এবার কিরণমালার জয়জয়কার

ভারতীয় বাংলা চ্যানেল স্টার জলসায় প্রচারিত বোঝে না সে বোঝে না সিরিয়ালের নায়িকা পাখির পরনের পাখি ড্রেস ২০১৪ সালে দখল করে রেখেছিল পুরো ঈদবাজার। এ বছর এসেছে ‘কিরণমালা’ ক্রেজ। শহর থেকে গ্রাম সবখানেই কিরণমালার জয়জয়কার। বিত্তবান তরুণীদের কথা মাথায় রেখে অভিজাত বিপণি বিতানগুলোর বেশির ভাগ অংশ জুড়ে এ ধরনের  পোশাক শোভা পাচ্ছে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে ক্রেতার সংখ্যাও বাড়ছে শহরের মার্কেটগুলোতে। পরিবারের সবার জন্য পছন্দমতো কেনা-কাটা করতে এক মার্কেট থেকে আরেক মার্কেটে চষে বেড়াচ্ছেন  ক্রেতারা। এ সুযোগে বিক্রেতারাও হাঁকছেন আকাশ ছোঁয়া দাম। নগরীর সেন্ট্রাল প্লাজার একটি দোকানের বিক্রয়কর্মী রায়হান জানান, এবারের ঈদ বাজারে নারীদের জন্য বাহারি আকর্ষণীয় পোশাকের সম্ভার রয়েছে। বিশেষ করে কিক কিরণমালা, কিরণমালা-১, কিরণমালা-২, ওমটেক্স, বিনা, বিপুল-৩, এক্সপেক্টর, দারিদ্র-১, দারিদ্র-২, দেশী টিস্যু ও পাকিস্তানি কটন হিট করেছে। তাছাড়া ক্রেতাদের মন কাড়ানো বিপুল পরিমাণে থ্রি-পিস, শাড়ি, পাখি শাড়ি, ইনকুচি, তেরেলিনা ও কাতান শাড়িও দোকানে মজুত রয়েছে। তিনি বলেন, ভারতীয় বিভিন্ন টেলিভিশন সিরিয়ালের বদৌলতে দেশীয় পোশাকের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ  নেই। এ কারণেই সিরিয়াল দেখে শুধু নামের আকর্ষণে তরুণ-তরুণীরা ভারতে তৈরী পোশাক বেশি কিনছেন। বিভিন্ন বিপণিকেন্দ্রে মেয়েদের ‘কিরণমালা’ নামের পোশাক বিক্রি হচ্ছে দেদার। দামেও রয়েছে  হেরফের। মাঝারি থেকে বড় মেয়েদের জন্য তৈরী এ পোশাকের দাম বিক্রেতারা হাঁকছেন ৪ হাজার  থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত। ফুটপাতেও মিলছে কিরণমালা। দাম নেয়া হচ্ছে ১ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা। বিভিন্ন বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেছে, পালাজ্জো ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার, শারারা ২০ হাজার থেকে ২৩ হাজার, খারারা ৮ হাজার থেকে ১৫ হাজার, বুম চুরিদ্বার ১২ হাজার থেকে ২৫ হাজার, পিকে ১৭ হাজার থেকে ২৬ হাজার, পরিধি ১৫ হাজার থেকে ২২ হাজার টাকা দাম হাঁকা হচ্ছে। আরও রয়েছে জলপরী, রাই কিশোরী, আনারকলি, আশিকি, মাজাককালি, সানি, কোয়েল, চিকনি চামেলি, বিপাশা, অর্চনা, অমিত, ডিসকো চালি, জীবিকা, রিভা, বীরা, ছানছান, ঝিলমিল, পাঙ্খুরি, আশিকি টু, বুগিউগি, টুপুরসহ নানা বাহারি নামের বিভিন্ন পোশাক। ঈদবাজারে শাড়ির ক্ষেত্রেও ভারতের দাপট বজায় আছে। শাড়িতে ভারতীয় নায়িকা ও সিনেমার হাওয়া জারদার। এর মধ্যে রয়েছে রেশম কা জরি, ঝিলিক, রাধিকা, ওহ লায়লা, তিসমার খান, জারা জারা, আয়শা, টাকিয়া, দিল দো কলি, বধূয়া ইত্যাদি নামের ভারতীয় শাড়ির মধ্যে পাথর আর চুমকির কারুকাজ করা গাঢ় রঙের রাসলীলা শাড়িতে বাজারের  দোকানগুলো ভরে গেছে। ভারতীয় এসব শাড়ির দাম ১৫ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকা। নগরীর চিটাগাং শপিং কমপ্লেক্সের বিক্রেতা আবদুর রশিদ জানান, ২০ হাজার টাকা দামের কিরণমালা প্রতিদিন কমপক্ষে তিনটি বিক্রি হয়। শার্ট-প্যান্টও ভাল বিক্রি হচ্ছে। সঙ্গে রয়েছে মেয়েদের গাউন। একেবারে  গোড়ালি ছুঁই ছুঁই গাউন চলছে ভাল। দাম ১৮ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা। প্রতিটি দোকানের দর্শনীয় স্থানেই সাজিয়ে রাখা হয়েছে পোশাকটি। এছাড়াও বিভিন্ন রকমের পোশাকে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিপণিবিতানগুলো। দামও হাঁকা হচ্ছে বেশ। ক্রেতারা বলছেন, তারা ঘুরে ঘুরে বাজার যাচাই করছেন। তারপর পছন্দের পোশাক কিনছেন। দাম কিছুটা বেশি হলেও তা সাধ্যের বাইরে নয়। বেশ ভিড় দেখা গেল পোশাক, জুতা, খেলনা এবং বিভিন্ন প্রসাধনীর দোকানগুলোতেও। এবার ছেলেদের জন্য ১ থেকে ১৫ হাজার টাকায় রাজশাহী সিল্ক পাঞ্জাবি, ইন্ডিয়ান কিউজি পাঞ্জাবি, খদ্দর পাঞ্জাবি, সুতি পাঞ্জাবি, এনডি সিল্ক পাঞ্জাবি এবং শেরওয়ানি পাওয়া যাচ্ছে। আর ৮০০ থেকে ৪ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের শার্ট। এ ছাড়া ২ থেকে ৮ হাজার টাকায় মেয়ে শিশুদের ওয়েস্টার্ন  সেট, পার্টি ফ্রগ, মিডি, লাছা, টপস, স্কার্র্ট এবং ছেলে শিশুদের জন্য ১ থেকে ৭ হাজার টাকায় বাবা সেট, বয়েজ গেঞ্জি, থ্রি-কোয়ার্টার, ফোর কোয়ার্টার, কটি শার্ট এবং বিশেষ করে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর নামানুসারে মোদি কোর্টের বেশ চাহিদা রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.