আবাহনীর অনেক প্রতীক্ষার জয়

শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে জার্সি খুলে মাঠে দৌড়াতে শুরু করলেন আবাহনীর খেলোয়াড়েরা। ডাগআউট ছেড়ে কর্মকর্তারাও যোগ দিলেন তাতে। অন্যদিকে মোহামেডানের কেউ বসে পড়লেন মাঠে কেউ বা পার্শ্বরেখার বাইরে, হতাশায় ঢেকে যাওয়া একেকটি মুখ। কিন্তু হাজার দেড়েক দর্শকের সামনে নীল-হলুদের উন্মাদনা চলল আরও অনেকক্ষণ। ‘কত দিন’ পর তারা চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের বিপক্ষে জয় পেল!
‘কত দিন’—শব্দটার সঠিক সমাধান পাওয়া গেল না। কেউ বললেন পাঁচ বছর, কেউ বললেন তারও বেশি সময় পর এই জয়। বাংলাদেশের পেশাদার ফুটবলের তৃতীয় আসরে এসে আবাহনী ‘চিরশত্রু’কে কাল এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ১-০ গোলে হারাল। গত দুটি বি-লিগে চারবার মুখোমুখি হয়ে দুটি ড্র ও দুটি পরাজয় জুটেছিল আবাহনীর কপালে।
যে জয়টা প্রায় সোনার হরিণ হয়ে ধরা দিচ্ছিল না, সেটি পেয়ে আনন্দে উদ্বেল আবাহনী শিবির। স্কোরলাইন দেখে মনে হবে জয়টা কষ্টার্জিত। কিন্তু বাস্তবে তা নয়। কোচ নজরুল ইসলামের বিদায়ের পর এলোমেলো হয়ে পড়া মোহামেডানের বিপক্ষে অনেক বড় জয়ই পেতে পারত আবাহনী।
প্রথমার্ধে দু দলের এলোমেলো ফুটবলের পর দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই খেলার মোড়টা ঘুরিয়ে দেন আবাহনীর দুই স্ট্রাইকার মিঠুন ও সাখাওয়াত। ৫২ মিনিটে ডান প্রান্ত থেকে সাখাওয়াতের ক্রসে হেড করে গোলটি করেন মিঠুন। গোলরক্ষক উত্তম বড়ুয়া বলে হাত লাগিয়েও গোল রুখতে পারেননি। এরপর সাখাওয়াত-মিঠুন আরও অন্তত পাঁচটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন। ব্যর্থতার দায় দুজনেরই সমান। শেষদিকে মিঠুনই নষ্ট করেছেন দিনের সহজতম সুযোগ।
মাঝে একবার মোহামেডানের তৌহিদ জটলা থেকে গোল পরিশোধের সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর শট চলে যায় আবাহনী গোলরক্ষকের হাতে।
এত ব্যর্থতার পরও জয় পেয়ে আবাহনীর প্রধান কোচ মোহাম্মদ কাশেম খুশি, ‘আমরা পাঁচ গোলে জিততে পারতাম। কিন্তু ভাগ্য খারাপ। তার পরও সন্তুষ্ট।’
তবে খেলায় প্রথমার্ধে এগিয়ে যেতে পারত মোহামেডান, যদি তৌহিদের শটটি ক্রসবারের ওপর দিয়ে না যেত। খেলা শেষে সমর্থকদের গালিগালাজ হজম করতে হয়েছে মোহামেডান সমর্থকদের। আবাহনীর কাছে দীর্ঘদিন পর পরাজয় মেনে নিতে তাদের কষ্ট হওয়ারই কথা।

No comments

Powered by Blogger.