তুরস্কে সংবিধান সংশোধনে জনগণের রায়

তুরস্কে অনুষ্ঠিত গণভোটে সে দেশের সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব জয়যুক্ত হয়েছে। ‘হ্যাঁ’ প্রস্তাবে ৫৮ শতাংশ ও ‘না’ প্রস্তাবে ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইপ এরদোগান বলেছেন, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের অগ্রগতি সাধন এবং আইন সমুন্নত করার ক্ষেত্রে তুরস্ক একটি ঐতিহাসিক পর্যায় অতিক্রম করল। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভোটের ফলাফলকে স্বাগত জানিয়েছে। তবে বিরোধী দলগুলো এর সমালোচনা করে বলেছে, সরকার এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের ওপর তাদের নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি করছে।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দেশের সাত কোটি ৪৮ হাজার লোকের মধ্যে মোট ভোটার চার কোটি ৯৫ লাখ। মোট ভোটারের ৭৮ শতাংশ ভোট দিয়েছেন। মধ্য আনাতোলিয়ায় সর্বোচ্চসংখ্যক ‘হ্যাঁ’ ভোট পড়েছে। অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি ‘না’ ভোট পড়েছে রাজধানী ইস্তাম্বুলে।
কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রস্তাবিত সংশোধনী পাস হলে বেসামরিক আদালতের কাছে দেশের সেনাবাহিনীর জবাবদিহিতা ও বিচারক নিয়োগের ব্যাপারে পার্লামেন্টের ক্ষমতা বাড়বে, সরকারি কর্মকর্তারা ধর্মঘট করার আইনগত অধিকার পাবেন এবং ১৯৮০ সালের সামরিক অভ্যুত্থানে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী এরদোগান বলেছেন, এর মাধ্যমে গণতন্ত্র ও জনগণের শক্তি একীভূত হবে। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয় এবং ‘কালো ক্ষমতা’ থেকে যারা নিজেদের আখের গোছায়, তারা এই সংশোধনী সমর্থন করে না। তবে এই সংশোধনী গণতন্ত্রের জন্য কাম্য ছিল।
তুরস্ক কয়েক বছর ধরেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্যভুক্ত হতে চাইছে। সদস্য হওয়ার জন্য ইইউ যেসব শর্ত দিয়েছে, এই সংশোধনীর মধ্য দিয়ে তা পূরণ করা সম্ভব হবে। ইতিমধ্যে ইইউ ওই সংশোধনী তুরস্কের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে বলে ঘোষণা করেছে। ইইউ এ জন্য এরদোগানের নেতৃত্বাধীন একেপি পার্টিকে অভিনন্দন জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রধানমন্ত্রী এরদোগানকে টেলিফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তবে তুরস্কের বিরোধী দলগুলো বলেছে, সংবিধানের প্রস্তাবিত সংশোধনী পাস হলে সরকারের পক্ষে বিচারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।
তাদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন সরকার ইসলামি ভাবাদর্শে বিশ্বাসী। এ কারণে সংবিধান সংশোধন করে তারা কামাল পাশার ধর্মনিরপেক্ষ ভাবাদর্শভিত্তিক সংবিধানকে বিকৃত করতে পারে।

No comments

Powered by Blogger.