বাংলাদেশের সিরিজ জয় অভিনন্দন, তবে

বোলারদেরই কাঁধে ভর করে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ওয়ানডে ম্যাচটি জিতল বাংলাদেশ। স্পিনার-ত্রয়ী আবদুর রাজ্জাক, এনামুল হক জুনিয়র, সাকিব আল হাসান এবং মিডিয়াম পেসার নাজমুল হোসেনের অসামান্য বোলিংয়ে মাত্র ৪৪ রানে অলআউট করা গেল জিম্বাবুয়েকে। একই সঙ্গে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে নিশ্চিত হলো সিরিজ বিজয়। অভিনন্দন বাংলাদেশ, অভিনন্দন!
আমরা আনন্দ করতেই পারি। কিন্তু আনন্দটাকে বাঁধভাঙা চেহারা পেতে দিলেন না ব্যাটসম্যানরা। এই অল্প কটা রান তাড়া করতে গিয়ে চারজন ব্যাটসম্যান আউট হয়ে ফিরলেন। যেভাবে এলোপাতাড়ি খেলতে গিয়ে অন্তত দুজন ব্যাটসম্যান আউট হলেন, তা নিতান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতা এবং পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে ব্যর্থ হওয়ার প্রমাণ।
স্বভাবত প্রত্যক্ষ দায়টা ব্যাটসম্যানদের। কিন্তু আমাদের ভেবে দেখাটা খুব জরুরি যে এ ধরনের আউট হয়ে ফেরা বা আত্মবিসর্জনের দায় শুধু ব্যাটসম্যানদের কি না। একটু তলিয়ে দেখলে আমরা সেই বহুল আলোচিত সিদ্ধান্তেই পৌঁছাব, ঘরোয়া ক্রিকেটের শোচনীয় অবস্থাই আমাদের ব্যাটসম্যানদের এই ‘শিক্ষা’ দিচ্ছে। বারবার দুনিয়ার সব ক্রিকেট-বিশ্লেষক তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত একটি মানসম্পন্ন ঘরোয়া ক্রিকেট-কাঠামো গড়ে তুলতে পারিনি আমরা; যে কাঠামো আমাদের ব্যাটসম্যানদের সত্যিকার প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেটে অভ্যস্ত করতে পারে।
মনে রাখা দরকার, চলতি সিরিজের প্রথম ম্যাচটিই আমরা জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছি; যার কারণ হিসেবে অনেকেই এ সিরিজের আগের টি-টোয়েন্টিকে দায়ী করছেন। তাহলে কি আমরা অগ্র-পশ্চাত্ বিবেচনা না করে ঘরোয়া ক্রিকেটের সূচি তৈরি করছি! এসব বিষয় ক্রিকেট বোর্ডকে পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজ জয় স্বস্তির হলেও তা নিয়ে আমোদে ভেসে যাওয়ার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। নানা কারণে খর্ব শক্তির জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাফল্যে ভেসে গেলে সমূহ বিপদ। সামনে আমাদের বড় বড় দলের বিপক্ষে পরীক্ষা দিতে হবে; বড় পরীক্ষাটা দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ। ফলে ক্রিকেট বোর্ড বিজয়ের জোয়ারে গা না ভাসিয়ে সত্যিকারের ক্রিকেট-কাঠামো ও মান উন্নয়নে কাজ করবে, এটাই প্রত্যাশা।

No comments

Powered by Blogger.