মমতা ও শারদ পাওয়ারকে কংগ্রেসে ফেরানোর উদ্যোগ

রেলমন্ত্রী তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কৃষিমন্ত্রী ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নেতা শারদ পাওয়ারকে দীর্ঘদিন ধরেই দলে ফেরানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল ক্ষমতাসীন দল ভারতের জাতীয় কংগ্রেস। সম্প্রতি কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী আবারও তাঁদের কংগ্রেসে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন। এ জন্য দলের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে মমতা বা শারদ পাওয়ার কেউই কংগ্রেসে ফেরার ব্যাপারে এখনো ইতিবাচক সাড়া দেননি।
দায়িত্ব পাওয়া কংগ্রেস নেতারা তৃণমূলের নেত্রী মমতাকে দলে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। কংগ্রেস নেতৃত্বের মতে, মমতা এখনো কংগ্রেসের রাজনীতিই করছেন। তাই মূল দলেই ফিরে আসুন। এতে দল যেমন শক্তিশালী হবে, তেমনি ভারতজুড়ে মমতার ভাবমূর্তিও বাড়বে। মমতাকে জানানো হয়েছে, তিনি কংগ্রেসে ফিরলে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব তাঁকেই দেওয়া হবে। দলের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদেও দল তাঁকে প্রার্থী করবে।
মূলত পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের উত্থানে জাতীয় কংগ্রেস শঙ্কিত। সেটি তাদের নেতাদের কথাবার্তায় স্পষ্ট। পশ্চিমবঙ্গে মমতার উত্থানে ক্ষতি বেশি হবে কংগ্রেসেরই। এ বিষয়টিও উপলব্ধি করছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাই দীর্ঘদিন ধরেই কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মমতাকে ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু তাতে তেমন সাড়া মেলেনি। এবারে পৌর নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাপক সাফল্যের পর কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী আবারও মমতাকে দলে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেন।
কলকাতার প্রভাবশালী বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা গত বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মমতা এখনো কংগ্রেসের এই প্রস্তাবে সাড়া দেননি। মমতা বলেছেন, ১৯৯৭ সালে কংগ্রেস ছাড়ার পর তিনি কঠোর শ্রম দিয়ে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন তৃণমূলকে। এখন সেই দল কারও হাতে তুলে দেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। যদিও মমতা কংগ্রেস নেতাদের বুঝিয়েছেন, ‘কংগ্রেসের আদর্শের সঙ্গে আমার কোনো দ্বন্দ্ব নেই। কিন্তু কংগ্রেসের সঙ্গে আমার মিশে যাওয়া সম্ভব নয়।’
একইভাবে এনসিপির নেতা শারদ পাওয়ারকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে কংগ্রেস। কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে এসে ১৯৯৯ সালে এনসিপি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন পিএ সাংমা ও প্রফুল প্যাটেলের মতো নেতারাও। এখন এনসিপি এবং কংগ্রেস সমঝোতা করেই মহারাষ্ট্রের ক্ষমতায় রয়েছে। প্রফুল প্যাটেল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হয়েছেন। মন্ত্রী হয়েছেন পিএ সাংমার কন্যাও। সব মিলিয়ে কংগ্রেস চাইছে, শারদ পাওয়ারের দল মিশে যাক কংগ্রেসের সঙ্গে। তবে শারদ পাওয়ারের দল এ ব্যাপারে এখনো স্পষ্ট অবস্থান জানায়নি।

No comments

Powered by Blogger.