শেখ হাসিনা-মোদির বৈঠকে থাকছেন মমতা

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মানে দিল্লিতে ৮ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের দেয়া নৈশভোজে উপস্থিত থাকছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই নৈশভোজে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও উপস্থিত থাকবেন। নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়ে দু’দিন আগেই মমতাকে স্বয়ং প্রণব মুখোপাধ্যায় ফোন করেছিলেন। কার্যত তখনই মমতা দিল্লি যাবেন বলে কর্মসূচি নিশ্চিত হয়েছিল। বুধবার কলকাতা থেকে প্রায় চারশ’ কিলোমিটার দূরে বাঁকুড়ায় জেলা সফরে গিয়ে মমতা আনুষ্ঠানিকভাবে হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ ও ডিনারে হাজির থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। মমতার ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, বঙ্গবন্ধু কন্যার জন্য তিনি শাড়ি ছাড়াও বিশেষ উপহার দিল্লিতে নিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, এদিনও মমতা বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘদিনের ব্যক্তিগত মধুর সম্পর্ক। এর সঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ মেলাবেন না।’ শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় উপস্থিত থাকার জন্য ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ দিন কয়েক আগে মমতাকে ফোন করে আমন্ত্রণ জানান। আনুষ্ঠানিকভাবে আমন্ত্রণপত্র নবান্নে এসে পৌঁছানোর পর এদিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। যোগ দেবেন রাষ্ট্রপতির নৈশভোজে। এছাড়া ওইদিন হায়দরবাদ হাউসে হাসিনার সম্মানে প্রধানমন্ত্রী মোদি যে মধ্যাহ্নভোজ দিচ্ছেন সেখানেও মমতা হাজির থাকতে পারেন। গত বছর ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও ছিটমহল চুক্তির সময় দু’দফায় হাসিনার সঙ্গে দেখা ও কথা হয়েছিল মমতার। আর এবার গুরুত্বপূর্ণ দিল্লি সফরে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনার প্রেক্ষাপটে দিল্লিতে মমতার উপস্থিতি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তবে দিন কয়েক আগে মমতা কলকাতায় তিস্তা নিয়ে বলেছিলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গবাসীর স্বার্থবিরোধী কোনো চুক্তিতে সই করব না।’ যেহেতু ভারত-বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয় রয়েছে, সেহেতু শেখ হাসিনার সম্মানে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের দেয়া নৈশভোজে যোগ দিচ্ছেন মমতা।
হাসিনার এই ভারত সফর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। দু’দেশের মধ্যে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। সীমান্ত, জঙ্গি সমস্যা, তিস্তা চুক্তি নিয়েও আলোচনা হবে দু’দেশের মধ্যে। দিল্লি-ঢাকা বাস পরিষেবার উদ্বোধন হবে। মমতা ইতিপূর্বে জানিয়ে দিয়েছেন, ভারত-বাংলাদেশের মৈত্রীর সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়। তিস্তা চুক্তি হোক কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের স্বার্থ বিঘ্নিত করে নয়। সবদিক খতিয়ে দেখা হোক। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের মধ্যে তিস্তা জড়িত। রাষ্ট্রপতি আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ভারত-বাংলাদেশের দু’দেশের সম্পর্কের বিষয় রয়েছে। তাই দিল্লি যাচ্ছি। যোগ দেব রাষ্ট্রপতির দেয়া নৈশভোজে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এবারের দিল্লি সফর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও সাক্ষাৎ হতে পারে মমতার। রাজনৈতিক দিক থেকে বিজেপির বিরুদ্ধে তৃণমূল কংগ্রেস লড়াই আন্দোলন করছে। কিন্তু কেন্দ্র-রাজ্যের সম্পর্কটি অন্য সম্পর্ক। জনস্বার্থবিরোধী কোনো কাজে কেন্দ্রের সমালোচনা করবে তৃণমূল, এটা আগেরই সিদ্ধান্ত। কিন্তু ভালো কাজে সহযোগিতাও থাকবে এই বার্তাটাও দেয়া হয়েছে। আর যেখানে বৈদেশিক সম্পর্কের বিষয়টি জড়িত সেখানে হসিনার ভারত সফরকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েই দেখা হচ্ছে। মমতার এই দিল্লি সফরে আগামী দিনে কেন্দ্র-রাজ্যের সম্পর্কের আরও খানিকটা উন্নতি হবে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। প্রসঙ্গত, ৭ এপ্রিল শুক্রবার শেখ হাসিনা ভারত সফরে আসছেন।

No comments

Powered by Blogger.