‘দেশের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক নয়’

দেশে কোন রাজনৈতিক সঙ্কট নেই বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক নয়। গতকাল দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। হানিফ বলেন, খালেদা জিয়া দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র বানাতে ‘উন্মাদ’ হয়ে গেছেন। সোমবার (১৯শে জানুয়ারি) তিনি ফের মানুষ মারার রাজনীতির আহ্বান জানিয়েছেন। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের দায় সরকারের ওপর চাপিয়ে খালেদা জিয়া ‘নির্লজ্জ মিথ্যাচার’ করছেন। তিনি মানুষ হত্যার নিষ্ঠুর রাজনীতি করছেন। দেশে কোন রাজনৈতিক সঙ্কট নেই মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে হানিফ বলেন, পেট্রলবোমা দিয়ে মানুষ মারা কী রাজনৈতিক সঙ্কট? খালেদা জিয়া কী এগুলোকে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বলে মনে করেন? এগুলো তো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এসব কর্মকাণ্ড বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নিয়েছে। হানিফ বলেন, দেশের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক নয়। জঙ্গিবাদী ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী করবে। এখন যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা দ্রুতই স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আমরা আশা করেছিলাম এই ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে খালেদা জিয়া জ্বালাও-পোড়াও এবং ধ্বংসের রাজনীতি থেকে বের হয়ে আসার ঘোষণা দিবেন। অবরোধের নামে মানুষ পুড়িয়ে মারা থেকে তার দলের নেতাকর্মীদের বিরত রাখার ঘোষণা দিবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমরা দেখলাম তিনি মানুষ পুড়িয়ে মারার রাজনীতি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, রিয়াজ রহমানের ওপর নিজেরাই হামলার নাটক সাজিয়ে বিএনপি বিশ্বের কাছে দেশকে হেয় করতে চেয়েছে। এর মাধ্যমে তারা বাংলাদেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। একদিকে মানুষ পুড়িয়ে মারবেন, আরেক দিকে অফিসে বসে শীতকালীন পিকনিক করবেন, একদিকে অবরোধের নামে গাড়ি পোড়াবেন, আরেক দিকে রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিনসহ বিএনপির নেতারা গাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়াবেন তা হয় না। সমপ্রতি গ্রেপ্তার আইএসের কর্মীদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার সম্পর্ক আছে উল্লেখ করে হানিফ বলেন, আইএস দেশে বড় ধরনের নাশকতামূলক ও ধ্বংসাত্মক কার্য করার জন্য পরিকল্পনা এঁটেছিল। খালেদা জিয়ার সঙ্গে এই জঙ্গিবাদী অপশক্তির সম্পর্ক আছে। খালেদা জিয়ার নির্দেশনাতেই অবরোধের নামে বোমানির্ভর তথাকথিত মানুষ পুড়িয়ে মারার আন্দোলনের কর্মসূচি তারা গ্রহণ করছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াই ন্যায়সঙ্গত দাবি করে তিনি বলেন, ফ্রান্স, বেলজিয়ামে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে দেশগুলোর সরকার যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। সেই ঘোষিত যুদ্ধ ন্যায়সঙ্গত হলে বাংলাদেশেও সন্ত্রাস ও জঙ্গিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক লড়াই ন্যায়সঙ্গত ও যৌক্তিক। আমরা এই ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামে জনগণের সমর্থন প্রত্যাশা করছি। বিএনপির সভা-সমাবেশ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোথায় বিএনপিকে সভা-সমাবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না? গত এক বছরে খালেদা জিয়া ১১টি জনসভা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক এডভোকেট আবদুল মান্নান, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুর রাজ্জাক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলি, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. বদিউজ্জামান ভূঁইয়া ডাবলু, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য এনামুল হক শামীম, আমিনুল ইসলাম আমিন, সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.