৩ ঘণ্টায় নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন!

ধরুন, আপনি প্যারিসে আছেন। দুবাইয়ে গিয়ে কিছু কেনাকাটা করা জরুরি। আবার রাতেই প্যারিসে রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ এক নৈশভোজ, যাতে না গেলে চলবেই না। কীভাবে দুটিই সামলাবেন, ভেবে নিশ্চয়ই কূলকিনারা করতে পারছেন না?
বছর কয়েক পরই হয়তো এ ধরনের মুশকিল আসানের দায়িত্ব নিতে পারবে স্পাইক অ্যারোস্পেস। আশা করা হচ্ছে, তাদের তৈরি সুপারসনিক (শব্দের চেয়ে বেশি গতির) জেট বিমান আপনার দুকূল সামলানোর কাজটা সম্ভব করে দেবে। বিলাসবহুল এই যাত্রীবাহী উড়োজাহাজে চড়ে যেমন আয়েশে গা এলিয়ে দিতে পারবেন, তেমনি পারবেন সময়ের কাজ সময়ে সারতে।
স্পাইক অ্যারোস্পেস কোম্পানির এস-৫১২ সুপারসনিক জেট মাত্র তিন ঘণ্টায় যাত্রীদের নিউইয়র্ক থেকে লন্ডনে নিয়ে যেতে পারবে। এ দুই গন্তব্যের দূরত্ব ৫ হাজার ৫৭৬ কিলোমিটার। আর ফ্রান্সের প্যারিস থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের দূরত্বও ৫ হাজার ২৫৩ কিলোমিটারের বেশি।
এস-৫১২ সুপারসনিক জেটের যাত্রা শুরু ২০১৩ সালে। তবে এ বছর প্রকৌশলীরা এর নকশায় বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছেন। এটি উড়োজাহাজটিকে করে তুলবে আরও দ্রুতগতির। স্পাইক অ্যারোস্পেসের দাবি, বর্তমানে এটি সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৮ মাক (ঘণ্টায় ২ হাজার ২০৫ কিলোমিটার) গতিতে চলতে পারে। এ গতি শব্দের চেয়ে এক দশমিক ৮ গুণ বেশি।
বিজ্ঞানবিষয়ক ওয়েবসাইট ‘লাইভ সায়েন্স’-এর প্রতিবেদনেই উড়োজাহাজটির মাত্র তিন ঘণ্টায় নিউইয়র্ক থেকে লন্ডনে চলে যেতে পারার কথা বলা হয়েছে। আর স্পাইক অ্যারোস্পেস কোম্পানির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, যাত্রীরা প্যারিস থেকে রওনা হয়ে দুবাই পৌঁছে কেনাকাটা বা অন্য কাজ সেরে যথাসময়ে আবার প্যারিসে ফিরে নৈশভোজ সারতে পারবেন।
স্পাইক অ্যারোস্পেসের জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী আনুতোষ মৈত্র জানান, উড়োজাহাজটির নতুন নকশায় এর পাখার আকৃতি করা হয়েছে ‘ব-দ্বীপ’ ধাঁচের। এতে করে গতি আরও বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। লেজের নকশায়ও পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতে করে বাতাসের প্রতিবন্ধকতা এড়ানো আরও সহজ হবে। বাতাসের কারণেই উড়োজাহাজের গতি কমে যায় এবং জ্বালানি খরচ বেশি লাগে। নতুন নকশার লেজের কারণে উড়োজাহাজটির ওজনও কমেছে। এটাও গতি বাড়াতে সাহায্য করবে।
বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ হিসেবে নির্মিত হলে এস-৫১২ তৈরিতে খরচ পড়তে পারে ৬ থেকে ৮ হাজার কোটি ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে এটি নির্মাণে কাজ করছেন একদল প্রকৌশলী।
সূত্র: পিটিআই

No comments

Powered by Blogger.