রাজশাহী কলেজে ছাত্রলীগ কর্মীদের ভাঙচুর

(রাজশাহী কলেজ প্রশাসন ভবনে গতকাল কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠান চলাকালে সেখানে ভাঙচুর চালান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা l ছবি: প্রথম আলো) রাজশাহী কলেজে ছাত্রশিবিরের নেতাকে মারতে গিয়ে কলেজের প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর করেছে ছাত্রলীগ। কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয়ও ঘেরাও করে তারা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এসব ঘটনা ঘটে। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দুপুর ১২টার দিকে কলেজের ফুলার ভবনের দ্বিতীয় তলায় শিবিরের কলেজ হোস্টেল শাখার সভাপতি রিপন আলী অবস্থান করছিলেন। খবর পেয়ে মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলম খানের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের কর্মীরা ছুটে এসে রিপন আলীকে ধরে মারধর করতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁকে ভবনের নিচে নামিয়ে এনে সেখানেও মারধর করা হয়।
খবর পেয়ে কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে অন্য কয়েকজন এসে রিপন আলীকে সেখান থেকে নিয়ে যান। এতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অধ্যক্ষের ওপর ক্ষিপ্ত হন। এরপর তাঁরা সেখান থেকে কলেজের প্রশাসন ভবনে হামলা করতে আসেন। তখন প্রশাসন ভবনের দ্বিতীয় তলায় কলেজের স্টাফ রুমে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের একটি ওরিয়েন্টেশন প্রোগ্রাম চলছিল। অনুষ্ঠানটি একটি প্রজেক্টরের মাধ্যমে দেখানো হচ্ছিল। ছাত্রলীগের কর্মীরা ভেতরে ঢুকে প্রজেক্টর, একটি কম্পিউটার ও কক্ষের দুটি জানালার কাচ ভাঙচুর করেন। এরপর তাঁরা নিচে নেমে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বেলা আড়াইটার দিকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ফের প্রশাসন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ওঠেন। সেখানে তাঁরা অধ্যক্ষের কার্যালয় ঘেরাও করে তাঁর কাছে জানতে চান, কেন তিনি শিবিরের নেতাকে ছেড়ে দিলেন। পরে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকেরা বুঝিয়ে তাঁদের শান্ত করেন। এ ব্যাপারে কলেজ অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান বলেন, কলেজের ফুলার ভবন থেকে তাঁর কাছে একটি ফোন আসে। ক্যাম্পাসে মারামারি হচ্ছে। তিনি গিয়ে দেখেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ভবনের কাছে একটি ছেলে মাটিতে পড়ে আছে। তিনি পরিচয় জানতে চাইলে ছাত্রলীগের ছেলেরা বলেন, ছেলেটা বহিরাগত। এরই মধ্যে তাঁদের কয়েকজন ছেলেটাকে পানি খাওয়ানোর জন্য মসজিদের পাশে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁরাই ছেলেটাকে পার করে দেন। শিবিরের কলেজ শাখার সভাপতি সারোয়ার আলম সিদ্দিকী বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই রিপন আলীকে মারধর করেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য ছাত্রলীগের মহানগর শাখার সভাপতি রকি ঘোষকে বারবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মাহাবুব আলম খানের ফোনটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগেই তাঁরা (ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী) কলেজের প্রশাসন ভবন ভাঙচুর করে নেমে এসেছেন। এ ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

No comments

Powered by Blogger.