নওগাঁ রাম নবমীতে লক্ষ মানুষের আগমন

আত্মবিশ্বাস আর ধর্মীয় অনুভুতি থেকে মনবাসনা পুরণের আশায় মানুষ যায় সেখানে। সেই সংখ্যা হাজার পেড়িয়ে লাখে পোঁছে যায়। নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ঠাকুর মান্দায় শ্রী শ্রী রঘুনাথ জীউ মন্দিরে রামের জন্মদিন উপলক্ষে প্রতিবছর রাম নবমীতে মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় পুঁজা ও নানান ধর্মীয় উৎসব। উৎসব পরির্দশনে আসেন ধর্ম মন্ত্রানালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নওগাঁ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি। প্রচলিত আছে রাম নবমীর দিনে প্রতিবছর দৃষ্টি ফিরে পায় অনেক দৃষ্টি প্রতিবন্ধি। সেই আশায় ছোট্ট শিশু থেকে নানান বয়সের দৃষ্টি প্রতিবন্ধিদের সারাদিন রেখে দেয়া হয় মন্দির প্রাংগনে একটি নির্ধারিত স্থানের ছাউনিতে। বন্ধা নারীরা সন্তান লাভের আশায় মন্দির প্রাংগনে আঁচল বিছিয়ে মনবাসনার প্রার্থনা করে দিনভর। প্রায় আড়াই’শ বছরের প্রাচীন মন্দিরটির প্রতিষ্ঠার দালিলিক প্রমাণ আজ আর নেই। সব কিছুই আজ প্রতিষ্ঠিত মানুষের অন্তরে। তাইতো প্রত্যন্ত ওই পল্লিতে দীর্ঘ পথ পেড়িয়ে হিন্দু ভক্তরা মন্দিরে যান পূন্য লাভের আশায়। ওই তীর্থস্থানে যাওয়ার সড়কটি আগে ছিল কাঁচা। বর্তমান সরকারের সময় তৈরী করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন সড়ক। মাঝে শিব নদীর উপর নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। ফলে এবছর সহজে মন্দিরটিতে যাতায়াত করছেন তীর্থ যাত্রীরা। রামের জন্মদিন উপলক্ষে নয় দিন ব্যাপি চলে মেলা। শ্রী শ্রী রঘুনাথ জীউ মন্দির কমিটির সভাপতি চন্দন কুমার মৈত্র জানান প্রচীন মন্দিরটিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হলে রঘুনাথ জীউ মন্দিরের গুরুত্ব আরো বাড়বে। ব্রীজ সড়ক পাঁকা হওয়ায় যাতায়াতের সুবিধা হয়েছে।
তিনি আরো জানান বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার কাঁকনহাটের উকিল নামের এক ব্যক্তির ১০ বছর বয়সের জন্মান্ধ ছেলে সালভী তাঁর দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেয়েছে। মন্দির কমিটির সহ সভাপতি মনোজিৎ কুমার সরকার বলেন বর্তমানে মন্দিরে রাম নবমী উৎসবে লাক্ষাধিক মানুষের আগমন ঘটে। কিন্তু সেই তুলনায় সব রকমের সুবিধা দেয়ার মতো এখনো অবস্থা তৈরী হয়নি। এদিকটায় সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। মন্দির কমিটির সাধারন সম্পাদক সত্যেন্দ্রনাথ প্রামানিক জানান এখানে মানসা করে আনেকে দৃষ্টি ফিরে পেয়েছে। তাই এই মন্দিরের বিশেষ মাহাতœ আছে। প্রতিবছর রাম নবমীতে এখানে প্রায় দেড় লাখ মানুষের আগমন ঘটে। নটোরের সিংড়া থেকে দৃষ্টি প্রতিবন্ধি মেয়েকে নিয়ে এসেছিলেন পলাশ-মালতী দম্পতি। তাঁরা সারাদিন সন্তানকে মন্দির প্রাংগনের বিশেষ স্থানটিতে রাখবেন। তারা আশা করছিলেন এবার হয়তো তাদের মেয়ে দৃষ্টি ফিরে পাবে। গতবারও তাঁরা এসেছিলেন বলে জানালেন। নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কের গোবিন্দপুরের মোড় থেকে মন্দিরটির দুরত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। মাঝে আছে শিব নদী। নওগাঁ ১ আসনের সংসদ সদস্য ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখনও অনেক কাজ বাঁকি আছে মন্দির উন্নয়নে। প্রতিবছর লোকসংখ্যা বাড়ছে। সেদিক লক্ষ্য রেখে চেষ্টা করা হচ্ছে মন্দির সীমানা বৃদ্ধির জন্য।

No comments

Powered by Blogger.