দুই মন্ত্রীকে সঙ্গী করে ঢাকা আসছেন মমতা

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও ফিরহাদ হাকিম এবং কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে সঙ্গী করে মমতা আগামী ১৯শে ফেব্রুয়ারি ঢাকা যাবেন। আর ভাষা দিবসে শহীদ মিনারের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে রাতেই ফিরে আসবেন কলকাতায়। এজন্য ওই সময়ে তার যে সব কর্মসূচি রয়েছে তা পরিবর্তন করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে গতকাল এ খবর পাওয়া গেছে। গত সোমবারই কলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনার জকি আহাদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাছান মাহমুদ আলীর তরফে বাংলাদেশ সফরের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণপত্র নবান্নে মমতার হাতে তুলে দিয়েছেন। বাংলাদেশের কূটনীতিকের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টার আলোচনায় একুশের ভাষা আন্দোলনের বিষয়ে তার আগ্রহের বিষয়টি বার বার উল্লেখ করেছেন মমতা। বৈঠকের পরে মমতা জানিয়েছেন, আমি বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছি। আমি খুবই আনন্দিত ও আপ্লুত। আমি বাংলাদেশকে ও বাংলাদেশের মানুষকে সবসময় ভালবাসি। দেশভাগের আগে পর্যন্ত আমরা সকলে এক ছিলাম। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ খুশি হলে আমরাও খুশি হই। আমাদের মধ্যে ভাল সম্পর্ক হলে তা পরষ্পরের কাছে উপকারী। তিন দিনের ঢাকা সফরে মমতা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করা ছাড়াও মন্ত্রিসভার অন্যান্যদের সঙ্গে যেমন বৈঠক করবেন তেমনি মমতা সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। এর আগেই বাংলাদেশ থেকে আসা সংসদীয় প্রতিনিধিরা মমতাকে বাংলাদেশ সফরের কথা জানিয়েছিলেন। এরপর দিল্লিতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এবং কলকাতা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদও মমতাকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই সময়ই মানবজমিনে প্রকাশিত হয়েছিল যে, মমতা সম্ভবত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা সফর করতে পারেন। গত সোমবার আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণ পত্র হাতে পাওয়ার পরই মমতা তার ঢাকা সফরের দিন ঠিক করে ফেলেন। মমতার এ সফরের দিকে আগ্রহে তাকিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। পর্যবেক্ষকদের মতে, স্থলসীমান্ত চুক্তি নিয়ে মমতা আপত্তি তুলে নেয়ার পর তিস্তার পানি চুক্তির বিষয়েও মমতার স্পষ্ট মনোভাব জানার সুযোগ মিলবে।
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গেও নদীয়ার রানাঘাটে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদেও ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি বলেছেন, বাংলাদেশের আওয়ামী লীগ সরকার সে দেশের মাটিতে ভারতের ষড়যন্ত্রকারীদের কোনও স্থান দেয়নি। আশাকরি ভারতও বাংলাদেশের ষড়যন্ত্রকারীদের ভারতের মাটিতে স্থান দেবে না। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। দু’দেশের সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় ও মজবুত করার জন্য আমাদের সচেতন থাকতে হবে। ফজলে রাব্বি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের মানুষ যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল তা বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে। তিনি বলেন, দুই বাংলার সংস্কৃতি ও ভাষা এক তাই আমাদের মধ্যে হৃদ্যতাও অনেক গভীর। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা পৌরসভার মেয়র মো: রমজান আলী, শ্রীমঙ্গল জেলা পৌরসভার মেয়র মো. মহসিন মিয়া ও সার্ক কালচারাল সোসাইটির সভাপতি এ টি এম মমতাজুল করিম।

No comments

Powered by Blogger.