অ্যান্ডারসনকে ছেড়ে দেওয়ায় রাজীব গান্ধীর ভূমিকা ছিল

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিয়ন কার্বাইডের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়ারেন অ্যান্ডারসনকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হাত ছিল। হেডলাইনস টুডে ও সিএনএন-আইবিএনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ভোপালে ইউনিয়ন কার্বাইডের রাসায়নিক কারখানায় ১৯৮৪ সালের ৩ ডিসেম্বর দুর্ঘটনা ঘটে। এতে বেসরকারি হিসাবে ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু এবং প্রায় ছয় লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত সোমবার ওই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। এতে ইউনিয়ন কার্বাইডের ভারতীয় আট কর্মকর্তাকে শাস্তি দেওয়া হলেও ওয়ারেন অ্যান্ডারসনের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি রায়ের কোথাও তাঁর সম্পর্কে কোনো কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
পিসি আলেকজান্ডারের বরাত দিয়ে ভারতীয় নিউজ চ্যানেল হেডলাইনস টুডে জানায়, রাজ্যসরকারের সহায়তা ছাড়া অ্যান্ডারসন মুক্তি পেতে পারেন না। তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী মধ্যপ্রদেশের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে অ্যান্ডারসনকে ছাড়ার ব্যাপারে ভূমিকা রাখেন। রাজীব গান্ধীর সঙ্গে অর্জুন সিংয়ের বৈঠকের পর অ্যান্ডারসনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা কিছুই জানতেন না।
সিএএনএন-আবিএন-এর এক প্রতিবেদনেও একই ধরনের তথ্য দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর নথি অনুযায়ী রাজীব গান্ধী সরকারের নির্দেশে ৭ ডিসেম্বর অ্যান্ডারসনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই নথি অনুযায়ী অ্যান্ডারসন ৮ ডিসেম্বর ভারত ত্যাগ করেন। এ ঘটনায় ভারতের রাজনীতিকেরা পারস্পরিক কাদা ছোড়াছুড়ি করেন ও ইউনিয়ন কার্বাইডের ভারত শাখার ওপর চাপ সৃষ্টি করেন।
ভোপাল দুর্ঘটনার তিন দিন পর ৭ ডিসেম্বর ওয়ারেন অ্যান্ডারসনকে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু ওই দিনই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে রাজ্যসরকারের বিশেষ বিমানে তিনি নয়াদিল্লি যান। অ্যান্ডারসনকে বিমানবন্দর পর্যন্ত নিয়ে যান মধ্যপ্রদেশের তত্কালীন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা মতি সিং। তিনি বলেন, আমি শুধু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আদেশ পালন করেছি। অভিযোগ রয়েছে, মধ্যপ্রদেশের তত্কালীন মুখ্যসচিব ব্রাম সরুপ ব্যক্তিগতভাবে মতি সিংকে ডেকে পাঠান। পরে অ্যান্ডারসনকে ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। মতি সিং বলেন, অ্যান্ডারসনকে ছেড়ে দেওয়ার কারণ তাঁকে জানানো হয়নি। অর্জুন সিং এসব প্রতিবেদনকে অমূলক বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ওই ঘটনার সময় পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে কিছু কাজ করতে হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.