‘অভিজিৎ হত্যাকাণ্ড- প্রমাণ করে সরকার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ’ -বিএনপি

পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দাফনের আয়োজন  করছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ। বলেছেন, অবৈধ সরকার অস্ত্রের জোরে জনগণের সকল গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার দোহাই দিয়ে প্রতি মুহূর্তে মুক্তিযুদ্ধের সকল অর্জনকে পদদলিত করে গণতন্ত্রকেই বিলুপ্ত করে দিতে চায়। প্রধানমন্ত্রী তার পিতা বাকশাল গঠনের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করে যেমন আওয়ামী লীগকে অস্তিত্বহীন করে দিয়েছিল; তেমনি তিনিও পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ফের আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিকভাবে দাফন করার আয়োজন করে চলেছেন। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেন তিনি। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই নিপীড়ক শাসকচক্রের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন সংগ্রাম কেবলই বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোটের ক্ষমতায় যাওয়ার লড়াই নয়। রাষ্ট্রের মালিকানা জনগণের কাছে ফেরত দেয়ার এই আন্দোলনকে সরকার জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কর্মকাণ্ড হিসেবে উপস্থাপনের সীমাহীন অপচেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, দিনাজপুরের চিরিরবন্দরের নিভৃত পল্লীতে গতকাল মিথ্যা মামলায় বিএনপি নেতাকে ধরতে গিয়ে পুত্র রেজওয়ানুলকে হত্যা করে স্ত্রী-কন্যাকে গুলিবিদ্ধ করে পুলিশ গ্রামবাসীর প্রতিরোধে পলায়ন করতে বাধ্য হয়। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আজ দেশের সকল পাড়ায়-মহল্লায় জনগণের নেতৃত্বে স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিরোধ-সংগ্রাম কমিটি গড়ে উঠেছে। জনতার স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিরোধের মুখেই অবৈধ সরকারও পলায়নে বাধ্য হবে শিগগিরই।  তিনি বলেন, রাস্তায় কয়েকটি গাড়ি চলাচল দেখে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে বলে তৃপ্তির ঢেকুর তুললেও আন্দোলনে তৃণমূলের ব্যাপক অংশগ্রহণ আওয়ামী সরকারকে সমূলে উৎপাটন করতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হবে না। আমি এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাচ্ছি। সময়ের পরিবর্তনে এ সকল নারকীয় হত্যাকাণ্ডে দায়ী ব্যক্তিদের উপযুক্ত আদালতে বিচার করা হবে। একইসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সভাপতি জাকির হোসেন, ছাত্রনেতা মৃণাল কান্তিকে বাসা থেকে ধরে নিয়ে বোমাবাজ সাজানোর পুলিশি নাটকের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ছাত্রদল, যুবদলসহ যেসকল অসংখ্য নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তারের পর অস্বীকার করছে তাদের সকলের তালিকা আমরা সংরক্ষণ করছি। পুলিশ-র‌্যাবের কতিপয় দলকানা সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই- এই সরকারই শেষ সরকার নয়। অবৈধ সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা করে আইনের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবেন না। দফায় দফায় রিজভী আহমেদকে রিমান্ডে নেয়ার নিন্দা জানিয়ে বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, রিজভী আহমেদকে হত্যার উদ্দেশ্যেই সরকার গ্রেপ্তারের পর থেকে কারাগারে না নিয়ে ২৯ দিন লাগাতার পুলিশি রিমান্ডে নেয়ার নজিরবিহীন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছে। তা যদি কোন দুর্ঘটনা ঘটে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।  সালাহউদ্দিন আহেমদ বলেন,  পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যেও ব্লগার অভিজিৎ রায়ের হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে এদেশের কোন নাগরিকের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে সরকার ব্যর্থ। আমরা অভিজিৎ হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং এর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি। আন্দোলনের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান অনির্দিষ্টকালের শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি দেশব্যাপী রোববার থেকে ৭২ ঘণ্টার হরতালি পালিত হবে।

No comments

Powered by Blogger.