খবর, প্রথম আলোর-  দলীয় স্বার্থ বড় করে দেখবেন না ___প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থকে জাতীয় স্বার্থের চেয়ে বড় করে না দেখার জন্য বিরোধী দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বিরোধী দলের উদ্দেশে বলেন, ‘ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের মাধ্যমে জনগণকে কষ্ট দেবেন না। দেশের সম্পদ ধ্বংস করবেন না। আসুন, অমিত সম্ভাবনার বাংলাদেশকে আমরা বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অভিষিক্ত করতে যার যার অবস্থান থেকে একযোগে কাজ করি।’ সংসদে যোগ দেওয়ার অনুরোধ করে বিরোধী দলকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংসদে আসুন, যতক্ষণ খুশি কথা বলতে পারবেন। সে সুযোগ আপনাদের আছে।’
গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। রাশিয়া, বেলজিয়াম ও জাপান সফরের অর্জন দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতেই এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর দুই পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, তথ্যমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি ও প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান। প্রধানমন্ত্রীর সংস্থাপন উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদসহ রাজনৈতিক, সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সামনের সারিতে উপস্থিত ছিলেন।
মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী প্রশ্ন করেন, পর্যবেক্ষকদের মতে এক-এগারো থেকে রাজনীতিবিদেরা কোনো শিক্ষা নেননি, বিষয়টি কীভাবে দেখছেন? প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে অনেক ঝড় এসেছে। কিন্তু কেউ জনগণকে টলাতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর যে আদর্শ ও লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল, সে চেতনা নিয়েই দেশ ও সরকার এগিয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রে দ্বিমত, বিতর্ক, আলোচনা-সমালোচনা থাকবে। বাংলাদেশে ৩৬৫টিরও বেশি সংবাদপত্র ও অসংখ্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল রয়েছে। কোনো উন্নত বিশ্বেও এত সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেল নেই। দেশে বহু পত্রিকা ও মিডিয়া থাকায় সমালোচনাও নানা ধরনের। তিনি বলেন, বিরোধী দল যত বেশি সমালোচনা করবে, সরকারের কর্মকাণ্ড তত বেশি সুচারুভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। তবে বিরোধী দলের সেই সমালোচনা যেন দেশ ও জাতীয় স্বার্থে হয়, গঠনমূলক হয়, ব্যক্তিস্বার্থে না হয়।
হরতালবিরোধী প্রচার নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ হরতাল সমর্থন করলে এর পক্ষে প্রচার হবে, আর না চাইলে বিপক্ষে প্রচার হবে। তিনি পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘বিরোধী দলের হরতালের ইস্যু কী? জাতীয় স্বার্থে হরতাল ছিল? আমাদের হরতাল ছিল ভুয়া ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য। জনগণের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে ও দেশের মানুষের ভোটাধিকার রক্ষায় আমরা হরতাল করেছি। পরে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা করতে গিয়ে এক কোটি ৪৩ লাখ ভুয়া ভোটার ধরা পড়েছে। এতে আমাদের আন্দোলনের দাবি যে যৌক্তিক ছিল, তা প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু বিরোধী দলের হরতালের আসল কারণ কী, তা আর বলতে চাই না।’
বাড়ি কীভাবে ব্যবহূত হবে তা সামরিক বাহিনী সিদ্ধান্ত নেবে: সেনানিবাসের ওই বাড়ির জায়গায় কী করা হবে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সম্পত্তি সামরিক বাহিনীর। তাদের জায়গা কী কাজে ব্যবহূত হবে, তা তারাই সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, কতগুলো শর্তে বিরোধীদলীয় নেত্রীকে সেনানিবাসের বাড়িতে থাকতে দেওয়া হয়েছিল। আর আদালতে তো সরকার যায়নি। বিরোধীদলীয় নেত্রী নিজেই গিয়েছেন। তাই আদালতের রায় তো তাঁকে মানতেই হবে। তিনি প্রশ্ন করেন, বিরোধী দল কার বিরুদ্ধে হরতাল করেছে? আদালতের বিরুদ্ধে, নাকি সরকারের বিরুদ্ধে। এখানে সরকার তো কিছু করেনি। বিচার বিভাগ তো স্বাধীন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ভাঙা স্যুটকেস আর ছেঁড়া গেঞ্জি দেখানো হয়েছিল। এখন বাসার মালামাল সরাতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে ট্রাকের পর ট্রাকেও তা শেষই হচ্ছে না। মাল যাচ্ছে তো যাচ্ছেই। দেশি-বিদেশি চোখ ধাঁধানো মালপত্র, শাড়ি-গয়না, সোফাসেট, আসবাবপত্রের যেন শেষ নেই। এক বাড়ির মাল রাখতে কয়েক বাড়িতে যাচ্ছে। শুনলাম, বিরোধীদলীয় নেত্রী বাথরুমের কমোড ও ফিটিংসও নিতে চাইছেন। বললাম, দিয়ে দাও। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলেছি। আর বিরোধীদলীয় নেত্রী তাঁর বাথরুম ডিজিটাল করেছেন। আসলে বিরোধীদলীয় নেত্রীর ভালো বাসার প্রতি ভালোবাসা থেকেই এটা করা হয়েছে।’
