শোকে মুহ্যমান খালেদা জিয়া

ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মালয়েশিয়া থেকে প্রথমে কোকোর মৃত্যুর সংবাদ জানানো হয় বড় মামা সাঈদ এস্কান্দরের স্ত্রী নাসরিন এস্কান্দরকে। তিনি ফোন করে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে জানান এবং দ্রুতই গুলশান কার্যালয়ে ছুটে যান। এরপর তারাই প্রথম খালেদা জিয়াকে কোকোর মৃত্যুর সংবাদ জানান। ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শুনে স্তম্ভিত হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। বাকরুদ্ধ থাকেন কয়েক মিনিট। এরপর কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এরপর তাকে সান্ত্বনা দেন কার্যালয় অবস্থানরত দলের ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ তার পরিবারের সদস্যরা। সমাবেশকে ঘিরে ৩রা জানুয়ারি রাতে গুলশান রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবরুদ্ধ হওয়ার পর দীর্ঘ ২১ দিন ধরে সেখানেই অবস্থান করছেন খালেদা জিয়া। কোকোর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে দুপুরের পর খালেদা জিয়ার আত্মীয়স্বজন ও দলীয় নেতাকর্মীরা কার্যালয়ে ছুটে যান। লোকে-লোকারণ্য হয়ে পড়ে ৮৬ নম্বর সড়ক। খালেদা জিয়াকে সমবেদনা জানাতে তার কার্যালয়ে যান বড়বোন সেলিনা ইসলাম, ভাই সাঈদ ইস্কান্দারের স্ত্রী নাসরিন সাঈদ, শামীম ইস্কান্দারের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, জুবাইদা রহমানের বড়বোন বিন্দুসহ পরিবারের সদস্যরা। তারা কার্যালয়ের দোতলায় অবস্থানরত খালেদা জিয়াকে সান্ত্বনা দেন। এদিকে বিশিষ্টজনদের মধ্যে প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমেদ, গণস্বাস্থ্যে প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরউল্লাহ চৌধুরী, ঢাবির সাবেক প্রোভিসি আফস ইউসুফ হায়দায়, সাদা দলের সাবেক আহ্বায়ক সদরুল আমিন, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব, এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. ইবরাহিম, বাংলাদেশ ন্যাপের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, এনপিপির সভাপতি ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি কামালউদ্দিন সবুজ, সাংবাদিক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান প্রমুখ কার্যালয়ে ছুটে যান। এছাড়া বিএনপি নেতাদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আরএ গণি, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম, বেগম সারওয়ারী রহমান, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ  হোসেন চৌধুরী, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার শাহাজাহান ওমর, এড. খন্দকার মাহবুব হোসেন, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, রুহুল আলম চৌধুরী, মুশফিকুর রহমান, ফজলুর রহমান পটল, আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, সানাউল্লাহ মিয়া, তৈমুর আলম খন্দকার, শফি চৌধুরী, মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান, আফরোজা খান রিতা, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি বজলুল করিম চৌধুরী আবেদসহ দলের বিভিন্ন সারির কয়েক সহস্রাধিক নেতাকর্মী কার্যালয়ে যান। এদিকে দুপুরের পরপরই ওলামা দলের উদ্যোগে হাফেজদের দিয়ে কার্যালয়ের নিচতলায় কোরান খতম পড়ানো হয়। সন্ধ্যায় মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়। এছাড়া কোকোর মৃত্যুতে গুলশান কার্যালয়ে একটি শোকবই খোলা হয়েছে। ওদিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ এক বিবৃতিতে জানান, আরাফাত রহমান কোকোর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনায় ২৫ ও ২৬শে জানুয়ারি দেশব্যাপী মসজিদে মসজিদে কোরানখানি ও দোয়া মাহফিল হবে। ওদিকে নয়াপল্টন কার্যালয়ে কোরানখানি ও মিলাহ মাহফিল করতে পুলিশ বাধা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। এছাড়া কোকোর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন দলের যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ বিভিন্ন সংগঠন।

No comments

Powered by Blogger.