জলবায়ু খাতে ৯শ’ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

জলবায়ু খাতে বাংলাদেশকে ১১ দশমিক ৩ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসাবে স্থানীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ দাঁড়ায় ৯০৪ কোটি টাকা। এই টাকা দিয়ে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক, আগাম পূর্বাভাস সক্ষমতা ও সতর্কবার্তা প্রদান ব্যবস্থা আধুনিক ও শক্তিশালী করবে সরকার। বুধবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) এ ধরনের একটি চুক্তি সই হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত আবাসিক প্রতিনিধি চিমিয়াও ফান এবং সরকারের পক্ষে ইআরডির ভারপ্রাপ্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম চুক্তিতে সই করেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (আইডিএ) বিনা সুদে এ ঋণ প্রদান করছে। তবে বিশ্বব্যাংকের বিতরণকৃত এ ঋণের ওপর দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। ৬ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরে ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে হবে। এই টাকা পেলে আবহাওয়া অফিসে আরও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা যাবে। এতে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগাম সংকেত পাওয়া যাবে। যার মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিতে সহজ হবে। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার এ ঋণের অর্থে ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক আবহাওয়া ও জলবায়ু সেবা’ (বিউব্লিউসিএসআরপি) প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এর আওতায় বাংলাদেশে আবহাওয়া, পানি, দুর্যোগ ঝুঁকি এবং জলবায়ু সম্পর্কিত তথ্যসেবা পদ্ধতি শক্তিশালী হবে। একই সঙ্গে নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, রাজশাহী ও নওগাঁ- এই ৪ জেলায় আকস্মিক বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং অনাবৃষ্টির বিষয়ে কমিউনিটি পর্যায়ে আগাম সতর্কবার্তা প্রদান ব্যবস্থা চালু করা হবে।
এতে এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ উপকৃত হবে। প্রকল্পের আওতায় দেশব্যাপী এগ্রো-মেট্রোলজিক্যাল ইনফর্মেশন সিস্টেম পোর্টাল স্থাপনের পাশাপাশি ৪৮৭টি উপজেলায় এগ্রো-মেট ইনফর্মেশন কিওস্কস এবং ৪ হাজার ৫১টি ইউনিয়নে এগ্রো-মেট ডিসপ্লে বোর্ড স্থাপন করা হবে। এতে ৩০ হাজারেরও বেশি কৃষক পরিবার আবহাওয়া এবং পানি সম্পর্কিত তথ্য প্রাপ্তির প্রবেশাধিকার পাবে এবং এর মাধ্যমে তারা আবহাওয়া অবস্থা হিসাবে রেখে সময়োপযোগী পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। ইআরডির ভারপ্রাপ্ত সচিব শফিকুল আযম বলেন, ‘দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবেলা বা দুর্যোগ প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। তিনি বলেন, ‘আবহাওয়ার ধরন একটি (সিঙ্গল) দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এ বিষয়টি অনুধাবন করে আমরা এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বৃহত্তর সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরি করছি। একই সঙ্গে আবহাওয়া ও জলবায়ু মনিটরিং ফ্রেমওয়ার্ক আধুনিকায়নের সঙ্গে কমিউনিটি পর্যায়ে আগাম সতর্ক ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে।’ চিমিয়াও ফান বলেন, বাংলাদেশ প্রায়ই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়। আবহাওয়ার নির্ভুল পূর্বাভাস এবং তথ্যাদির অভাবে অর্থনীতির প্রধান খাতগুলোর উৎপাদনশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, যেমন-কৃষি।

No comments

Powered by Blogger.