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের প্রথম ২৩ মাসের সঙ্গে বর্তমান সরকারের ২৩ মাসের কর্মকাণ্ডের তুলনামূলক বিশ্লেষণ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওই ২৩ মাসে কী ঘটেছে—খুন, ধর্ষণ, রাজনৈতিক নির্যাতন-নিপীড়ন। আর আমাদের ২৩ মাসে কী হয়েছে, তার তুলনা করলেই দুই দলের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও তফাতটা বোঝা যাবে। যেখানে রাজনৈতিক সংস্কৃতি হচ্ছে দুর্নীতি আর সন্ত্রাস, সে অবস্থা থেকে দেশকে রাতারাতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি।’
ত্রিদেশীয় সফরে অর্জন: সম্প্রতি রাশিয়া, বেলজিয়াম ও জাপান সফরকে অত্যন্ত ফলপ্রসূ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২৩ মাস হলো আমরা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েছি। এ সময়ে আমাদের গৃহীত বিভিন্ন আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক পদক্ষেপ বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের একটি ইতিবাচক উজ্জ্বল ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি। বাংলাদেশ বেরিয়ে এসেছে নেতিবাচক পরিচয় থেকে।’ ঢাকায় যানজট নিরসনে জাপান সরকার মনোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও আন্ডারগ্রাউন্ড সাবওয়ে নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাপান আমাদের শুধু ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্রই নয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন অংশীদার। পদ্মা সেতু নির্মাণে আমাদের কিছুটা অর্থসংকট ছিল। আমার সফরের সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রী স্বতঃস্ফূর্তভাবেই এ সেতু নির্মাণে অতিরিক্ত আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর আগে তারা ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপান-বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি বিমানের ফ্লাইট চালুর বিষয়েও সরকার সিদ্ধান্ত নেবে।
================================
মার্কিন কূটনীতিকদের গোপন তারবার্তাঃ পাকিস্তানে জঙ্গি নির্মূলে ১০-১৫ বছর লাগবে  অধ্যাপক ইউনূসের অর্থ স্থানান্তর : গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাখ্যা  শিল্প-অর্থনীতি 'সময় এসেছে মাথা তুলে দাঁড়াবার'  প্রকৃতি- 'কিয়োটো প্রটোকল ভেস্তে যাচ্ছে, কানকুনে কী হবে?  আলোচনা- 'মেয়েদের লাঞ্ছনা বন্ধ করতে কঠোর হতে হবে'  যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'আগ্নেয়গিরির ওপরে পিকনিক'  আলোচনা- 'হিমালয়ের কোলে এক টুকরো দক্ষিণ এশিয়া'  স্মরণ- 'মানুষের জন্য যিনি জেগে থাকতেন'  রাজনৈতিক আলোচনা- 'আবার আসিব ফিরে!'  আলোচনা- 'রাজকীয় সম্মেলন'  যুক্তি তর্ক গল্পালোচনা- 'অসারের তর্জন-গর্জন'  আলোচনা- 'একজন নোবেল বিজয়ী, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও ক্ষুদ্রঋণের ফাঁদ'  স্মৃতি ও গল্প- সেই আমি এই আমি  গল্প- 'ঘুঁটি'  আন্তর্জাতিক- অং সান সু চির মুক্তি : মিয়ানমারে কি কি গণতন্ত্র আসছে?  শিল্পি- শিল্পগুরু সফিউদ্দীন আহমেদের সৃষ্টিসমগ্র  সাহিত্যালোচনা- তান তুয়ান এঙের উপন্যাস দ্য গিফট গিফট অব রেইন  খবর- বন্ধ তাবানীতে লোক নিয়োগ  ইতিহাস- আমাদের ভাববিশ্ব ও বৌদ্ধবিহার  স্মৃতি ও ইতিহাস- ঢাকায় আমার প্রথম তিন দিনের স্মৃতিরোমন্থন  আলোচনা- একমাত্র প্রবাল দ্বীপটি কি হারিয়ে যাবে  আলোচনা- বাংলাদেশের সমাজ : মধ্যবিত্ত সমাচার  গল্প- দূর গাঁয়ের গল্প  সাহিত্যালোচনা- কবিতার হয়ে ওঠা  সাহিত্যালোচনা- কবিতার হয়ে ওঠাই কবির তপস্যা  পাঁচ গাড়িসহ দুই ছেলের মালপত্র বুঝে নেওয়া হলো আজ বাকিগুলো  গল্প- 'কোনো এক গাঁয়ের বিয়ে'  গল্প- মৌরস ভৌরস  শিল্পি- ড্রয়িং, স্কেচ না পূর্ণাঙ্গ চিত্রকর্ম  গল্পসল্প- নারী শিক্ষা মন্দির  স্মৃতি ও গল্প- ছিন্নস্মৃতি  স্মৃতি ও গল্প- স্কুল জীবনে বাঁকুড়া, জলপাইগুড়ি ও যশোর  ফিচার- তাঁহাদের দান  ফিচার- ডায়ানার আংটি



দৈনিক প্রথাম আলো এর সৌজন্যে


এই খবর'টি পড়া হয়েছে...
free counters

No comments

Powered by Blogger.