের পাঠিয়ে তাদের দিয়ে চাষ করাবে। এই প্রস্তাব দুটি কার্যকর হলে বহু বাংলাদেশি কৃষি শ্রমিক বিদেশে যাবেন। দেশে তাঁদের পরিবার পাহারা দেবেন নারীরা। এই নারীদের নিরাপত্তা তো দেশকেই দিতে হবে।
চতুর্থত, আমরা ধনী দেশ নই। ধনী হতে আমাদের বহু সময় লাগবে। আমাদের সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রেখে চলতে হবে। আর এই কাজটি করতে পারার জন্য শক্তির প্রধান উৎস হচ্ছে আমাদের পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ। এসব মূল্যবোধের বিভিন্ন ধারার মধ্যে সব কয়টিতেই রয়েছে নারীকে সম্মান করা। মাতা, ভগিনী, স্ত্রী, কন্যা, সহকর্মী সব রূপে। এই মূল্যবোধগুলো ধ্বংস হতে দেব কেন আমরা? কিন্তু রূঢ় বাস্তব হচ্ছে এই যে কিছু নরপশু, তাদের মধ্যে আছে কিশোর, যুবক ও বয়স্ক মানুষ নারীদের অপমান করে, বেইজ্জত করে, বিপন্ন করে এসব মূল্যবোধের গোড়ায় কুঠারাঘাত করছে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে, মাঝেমধ্যেই পুলিশসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বাহিনীর কিছু সদস্য এমন আপত্তিকর কিছু কাজ করছেন বা কর্তাব্যক্তিরা তাঁদের উসকে দিয়ে করিয়ে নিচ্ছেন যে সন্দেহ জাগে রক্ষকই ভক্ষক হয়ে যাচ্ছে। সরকারের এ বিষয়ে খুবই সতর্ক থাকা দরকার।
এতক্ষণ যে আলোচনা করলাম, তার উৎপত্তি কিছু পরিসংখ্যানে ও কিছু ঘটনার খবর থেকে। সেগুলো উল্লেখ করি। সদয় পাঠক, সেগুলোর সঙ্গে ওপরের আলোচনার প্রাসঙ্গিক অংশগুলো মিলিয়ে নিতে অনুরোধ করি। মানবজমিন পত্রিকা বিভিন্ন তথ্যের সমন্বয় করে গত ২২ নভেম্বর রিপোর্ট করেছে, এ বছরের (২০১০) জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের (অর্থাৎ গত মাসের) মাঝ পর্যন্ত নারী উত্ত্যক্ত করা (ইভ টিজিং বললে হালকা মনে হয় আমার) প্রতিরোধ করতে গিয়ে মোট ৩৮ জন_২৭ নারী ও ১১ পুরুষ প্রাণ দিয়েছেন। এ প্রতিবেদনের তথ্য অসম্পূর্ণ হতে পারে। কারণ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, ২৭ অক্টোবর ২০১০ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে চলতি বছর জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত আট মাসে 'ইভ টিজিং'-এর শিকার হয়ে ২০ তরুণী আত্মহত্যা করেছেন।
সেভ দ্য চিলড্রেন, অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশে প্রতিনিধি প্রতিষ্ঠান চাইল্ড পার্লামেন্ট ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১০ প্রকাশিত এক সমীক্ষায় জানিয়েছে, বাংলাদেশে স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের মধ্যে ৬২ শতাংশ ইভ টিজিংয়ের শিকার হয়েছে। সংগঠনটি দেশের ৬৪টি জেলার ৫১১টি স্কুলে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য দিয়েছে। এদের তথ্যের সমর্থন মেলে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের রিপোর্টে। তারা বলছে, দেশে ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ইভ টিজিংয়ের ঘটনা ঘটে থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে।
কিন্তু এই মেয়ে শিক্ষার্থীদের ৬২ থেকে ৭০ শতাংশ উত্ত্যক্ত হওয়ার দুঃখজনক অভিজ্ঞতার বাইরে আরো যেসব ঘটনা ঘটছে, সেগুলো ভয়াবহ। গত বৃহস্পতিবার খবর প্রকাশিত হয়েছে যে মতলব উত্তর উপজেলার (চাঁদপুর) মৎস্য ব্যবসায়ী মনির হোসেনকে আব্দুল হান্নান নামে এক বখাটে মঙ্গলবার রাতে ছুরি মেরে খুন করেছে। কারণ নিহত ব্যক্তি তাঁর কন্যাকে হত্যাকারীর সঙ্গে বিয়ে দেননি। হান্নানের উৎপাতে মনির হোসেন প্রথমে মেয়ের স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেন এবং পরে গত বৃহস্পতিবার মেয়েকে দাউদকান্দির এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেন। ক্ষিপ্ত