রামগঞ্জে হরিশ্চর মাজার ও মসজিদের সম্পত্তি দখলের অপচেষ্টা

জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ৫নম্বর চন্ডিপুর ইউনিয়নের হরিশ্চর পীর হাসান শরীফ জামে মসজিদের ওয়াক্ফ সম্পত্তি দখলে নিতে পায়তারা চালাচ্ছে একটি প্রভাবশালি মহল। এতে করে স্থানীয় মূসুল্লি ও এলাকাবাসীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। যে কোন মুহুর্তে অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। শুক্রবার জুমার নামাজের পর উক্ত সম্পত্তি দখলে নিতে একটি মহল পায়তারা করলে স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে তা ভেস্তে যায়। শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রায় দুই শ বছর পূর্বে হিন্দু জমিদার প্রসন্ন কুমার গুহ গং থেকে জমি ক্রয় ও দানসূত্রে প্রাপ্তির পর হরিশ্চর পীর হাসান শরীফ হরিশ্চর গ্রামে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেন। যাহা ডি এস হরিশ্চর ৩৭ নং মৌজার খতিয়ানভুক্ত ১৪২ (১দাগে ৮২ শতাংশ) সিএস ১৪২, এম আর আর ১২৮ নং খতিয়ানে রেকর্ড ভুক্ত। বর্তমানে উক্ত সম্পত্তিতে একটি আধুনিকমানের মসজিদ ও পীর হাসান শরীফের মাজার, পুকুর, কবরস্থান ও ওযুখানা রয়েছে। কিন্তু হরিশ্চর মাজার সংলগ্ন পাটওয়ারী বাড়ী (দরগা বাড়ী)র জনৈক আবদুল মান্নান, আবদুর রব, বাবুল, আবুল বাসার, লোটাস মোরশেদ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সাবেক ১৪২ নং এম আর আর ১২৮ নং খতিয়ানভুক্ত ১২৮/১২৯ নং দাগে ৪৭ ডিং ভূমি পীর হাসান শরীফ জামে মসজিদ ও মাজারের নামে রেকর্ড দেখিয়ে বাকী ৩৫ ডিং সম্পত্তি একই মৌজার নিন্ম ‘খ’ তফছিল বর্ণিত রিভিশন জরিপী ২০০ নং খতিয়ানভূক্ত ১৩০ দাগে নিজেদের মালিকানা অর্ন্তভুক্ত করে মসজিদের ওযুখানা ও পুকুরসহ সম্পত্তি দখলে নেয়ার পায়তারা করে।
এ ঘটনা প্রকাশ পেলে স্থানীয় মসজিদের মুসুল্লি ও মসজিদ কমিটি রামগঞ্জ আসনের সাংসদ এম এ আউয়াল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু ইউসুফ, থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ তোতা মিয়াকে অবহিত করে। পরবর্তিতে ভূয়া কাগজপত্র সৃজনকারীরা সম্প্রতি মসজিদের সম্পত্তি দখল করতে গেলে মসজিদের মুসুল্লি ও কমিটির লোকজনের সাথে দখলকারীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনায় অবগত হয়ে শুক্রবার জুমার নামাজের পর রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ তোতা মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উভয়পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে বসার জন্য বলা হলেও দরগা বাড়ীর লোকজন উক্ত সম্পত্তি দখলে নিতে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। এ ব্যপারে দরগা বাড়ীর আবদুল মান্নান, বাবুল ও লোটাস কামাল জানান, মসজিদ কমিটি মসজিদ ও মাজারে মানুষের দানকৃত টাকা আত্মসাত করেছে। আমরা তার প্রতিবাদ করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, আমাদের সম্পত্তি আমরা দখলে নেবো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র রয়েছে আমাদের কাছে। মসজিদ কমিটির সভাপতি ডাক্তার নজীর আহম্মেদ ও সাধারন সম্পাদক আবুল হাসেম জানান, বিগত ২০০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত মসজিদ এবং মাজার রয়েছে এখানে। মানুষের দান অনুদানে নির্মিত হয়েছে আধুনিকমানের মসজিদ, মাজার ও ওযুখানা। এত বছর পর মসজিদের সম্পত্তিতে নিজেদের মালিকানা দাবী করে দখলে নেয়ার চেষ্টা খুবই দুঃখজনক। মসজিদ ও মাজারের দানকৃত টাকা আত্মসাত আর জমি বিরোধ তো ভীন্ন সমস্যা। মসজিদ বা মাদ্রাসার টাকা আত্মসাতের প্রশ্নই আসে না

No comments

Powered by Blogger.