দেশমের বিষাদ দ্রগবার আনন্দ

আজ আবার সেই পথে দেখা হয়ে গেল! চ্যাম্পিয়নস লিগের পরশু রাতটি ছিল এ রকমই। ফেরা আর পুরোনো ক্লাবের সঙ্গে দেখা হয়ে যাওয়ার গল্পে সাজানো। সেই গল্প কারও কাছে বিষাদের, কারও জন্য আনন্দের উপলক্ষ।
স্টামফোর্ড ব্রিজে পুরোনো ক্লাবের মুখোমুখি হয়েছেন মার্শেইয়ের কোচ দিদিয়ের দেশম। মার্শেইয়ের বিপক্ষে ম্যাচটি আবেগের ছিল চেলসির আইভরিয়ান স্ট্রাইকার দিদিয়ের দ্রগবার জন্যও। দ্রগবার ‘বড় খেলোয়াড়’ তকমা জুটেছে মার্শেইতে খেলা একমাত্র মৌসুমেই।
দুই দিদিয়েরের আবেগের ম্যাচটি শেষ হয়েছে দেশমের হতাশা আর দ্রগবার আনন্দে। জন টেরি ও নিকোলাস আনেলকার গোলে নিজেদের মাঠে মার্শেইকে ২-০ গোলে হারিয়েছে চেলসি। ফেরার গল্প ছিল এসি মিলান ও আয়াক্সের ম্যাচেও। এসি মিলানের জার্সি গায়ে আমস্টারডামে গেছেন আয়াক্সের দুই পুরোনো সৈনিক জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ ও ক্লারেন্স সিডর্ফ। এতে অবশ্য আনন্দ-বিষাদের গল্প নেই। ম্যাচটি ড্র হয়েছে ১-১ গোলে।
পিছিয়ে পড়া মিলানকে ড্রও এনে দিয়েছেন সাবেক দুই আয়াক্স খেলোয়াড় সিডর্ফ ও ইব্রা। এল হামদাওয়ির গোলে ম্যাচের ২৩ মিনিটে পিছিয়ে পড়ে এসি মিলান। ৩৭ মিনিটে সিডর্ফের ডিফেন্স চেরা পাস থেকে সমতাসূচক গোলটি করেন ইব্রাহিমোভিচ। মিলানের জার্সি গায়ে চ্যাম্পিয়নস লিগে এটি তাঁর তৃতীয় গোল।
সমতা ফিরিয়ে এগিয়ে যাওয়ারই অনেক সুযোগ পেয়েছিল রোনালদিনহোবিহীন মিলান। চোটের কারণে খেলতে পারছেন না মিলানের ব্রাজিলিয়ান তারকা রোনালদিনহো। এগিয়ে যাওয়ার সুযোগের সদ্ব্যবহার অবশ্য করতে পারেননি ইব্রা-ইনজাগিরা। তবে প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে ড্র নিয়ে ফিরতে পেরেই খুশি মিলান কোচ মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি, ‘দল ভালো খেলেছে। আমাদের জয়ের সুযোগ ছিল, কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি। যদিও আমস্টারডাম থেকে ড্র নিয়ে ফিরতে পারাটা ইতিবাচকই।’
ভালো খেলার তৃপ্তি চেলসি কোচ কার্লো আনচেলত্তির মনেও। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে হারের তেতো স্বাদ নিয়েই এই ম্যাচটি খেলতে নেমেছিল ‘ব্লু’রা। কিন্তু আনচেলত্তি যেমন বললেন তাতে মার্শেইয়ের বিপক্ষে জয় সেটা ভুলিয়ে দিয়েছে, ‘সর্বশেষ পরাজয়ের একটা ভালো বিশ্লেষণ ছিল আমাদের কাছে। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে খেলেছিও ভালো। এখন ওই পরাজয়টা ভুলে যেতে পেরেছি।’
আনচেলত্তি এটা বললেও চেলসি তাদের সেরা খেলাটা পরশুও খেলতে পারেনি। ফরাসি জুটি আনেলকা আর মালুদার দুর্দান্ত পারফরম্যান্সই মূলত জয় এনে দিয়েছে চেলসিকে। তবে মার্শেই কোচ দেশম চাঁছাছোলা ভাষায় নিজের দলের চাঁছাছোলা সমালোচনা করে বলেছেন, ‘শারীরিক ও কৌশলগতভাবে আমাদের ওপরে ওরা ছড়ি ঘুরিয়েছে। দুই দলের মধ্যে ব্যবধান ছিল বিশাল।’
ম্যাচে নিয়ন্ত্রণের কথা বললে রিয়াল মাদ্রিদ ফ্রান্স থেকে অজেরির বিপক্ষে জয় নিয়ে ফিরেছে ঠিকই, কিন্তু ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা তারা করতে পারেনি। কষ্টেসৃষ্টে ১-০ গোলে জিতেছে রিয়াল। শেষ বাঁশি বাজার ৯ মিনিট আগে ‘সুপারসাব’ অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া করেছেন গোলটি।
দুর্দান্ত এক ভলিতে ডি মারিয়া গোলটি করার আগ পর্যন্ত রিয়াল রোনালদো-হিগুয়েইনদের মাধ্যমে যেমন আক্রমণ হেনেছে, তেমনি পাল্টা আক্রমণ করেছে অজেরিও। দুই দলের গোলে শট নেওয়ার পরিসংখ্যানও তাই বলে। রিয়াল অজেরির গোলে ১০টি শট যেমন নিয়েছে, তেমনি অজেরিও ৬টি শট নিয়েছে রিয়ালের গোলে। অজেরির দুর্ভাগ্য যে তাদের দুটি শট পোস্টে লেগে ফিরেছে।
তবে মরিনহো ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ-টিয়ন্ত্রণ নিয়ে ভাবছেন না। দল গোল পাওয়াতেই খুশি তিনি। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে একটু রসিকতাও করলেন পর্তুগিজ কোচ, ‘সবাই বলাবলি করছিল, আমরা যেহেতু গোলই করতে পারছি না তাই আমাদের জয় প্রাপ্য নয়। আজ রাতে (পরশু) সবাই বাস্তববাদী হবেন। নিশ্চয়ই বলবেন, জয়টা আমাদের প্রাপ্য।’
ওদিকে সুইজারল্যান্ডের এফসি বাসেলের মাঠ থেকে বায়ার্ন মিউনিখ জয় নিয়ে ফিরেছে বাস্তিয়ান শোয়েনস্টাইগারের দুই গোলের কল্যাণে। দ্বিতীয়ার্ধে বিতর্কিত পেনাল্টি গোলে বায়ার্নকে সমতায় ফিরিয়ে শেষ বাঁশি বাজার ১ মিনিট আগে ফ্রি-কিক থেকে জয়সূচক গোল করেন ‘শোয়েইনি’।

No comments

Powered by Blogger.