হান্নান এর পাঁচ দিনের মধ্যে তাঁকে হত্যা করে। হান্নান এ লেখার সময় পর্যন্ত পলাতক। গত নভেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার নলেয় গ্রামে বখাটেরা ৭০ বছর বয়স্ক দিনমজুর আব্দুস সোবহানকে পিটিয়ে ও গলা টিপে খুন করে। কারণ তিনি তাঁর নাতনিকে তাদের দ্বারা উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করেছিলেন। তাঁর যে নাতনির জন্য তিনি প্রাণ দিলেন, তার মা (আব্দুস সোবহানের কন্যা) একজন অসহায় বিধবা। কাছাকাছি সময়ে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মুসলিম মিয়া নামে ৫৭ বছর বয়স্ক গৃহস্থকে নিজগৃহে গভীর রাতে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে হারিস মিয়া নামে এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য। পুলিশ সূত্র সাংবাদিকদের জানিয়েছে, ওই হারিস মিয়া নিহত মুসলিম মিয়ার পুত্রবধূকে উত্ত্যক্ত করত এবং ঘটনার রাতে সে মেয়েটির ঘরে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করলে তিনি সাহায্যের জন্য চিৎকার করে ওঠেন। মুসলিম মিয়া এগিয়ে এলে নারী লাঞ্ছনাকারী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য তাঁকে হত্যা করে। গত ৫ নভেম্বর সংবাদপত্রে খবর প্রকাশ হয়, বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বায়েজীদ থানার পুলিশ কুঞ্জছাড়া এলাকায় নারী গার্মেন্ট কর্মীদের উত্ত্যক্ত করার দায়ে দুজন ইভ টিজারকে গ্রেপ্তার করে। এর কিছুক্ষণ পর প্রায় ৩০ জন যুবক থানায় এসে পুলিশকে মারধর করে তাদের ছিনিয়ে নিয়ে যায়। ওই সময় হামলাকারীদের ইটে মাথায় প্রচণ্ড চোট পেলে পুলিশের এসআই জহির হোসেনকে হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি করে চিকিৎসা নিতে হয়।
এর আগে নাটোরের বাগাতীপাড়ায় নারী উত্ত্যক্তকারীদের পিটুনিতে মারাত্মকভাবে আহত কলেজশিক্ষক মিজানুর রহমানের ঢাকায় বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইসিইউতে মৃত্যু (২৪ অক্টোবর), এর তিন দিনের মধ্যে এক লাঞ্ছিত কিশোরীর প্রতিবাদী মা চাঁপা রানী ভৌমিককে বখাটে দেবাশীষ সাহা রনি ফরিদপুরের মধুখালীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কা দিয়ে হত্যা করে এবং ২ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় সুশীল চন্দ্র মণ্ডল নামে এক বখাটে রূপালী রানী বরাতি নামে নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত এক কিশোরীকে জোর করে তার ঘরে নিয়ে কপালে সিঁদুর লাগিয়ে দিলে নিজগৃহে ফিরে মেয়েটির আত্মহত্যা করার মতো হৃদয়বিদারী নারী উৎপীড়নের ঘটনাগুলো এক মাসাধিককাল ধরে দেশের মানুষকে বেদনাহত, লজ্জিত ও ক্ষুব্ধ করে রেখেছিল। আর সে অবস্থার মধ্যেই এসেছে আরো 'কিলিং ফর ইভ টিজিং'-এর খবর। আশঙ্কা জাগে যে এই ভয়াবহ প্রবণতা বন্ধ করা বেশ শক্ত কাজ হবে। ইতিমধ্যে ঘরের মেয়েরা এমনকি কমবয়সী মায়েরা বাচ্চাদের নিয়ে স্কুলে গেলে বা অফিসে কাজ করতে গেলে বা দোকানপাটে গেলে তাঁরা নিরাপদে ঘরে না ফেরা পর্যন্ত কমবেশি অস্বস্তিতে থাকেন সবাই। তিন বিপদের কোনটি কখন হানা দেয়_যানবাহন দুর্ঘটনা, ছিনতাইকারীর আক্রমণ ও নারী উত্ত্যক্তকারীদের হাতে লাঞ্ছনা।
আমাদের মনে হয়, সরকারের জন্য সময় এসেছে নারীদের উত্ত্যক্ত বা লাঞ্ছিত করার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান করে আইন প্রণয়ন করার। ৩ ডিসেম্বর কালের কণ্ঠে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানলাম, সরকার ইতিমধ্যে এ-রকম চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। নারী লাঞ্ছনাকারীদের দ্রুতবিচার করা এবং উচ্চ আদালতে এগুলো দ্রুত শুনানি করে ফেলা, যাতে উত্ত্যক্তকারী বা ক্রিমিনালরা জামিন নিয়ে বাইরে থাকতে পারার সুযোগ কম পায়। মোটকথা, বিকৃতমনস্ক বা কুরুচিপূর্ণ লোকেরা, সে কিশোর হোক আর বয়স্ক হোক, যেন টের পায় যে মেয়েদের বেইজ্জত করার শাস্তি হবে কঠিন_ছিঁচকে পকেটমারের শাস্তির মতো নামকাওয়াস্তে কিছু নয়।
