জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান বলেছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বর্জন করে দেশে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখা যায় না। গতকাল সকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘নাশকতা ও সহিংসতা বন্ধ কর, গণতন্ত্র সমুন্নত রাখ’- স্লোগানে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এ কথা বলেন। ‘বাংলাদেশ রুখে দাঁড়াও’ নামে একটি সংগঠন মানববন্ধনটির আয়োজন কর। ড. আনিসুজ্জামান আরও বলেন, আজ দেশের মানুষ নিরাপদ নয়। তারা সুন্দরভাবে বাঁচতে চায়। সংবিধানে বর্ণিত অধিকার ফিরে পেতে চায়। জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য তিনি সরকার ও বিরোধী উভয় পক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান। তিনি বলেন, সারা দেশে যে তাণ্ডব চলছে তাতে নারী, শিশুসহ সবাই আক্রান্ত হচ্ছে। মানুষকে নির্যাতন করে কোন লক্ষ্য অর্জন সম্ভব নয়। জনগণের সব অধিকার আজ পদদলিত’ উল্লেখ করে আনিসুজ্জামান বলেন, সরকার ও বিরোধীপক্ষ উভয়ের কাছেই আমাদের দাবি, সংবিধানে বর্ণিত সাধারণ জনগণের সব অধিকার ফিরিয়ে দিন। আমাদের নিজস্ব জীবনযাপনের সুযোগ নিশ্চিত করুন। তিনি বলেন, মানুষকে নির্যাতন করে কোন লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব নয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বর্জন করে দেশে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখাও সম্ভব নয়। রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, আমরা শুধু উদ্বিগ্নই নই, আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ। আমরা এ সন্ত্রাস চাই না। আমরা স্বাভাবিকভাবে বাঁচার ও স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই। মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, রাজনীতির বিকল্প সহিংসতা নয়। রাজনীতিকে রাজনীতি দিয়েই মোকাবিলা করতে হবে। ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, সাংবাদিক আবেদ খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)-এর একাংশের সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল প্রমুখ।
‘জ্বালাও পোড়াও রুখে দিতে রাস্তায় নেমে আসুন’
বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধে সহিংসতা রুখে দিতে সর্বস্তরের মানুষকে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতাকর্মীরা। গতকাল বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি)তে এক প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। সমাবেশ থেকে আগামী ২৩শে জানুয়ারি সারা দেশের শহীদ মিনারে সংস্কৃতি প্রতিরোধ এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিকাল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন জোটের সহ-সভাপতি কবি ড. মুহাম্মদ সামাদ, সাধারণ সম্পাদক হাসান আরিফ, গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীর, নাট্য ব্যক্তিত্ব মান্নান হীরা, ঝুনা চৌধুরী প্রমুখ। সভাপতির বক্তব্যে গোলাম কুদ্দুছ বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলাম যেমন তাণ্ডব চালিয়েছিল স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরেও সেই চিত্র দেখা যাচ্ছে। রাজনীতিতে তাদের নামের পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু আদর্শ ও কর্মকাণ্ডের কোন পরিবর্তন হয়নি। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের কাছে গণতন্ত্র মুখ্য নয়। জ্বালাও-পোড়াও, সহিংস হামলার মাধ্যমে এরা দেশে চলমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে চায়। দেশকে অচল করে পাকিস্তান বানাতে চায়। এদের প্রতিহত করতে সরকারকে আরও কঠোর হতে হবে। হরতাল-অবরোধ আহ্বানকারী রাজনৈতিক দলগুলোকেও শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। জোটের সহসভাপতি এবং ইউআইটিএসের ভিসি কবি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, সামনে আর কোন পথ খোলা নেই। হয় যুদ্ধাপরাধী-রাজকারদেরকে থাকতে হবে, নইলে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে থাকতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.