‘পলাতক’ সাংসদ: আইন নিজস্ব গতিতে চলছে কি?

টাঙ্গাইল-৪ (ঘাটাইল) আসন থেকে নির্বাচিত সাংসদ আমানুর রহমান খান (রানা) গত রোববার জাতীয় সংসদে এসে হাজিরা খাতায় সই দিয়ে চলেও গেছেন, যদিও টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার সন্দেহভাজন হিসেবে তাঁকে খুঁজছে পুলিশ। এর আগে ‘পুলিশি হয়রানি’ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য তিনি উচ্চ আদালতে আবেদন করেও আদালতে হাজির হননি গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে। যে ব্যক্তি গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে আদালতে আসতে পারেননি, সেই ব্যক্তি কী করে জাতীয় সংসদে এসে ছহিসালামতে আবার ফিরে গেলেন?
টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় আটক দুই আসামি আদালতে ১৪৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে বলেছেন, এই হত্যাকাণ্ডে সাংসদ আমানুর ও তাঁর ভাইয়েরা জড়িত। গত বছরের সেপ্টেম্বরে আদালতে এই জবানবন্দি দেওয়ার পর থেকে সাংসদ আমানুর ও তাঁর চার ভাই পলাতক রয়েছেন।
সংসদের অধিবেশন চলাকালে একজন সাংসদের দায়িত্ব হলো সেখানে উপস্থিত থেকে তাঁর এলাকার জনগণের পক্ষে কথা বলা এবং আইন প্রণয়নে ভূমিকা রাখা। কিন্তু আমানুর রহমান সেসব না করে কেবল হাজিরা খাতায় সই দিয়ে সদস্যপদ বহাল রাখার চেষ্টা করছেন। এটি যেমন অনৈতিক তেমনি অসততাও বটে। একজন সাংসদ একনাগাড়ে ৯০ দিন অধিবেশনে অনুপস্থিত থাকলে তাঁর সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়। সাংসদ আমানুর রহমান ৬৫ কার্যদিবস অনুপস্থিত ছিলেন
সংসদের অন্যতম হুইপ আতিকুর রহমান বলেছেন, পুলিশের পক্ষ থেকে আগে বিষয়টি জানালে স্পিকার করণীয় নির্ধারণ করতে পারতেন। কিন্তু একজন সাংসদ হাজিরা খাতায় সই দিয়ে অধিবেশনে না গিয়ে যে গর্হিত কাজ করেছেন, হুইপ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন কি?
সাংসদ যে হত্যা মামলার আসামি হিসেবে পলাতক আছেন, সেটি বিরোধী দলের কেউ দায়ের করেননি। নিহত ব্যক্তিও ক্ষমতাসীন দলের নেতা ছিলেন। অতএব মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলার সুযোগ নেই। সরকার বরাবর আইন নিজস্ব গতিতে চলছে বলে দাবি করে আসছে। কিন্তু ‘পলাতক’ সাংসদের ক্ষেত্রে সেটি হচ্ছে না কেন?

No comments

Powered by Blogger.