অনেকের মত হচ্ছে, এই অপরাধ ঠেকানোর জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা প্রয়োজন। এই অভিমতের যথেষ্ট মূল্য আছে। তবে এই সামাজিক আন্দোলন কিভাবে, কোন কোন অঙ্গনে এবং সমস্যাটির কোন কোন দিক নিয়ে কাজ করবে, তা সুষ্ঠুভাবে রূপ দেওয়ার জরুরি প্রয়োজন রয়েছে। যেমন_পশ্চিমা দেশগুলোতে কোনো ব্যক্তির দিকে, নারী হোক বা পুরুষ অহেতুক তাকিয়ে থাকা বা বারবার তাকানো সামাজিকভাবে নিষিদ্ধ। কারোর প্রিভেসি লঙ্ঘন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। একবার আমার স্ত্রী ও আমি ইপসউইচ শহরে আমার সম্বন্ধির বাড়িতে অবস্থান করছিলাম। তখন দুপুর। হঠাৎ দরজার ঘণ্টা বাজল। যাঁদের দেখলাম তাঁদের চিনি না; কিন্তু তাঁদের হাতের মোটা দস্তানা ও পোশাক দেখে বুঝলাম এঁরা রাজমিস্ত্রি। তাঁরা অতি বিনয় সহকারে যা বললেন তা হলো, তাঁরা পেছনের বাসায় কাজ করছেন। ইট গাঁথতে ছাদে উঠতে হবে। সেখান থেকে এ বাড়ির ভেতর দেখা যায়। অতএব ছাদে ওঠার জন্য আমাদের অনুমতি নিতে এসেছেন। তাঁরা এও বললেন, মাত্র ঘণ্টা দুয়েক কাজ করবেন। এই অনুমতি প্রার্থনার মাধ্যমে আমাদের কাচের জানালার পর্দা টেনে রাখার জন্য যে সতর্ক করে গেলেন তাঁরা, সেটা একধরনের সামাজিক মূল্যবোধ ও আন্দোলনের ফল। ঢাকায় তো গুলশান-বনানী-বারিধারায়ও কোনো নারী একা হাঁটলে বা রিকশায় থাকলে কিছু পুরুষ শিস দেয়। আর রাজধানীর ঘনবসতিপূর্ণ পাড়াগুলোর ছোট গলিতে কোনো নারীকে একা পেলে তো আর কথাই নেই।
=======================
যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'আগ্নেয়গিরির ওপরে পিকনিক'  আলোচনা- 'হিমালয়ের কোলে এক টুকরো দক্ষিণ এশিয়া'  স্মরণ- 'মানুষের জন্য যিনি জেগে থাকতেন'  রাজনৈতিক আলোচনা- 'আবার আসিব ফিরে!'  আলোচনা- 'রাজকীয় সম্মেলন'  যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'অসারের তর্জন-গর্জন'  আলোচনা- 'একজন নোবেল বিজয়ী, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও ক্ষুদ্রঋণের ফাঁদ'  স্মৃতি ও গল্প- সেই আমি এই আমি  গল্প- 'ঘুঁটি'  আন্তর্জাতিক- অং সান সু চির মুক্তি : মিয়ানমারে কি কি গণতন্ত্র আসছে?  শিল্পি- শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদের সৃষ্টিসমগ্র  সাহিত্যালোচনা- তান তুয়ান এঙের উপন্যাস দ্য গিফট গিফট অব রেইন  খবর- বন্ধ তাবানীতে লোক নিয়োগ  ইতিহাস- আমাদের ভাববিশ্ব ও বৌদ্ধবিহার  স্মৃতি ও ইতিহাস- ঢাকায় আমার প্রথম তিন দিনের স্মৃতিরোমন্থন  আলোচনা- একমাত্র প্রবাল দ্বীপটি কি হারিয়ে যাবে  আলোচনা- বাংলাদেশের সমাজ : মধ্যবিত্ত সমাচার  গল্প- দূর গাঁয়ের গল্প  সাহিত্যালোচনা- কবিতার হয়ে ওঠা  সাহিত্যালোচনা- কবিতার হয়ে ওঠাই কবির তপস্যা  পাঁচ গাড়িসহ দুই ছেলের মালপত্র বুঝে নেওয়া হলো আজ বাকিগুলো  গল্প- 'কোনো এক গাঁয়ের বিয়ে'  গল্প- মৌরস ভৌরস  শিল্পি- ড্রয়িং, স্কেচ না পূর্ণাঙ্গ চিত্রকর্ম  গল্পসল্প- নারী শিক্ষা মন্দির  স্মৃতি ও গল্প- ছিন্নস্মৃতি  স্মৃতি ও গল্প- স্কুল জীবনে বাঁকুড়া, জলপাইগুড়ি ও যশোর  ফিচার- তাঁহাদের দান  ফিচার- ডায়ানার আংটি  গল্প- 'অভিমান'  গল্প- 'মাটির ব্যাংক'  গল্পসল্প- 'সাগরকে যাঁরা পোষ মানালেন'


দৈনিক কালের কন্ঠ এর সৌজন্যে
লেখকঃ আতাউস সামাদ
সাংবাদিক ও কলামিস্ট


এই আলোচনা'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.