ভারতীয় ক্রিকেটে মোদি-পর্ব শেষ

কোনোভাবেই দুজনের তুলনা চলে না। তার পরও একই জায়গায় মিলে গেলেন সুনীল গাভাস্কার আর লোলিত মোদি। আইপিএলের গভর্নিং কাউন্সিল থেকে দুজনেরই নাম কাটা গেল। মোদি বিতাড়িত হয়েছেন আর ‘লিটল মাস্টার’ নাকি সরে যেতে চেয়েছিলেন নিজে থেকেই। কাল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) ৮১তম সাধারণ বার্ষিক সভায় ছেঁটে ফেলা হলো মোদিকে। বোর্ডের আর কোনো পদেই থাকলেন না বছর দুয়েক দোর্দণ্ড প্রতাপে ভারতীয় ক্রিকেটের রাজ্য শাসন করা মোদি।
আইপিএলের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন চিরায়ু আমিন। নবগঠিত গভর্নিং কাউন্সিলের আট সদস্যের মধ্যে সাবেক ক্রিকেটার আছেন দুজন—রবি শাস্ত্রী ও মনসুর আলী খান পতৌদি। এই দুজন আগের গভর্নিং কাউন্সিলেও ছিলেন। বিসিসিআইয়ের হবু সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন এন শ্রীনিবাসন। শশাঙ্ক মনোহরের মেয়াদ শেষ হলে আগামী বছর বোর্ডের ভার নেবেন বর্তমান বিসিসিআই সচিব। রাজীব শুক্লার নাম ঘোষণা করা হয়েছে বিসিসিআইয়ের সহসভাপতি হিসেবে। আইপিএলের ওপর বিসিআইয়ের আরও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হলো এই সভায়।
আপাতত মোদি-পর্বের সমাপ্তি ঘটল ভারতীয় ক্রিকেটে। ৫ বছর আগেও ক্রিকেট মহলে অচেনা তরুণ ব্যবসায়ী ললিত মোদি অবিশ্বাস্য দ্রুততায় উঠে আসেন ভারতীয় ক্রিকেটের প্রভাব-বলয়ে। তাঁর হাত ধরেই আইপিএল ও টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নস লিগের আবির্ভাব। ক্রিকেটের মানচিত্রে বড় এক পরিবর্তনের নাম এই আইপিএল। প্রথমবারের মতো খেলোয়াড়দের নিলাম হয়। যেখানে মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হন ধোনি, পিটারসেন, ফ্লিনটফরা। বিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয় টিভি সম্প্রচার স্বত্ব।
ক্ষমতা আর অর্থের এই দেদার খেলায় শুরু হয়ে যায় রাজনীতিও। মোদির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, কারসাজি, অর্থ আত্মসাতের মতো অভিযোগ এনে তাঁকে সাময়িক নিষিদ্ধ করা হয়। উচ্চ আদালতে এ নিয়ে একাধিক মামলা বিচারাধীন। রায় মোদির পক্ষে আসুক আর না-ই আসুক; বিসিসিআই থেকে ‘বিতাড়িত’ হতে হলো তাঁকে। একই সময় সাবেক বোর্ড ও আইসিসি সভাপতি জগমোগন ডালমিয়ার ওপর আরোপিত সব অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিল বিসিসিআই।

No comments

Powered by Blogger.