আপাতত না–ও বাড়তে পারে বিদ্যুতের দাম- গণশুনানি শুরু হচ্ছে আজ

চলতি জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে বিদ্যুতের দাম না-ও বাড়তে পারে। যদিও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পাঁচটি বিতরণ কোম্পানি ১ জানুয়ারি থেকেই পাইকারি ও গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠিয়েছিল এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি)। আপাতত মূল্যবৃদ্ধি বিলম্বিত হলেও এর আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার প্রধান অংশ গণশুনানি আজ মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে। শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি বাদ দিয়ে এই শুনানি একটানা চলবে ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। এরপর আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত ঘোষণার জন্য বিইআরসির হাতে ৯০ কার্যদিবস সময় থাকবে। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের অব্যাহত মূল্যহ্রাস ও দেশে বর্তমান সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যবৃদ্ধি বিলম্বিত হওয়ার কারণ বলে জানা গেছে। ২০০৮ সাল থেকে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রধান কারণ উচ্চমূল্যের তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন। এবারের শুনানির বিভিন্ন পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন শিক্ষক অংশ নেবেন। বিইআরসির আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁদের মনোনীত করেছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগত আগ্রহে অংশ নিতে নাম তালিকাভুক্ত হয়েছে আরও চারজনের। তাঁদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক নুরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ এবং এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান ও মো. আলী আজিম নামের দুই ব্যক্তি। অন্যান্য বারের মতো কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), এফবিসিসিআই, এমসিসিআই, ডিসিসিআই, বিটিএমএ এবং কয়েকটি বামপন্থী রাজনৈতিক দল—সিপিবি, বাসদ, গণতন্ত্রী পার্টি, ন্যাপ ও নাগরিক ঐক্যের প্রতিনিধিরা শুনানিতে অংশ নিতে নাম তালিকাভুক্ত করেছেন। এর মধ্যে সিপিবি-বাসদ বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর পরিবর্তে কমানোর জন্য শুনানি করতে লিখিত আহ্বান জানিয়েছে বিইআরসিকে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির দুজন সাংসদ টিপু সুলতান ও ইয়াসিন আলী বিইআরসির কাছে লিখিতভাবে একই আহ্বান জানিয়েছেন। আজ সকাল ১০টায় কারওয়ান বাজারের টিসিবি মিলনায়তনে গণশুনানি হবে বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানোর জন্য পিডিবির দেওয়া প্রস্তাবের ওপর। পিডিবি ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ (ইউনিটপ্রতি প্রায় ৮৪ পয়সা) দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ২০০৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে ২০১২ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ছয়বার বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানো হয়। বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের পাইকারি দাম গড়ে প্রায় ৪ টাকা ৬৪ পয়সা। কাল বুধবার সকালে শুনানি হবে বিদ্যুতের সঞ্চালন মূল্যহার বাড়ানোর জন্য পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) প্রস্তাবের ওপর। সংস্থাটি ৭০ দশমিক ৭৭ শতাংশ সঞ্চালন মূল্যহার বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। বর্তমানে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের সঞ্চালন মূল্যহার প্রায় ২২ পয়সা। এর আগে একবার এই হার বাড়ানো হয়েছিল। গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়ানোর শুনানি প্রথম শুরু হবে আগামীকাল বিকেলে। তখন পশ্চিমাঞ্চল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির (ওজোপাডিকো) প্রস্তাবের ওপর শুনানি হবে। তারা ২১ দশমিক ৩১ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে পিডিবির বিতরণ অঞ্চল ও বিকেলে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) প্রস্তাবের ওপর শুনানি হবে। পিডিবি ২২ শতাংশ ও ডিপিডিসি ১৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ২৫ জানুয়ারি সকালে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) ও বিকেলে ঢাকা বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির (ডেসকো) প্রস্তাবের ওপর শুনানির মধ্য দিয়ে গণশুনানি শেষ হবে। আরইবি ২৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ এবং ডেসকো ১৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে।

No comments

Powered by Blogger.