অস্থির সবজির বাজার কাঁচামরিচ ১২০ টাকা

সবজি জাতীয় সব পণ্যের দাম খুবই চড়া। এ ছাড়া ডাল ও আলুর দাম বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। নিত্যপণ্য বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, নীরবে দাম বাড়ছে পণ্যের। ক্রেতাদের চোখ আড়াল করতে কৌশলী কায়দায় দাম বাড়ানো হচ্ছে। কয়েক টাকা ও কয়েকটি পণ্য করে প্রতিদিন দাম বাড়ছে নিত্যপণ্যের। একপর্যায়ে উচ্চ দামের উপর স্থির থাকছে বাজার। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। যা রমজান শুরুর আগে ছিল মাত্র ২০ থেকে ৩০ টাকা। ধনেপাতা পরিস্থিতি বুঝে দাম বাড়ানো হয়। সকালে যে পাতা বিক্রি হয় ৩০০ টাকা কেজি। আবার বিকালে একই পাতা বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। চাহিদা বেড়ে গেলে পণ্য সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ানো হচ্ছে। বিক্রেতা বাশার বলেন, ধনেপাতা ৫০০ ও পুদিনাপাতা ২০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাতা কম এসেছে। তাই দাম বাড়তি। ৩০ টাকার প্রতিকেজি বেগুন ৭০ থেকে ৯০ টাকায় ওঠানামা করছে। এ ছাড়া সব ধরনের শাকের দাম আকাশ ছোঁয়া। বেশ কিছু কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, পুঁই শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা, পাট শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকা, ডাটা শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকা, লাল শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১২ টাকা, কলমির শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৮ টাকা, মুলা শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৬ টাকা। অথচ এসব শাকের আঁটি রমজানের আগে ছিল মাত্র ৩ থেকে ৫ টাকা। কাঁচা পণ্য বিক্রেতা মনির হোসেন বলেন, রমজানের প্রথম সপ্তাহেও শাকের আটি বিক্রি করেছি ৩ থেকে ৫ টাকা। কিন্তু এখন দাম বেড়ে গেছে। দাম বাড়ার কারণ উল্লেখ করে মনির আরও বলেন, কয়েক দিন আগে টানা বৃষ্টির কারণে সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এতে সবজির সংকট দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া রমজানে সব মানুষ মাছ-মাংসের পাশাপাশি সবজি খেতে পছন্দ করে। তাই সবজির চাহিদা বেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে সবজির দাম যে খুবই চড়া বিক্রেতা নিজেও স্বীকার করেন। এদিকে গত কয়েক দিনে দেশী ও বিদেশী মসুর ডালের দাম বেজায় চড়েছে। একই সঙ্গে চড়া পিয়াজের দরও। এ ছাড়া মাছ, মাংস, ভোজ্য তেলসহ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়তি। তবে সরকারি বিপণন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) মাত্র ২ পণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি স্বীকার করেছে। টিসিবির ওয়েব সাইটের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিকেজি নেপালী মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। যা কয়েক দিন আগেও ছিল ১১০ টাকা। একইভাবে প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৫ টাকা। যা ছিল ১২ থেকে ১৬ টাকা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি দেশী ডাল (সাধারণ) ১১৫ থেকে ১২০ টাকা, বিদেশী (সাধারণ) ১১০ থেকে ১২০ টাকা, মুগের ডাল (সরু) ১২০ থেকে ১২৫ টাকা, মোটা ১০০ থেকে ১০৫ টাকা, ছোলা (বিদেশী আস্ত) ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, খেসারী ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, মাশকলাই ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কেজিপ্রতি দেশীয় শুকনামরিচ  ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, ভারতীয় ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, হলুদ  ১৬০ থেকে ১৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশী রসুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, চায়না ৯৫ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। কেজিপ্রতি মিষ্টিকুমড়া ২০ থেকে ২৪ টাকা, শসা ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, ঝিংগা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা, বরবটি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, কচুরলতি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, চিচিংগা ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, পটল ২০ থেকে ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা, করল্লা ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া কেজিপ্রতি গরুর মাংস ৩৬০ থেকে ৩৮০ টাকা, খাসীর মাংস ৫০০ থেকে ৫৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম বেড়েছে খেজুরের। কেজিতে বেড়েছে প্রায় ২০ টাকা। প্রতিকেজি খেজুর ১০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইলিশের দাম খুবই চড়া। প্রতিকেজি ইলিশ ৭০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মান ও ওজন ভেদে প্রতিকেজি রুই মাছ ২০০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

No comments

Powered by Blogger.