আজ মুখোমুখি হাসিনা-মোদি-মমতা

চার দিনের ভারত সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রটোকল ভেঙে তাঁকে বিমানবন্দকে স্বাগত জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদি ছাড়াও দিল্লি বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প ও জনউদ্যোগ দপ্তরের উপমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। শনিবার তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনা হওয়া কথা তাদের। শুক্রবার রাতেই দিল্লিতে পৌঁছেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। হায়দরাবাদ হাউসে মধ্যাহ্নভোজ এবং রাতে রাষ্ট্রপতি ভবনের নৈশভোজে মোদি-‌হাসিনা-‌মমতা একসঙ্গে হবেন। রাতে শেখ হাসিনার সঙ্গে মমতার একটি একান্ত বৈঠক হলেও হতে পারে বলে কূটনৈতিক সূত্রের খবর। ২০১০–‌এর পর শেখ হাসিনার এবারের ভারত সফরকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে মোদি সরকার৷ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানানোর পর মোদি উচ্ছ্বাস চেপে রাখেননি। হাসিনার সঙ্গে ছবিসহ পরপর দু‌টি টুইট করেন তিনি৷ প্রথম টুইটে মোদি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরে অভ্যর্থনা জানাতে পেরে আমি আনন্দিত৷’‌ দ্বিতীয় টুইটে বলেন, ‘হাসিনা এবং আমি ভারত-‌বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ৷’‌ হাসিনার সম্মানে হায়দরাবাদ হাউসে একগুচ্ছ কর্মসূচির আয়োজন করেছে সরকার। শুধু তাই নয়, মধ্য দিল্লির পার্কস্ট্রিটের নাম বদলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদি সরকার। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে মমতার উপস্থিতি তিস্তা চুক্তি নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা উস্কে দিয়েছে।
মনে করা হচ্ছে, এবার স্বাক্ষরিত না হলেও মমতার উপস্থিতিতে তিস্তা চুক্তির একটা খসড়া চূড়ান্ত হতে পারে। হাসিনার ভারত সফর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আগামী বছর বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন। সে দেশে তাঁর অতি ভারত-‌বান্ধব ভাবমূর্তির বিরোধিতায় সরব স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলো। হাসিনার সফরে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় তিন ডজন চুক্তি হতে চলেছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং অসামরিক পরমাণু চুক্তির মতো বিষয়। তাছাড়া ঢাকাকে সামরিক সরবরাহ বাবদ ৫০ কোটি ডলার দেবে দিল্লি। সন্ত্রাস বিরোধিতা এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে মোদি এবং হাসিনার আলোচনা হবে। কলকাতা এবং খুলনার মধ্যে বাস চলাচল নিয়ে চুক্তি হবে। হায়দরাবাদ হাউসে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠক এবং পরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেবেন হাসিনা। দুই প্রধানমন্ত্রী হিন্দি ভাষায় ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রকাশ করবেন। তারপর যৌথ সংবাদ সম্মেলন করবেন তারা। সবশেষে মধ্যাহ্নভোজ। পরে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির সঙ্গে বৈঠক করবেন হাসিনা। রাতে রাষ্ট্রপতি ভবনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পর নৈশভোজে অংশ নেবেন তিনি।‌‌ রোববার আজমির শরিফ সফর করবেন শেখ হাসিনা। সোমবার ভারতের শিল্প মহলের সঙ্গে বৈঠক করবেন। রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন। মানেক’‌শ সেন্টারে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নিহত ভারতীয় সশস্ত্র সেনানীদের সম্মানজ্ঞাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন হাসিনা। তারপর ঢাকায় ফেরা।‌‌‌‌ সূত্র : আজকাল

No comments

Powered by Blogger.