নোয়াখালীতে পুলিশ-বিএনপি সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ২

(নোয়াখালীর চৌমুহনীতে আজ বিকেলে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে দুজন নিহত হন। ছবি: ফোকাস বাংলা) নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের চৌমুহনী শহরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের সময় পুলিশ গুলি চালিয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. রুবেল (৩০) ও মহসিন (৩২) নামের দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আজ বুধবার বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রুবেল সেনবাগ উপজেলার গোপালপুর গ্রামের তোফায়েল আহমেদের ছেলে। তিনি চৌমুহনী বড়পুলের কাছে একটি কনফেকশনারির দোকানের মালিক। মহসিন চৌমুহনীর হাজীপুর এলাকার খোরশেদ বাবুর্চির ছেলে। নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী এ দুজনের মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গুলিতে তাঁদের মৃত্যু হয়।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় সন্ধ্যার পর রুবেলকে নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে, মহসিনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চৌমুহনীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।
এ ঘটনায় পুলিশের উপপরিদর্শক সাইফুল শিকদারসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক জাহাঙ্গীর, রাজমিস্ত্রি সাহাবুদ্দিন, দোকানের কর্মচারী মাসুদুর রহমান ও সোনালী ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্য কামাল হোসেন। তাঁদের নোয়াখালী আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জাহাঙ্গীরের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চৌমুহনী রেলগেট থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অবরোধের সমর্থনে মিছিল বের করেন। মিছিলটি পূর্ব বাজারের কাচারিবাড়ী মসজিদ পর্যন্ত গিয়ে আবার রেলগেটে ফিরে আসে। এ সময় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধ্বস্তি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে বিএনপির কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালালে পুলিশ পিছু হটে পাবলিক হল গেটে চলে যায়। বিএনপির কর্মীরা সড়কের পাশে থাকা চারটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। বেশ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও হামলা চালান তাঁরা। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে ও গুলি ছোড়ে। পরে জেলা পুলিশ সুপার ইলিয়াস শরীফসহ দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ সুপার ইলিয়াস শরীফ জানান, বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের ওপর হামলা চালালে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়ে ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

No comments

Powered by Blogger.