খুশিতে হারিয়ে যাওয়ার একদিন- আনন্দ ভ্রমণ ২০১৫ -মানবজমিন পরিবার

দুই বছরের প্রতীক্ষার অবসান। শীতের সকালে রোধ ঝিলিক দেয়নি তখনও। তার আগেই মানবজমিন অফিস সরগরম। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে উপস্থিতি। চেনা-অচেনা মুখ। তবে সবাই মানবজমিন পরিবারের সদস্য। কেউ সহকর্মী কেউ বা তাদের পরিবারের সদস্য। সবার মাঝে আনন্দের ঝলকানি আর একটি উৎসবমুখর দিন অতিবাহিত করার প্রত্যাশা। মানবজমিন পরিবারের বার্ষিক আনন্দ ভ্রমণ। এই আনন্দ উৎসবটি আয়োজনে ছিল দীর্ঘদিনের প্রস্তুতি। সকাল তখন ৯টা। উদ্দেশ্য রাজধানীর অদূরে ধামরাইর মোহাম্মদী গার্ডেন। কাওরান বাজার মানবজমিন অফিসের সামনে থেকে একে একে ৬টি বাস গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে, ভ্রমণে অংশ নেয়া প্রতিটি সদস্যের মাঝে তখন খুশির জোয়ার। এর আগে অফিসে সকালের নাস্তা ও উপহার সামগ্রী হস্তান্তরের মাধ্যমে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। এ নিয়ে দিনব্যাপী ছিল নানা আয়োজন। সবচেয়ে আকর্ষণীয় ছিল র‌্যাফেল ড্র।
এবারের আয়োজনে ঢাকা অফিসে কর্মরত কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গী ছিলেন ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার স্টাফ রিপোর্টার এবং তাদের পরিবারের সদস্যরাও। প্রায় সোয়া ঘণ্টা সড়কপথে যাত্রার পর মোহাম্মদী গার্ডেনে পৌঁছালে ফুল ছিটিয়ে স্বাগত জানানো হয় মানবজমিনের সংবাদকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের। সবার আগে গিয়ে পৌঁছান মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ও সম্পাদক মাহবুবা চৌধুরী। তাদের সঙ্গে ছিলেন টেকনিক্যাল এডিটর ব্যারিস্টার মেহজাবিন রহমান চৌধুরী মিশু। সেখানে গিয়েই শুরু হয় হই-হুল্লোড়। বিশাল বাগান। সুইমিংপুল। খালি মাঠ। পুকুর। ওয়াচ টাওয়ার। বড়রা গার্ডেনে ঢুকেই ফটোসেশন শুরু করেন। শিশুরা খোলা জায়গা পেয়ে শুরু করে দৌড়াদৌড়ি আর খেলাধুলা।
আনন্দ ভ্রমণের আগের দিন থেকে সেখানে গিয়ে আয়োজনের সমন্বয় করছিলেন বিনোদন বিভাগের মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন। দুপুরের খাবার আয়োজন থেকে শুরু করে স্পটের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দেখাশোনা ছিল মূলত তার উপরই। তাকে সহযোগিতা করেন মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি রিপন আনসারী, ধামরাই প্রতিনিধি আজহারুল ইসলাম রাজু, সাটুরিয়ার প্রতিনিধি মতিয়ার রহমান এবং সাভারের স্টাফ রিপোর্টার হাফিজ উদ্দিন। ঢাকা থেকে সাজিয়ে নেয়া হয় দিনের কর্মসূচি। কিছুক্ষণ বিশ্রাম ও ফটোসেশনের পর শিশুদের খেলা আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। এরপর ছিল মহিলাদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা মিউজিক্যাল পিলো ও মিউজিক্যাল চেয়ার। এসময়ই প্রস্তুতি শুরু হয় পুরো আনন্দ ভ্রমণের বিশেষ ও উত্তেজনাপূর্ণ আয়োজন ফুটবল খেলা। দুটি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত খেলায় সাদা-কালো রঙের জার্সি গায়ে দিয়ে মাঠে নামেন প্রধান সম্পাদক দলের সদস্য রিপোর্টিং বিভাগের কর্মীরা। আর লাল-সাদা জার্সি পরে মাঠ দাবড়ে বেড়ান সম্পাদক দলের হয়ে প্রশাসন এবং বিজ্ঞাপন বিভাগের কর্মীরা। এই জার্সিগুলো দেয়া হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক ও মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ক্রিকেট সংগঠক হানিফ ভূঁইয়ার সৌজন্যে। ৩০ মিনিটেই খেলার প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য। তবে দ্বিতীয়ার্ধের প্রথমেই জয়সূচক গোল করে দলকে এগিয়ে নেন প্রধান সম্পাদক দলের কাফি কামাল। খেলাটি শেষ হয় ১-০ গোলের ব্যবধানে। প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী ও সম্পাদক মাহবুবা চৌধুরী বিজয়ী দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ব্যবস্থাপনা সম্পাদক বাবর আশরাফুল হক। খেলায় রেফারির দায়িত্ব পালন করেন স্পোর্টসের সামন হোসেন। এদিকে খেলা চলাকালে স্টেজে সংগীতানুষ্ঠান শুরু হয়। গান পরিবেশন করেন বিটিভি ও বেতারের শিল্পী লুতু সরকার, রেজানুর রহমান এবং মানবজমিনের আল আমিন। জোহরের নামাজ ও খাবারের পর শুরু হয় মূল আকর্ষণ র‌্যাফেল ড্র। মানবজমিন পরিবারের প্রত্যেক সদস্যই এতে পুরস্কৃত হন। ল্যাপটপ থেকে শুরু করে ফ্রিজ, মোবাইল ফোন, ট্যাব, বিমান টিকিটসহ ছিল দামি পুরস্কার। প্রত্যেকেই মঞ্চে এসে টোকেন তুলে নিজের ভাগ্য নিজে নির্ধারণ করেন। এ পর্ব পরিচালনা করেন মানবজমিন-এর নির্বাহী সম্পাদক শামীমুল হক, বার্তা সম্পাদক কাজল ঘোষ, ফিচার এডিটর মু.আ. কুদ্দুস ও প্রধান প্রতিবেদক লুৎফর রহমান। এবারই প্রথম আনন্দ ভ্রমণে অংশ নেয়া মানবজমিন পরিবারের সদস্যদের জন্য লটারির মাধ্যমে বিশেষ পুরস্কার দেন প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী। এ পুরস্কার পান সম্পাদনা সহকারী বিভাগের জহিরুল ইসলাম রাকিব।
লটারির জন্য নিজের টোকেন তুলতে নাম ডাকা হয় একে একে। পুরস্কার নিতে এসে আনন্দ ভ্রমণে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, এ আয়োজন সফল হয়েছে সবার অংশগ্রহণে। তিনি আয়োজনে যারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, স্পন্সর করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। পাশাপাশি মোহাম্মদী গার্ডেন কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ জানান। আর সম্পাদক মাহবুবা চৌধুরী তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে প্রতিবছর আনন্দ ভ্রমণ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন।
যাদের প্রতি কৃতজ্ঞ
এবারের র‌্যাফেল ড্রতে যাদের সৌজন্যে পুরস্কার দেয়া হয় তারা হচ্ছেন- প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক নুরে আলম সিদ্দিকী, জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের পক্ষে নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ তেলায়েত হোসেন, ক্যাবল অপারেটর এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি এসএম আনোয়ার পারভেজ, কৃষিবিদ রেজাউল ইসলাম মুকুল, বেঙ্গল সাইয়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাহের উদ্দিন সরকার, নাসা গ্রুপের পরিচালক শহিদুল ইসলাম মিঠু, অভিনেতা মতিউর রহমান, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূরুজ্জামান খান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফয়জুর রহমান (বকুল), আফজাল হোসেন এবং বুড়িগঙ্গা মৎস্য বাজার-এর মালিক আবু বকর সিদ্দিক, ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ডা. রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, যুবদল সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নিরব, সাবেক এমপি ও জাসদ নেতা এডভোকেট শাহ জিকরুল আহমেদ খোকন, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন, সিদ্ধিরগঞ্জ যুবলীগের সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান মতি, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির চৌধুরী, নাভানা গ্রুপ, শাহনুর ইলেক্ট্রনিক্স (টিসিএল), হামদর্দ ল্যাবরেটরি (ওয়াক্ফ) বাংলাদেশ, ওয়ালটন, সিটিসেল, প্রাণ গ্রুপ, আকিজ গ্রুপ, জিসান ইন্টারন্যাশনাল, ওকাপিয়া, গাজী ট্রেডার্স, মমতাজ হারবাল প্রোডাকটস, লোলেন কসমেটিক্স, মিজান হারবাল, ফ্যাশন প্যারাডাইস, প্রিয়ন্তি, প্রতিভা কমিউনিকেশন, ইউনিভার্সেল ফুড লিমিটেড, অডিও প্রযোজনা সংস্থা লেজারভিশন, সাংস্কৃতিক সংগঠন মেলোডি এন্টারটেইনমেন্ট, এইমটেল, হাজারী এন্টারপ্রাইজসহ আরও অনেক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি।

No comments

Powered by Blogger.