প্রধানমন্ত্রী দায় নিলে দেশ বধ্যভূমি হবে: রিজভী

প্রধানমন্ত্রী পুলিশি দমনের দায় নিলে সারা দেশ বধ্যভূমিতে পরিণত হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ। দলের সহদপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, শিক্ষামন্ত্রী ১৫ লাখ পরীক্ষার্থীর ভাগ্যের কথা বলে হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহার করতে বিএনপি ও জোটকে আহ্বান জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বলতে আমি চাই, শতকরা ৫ ভাগ ভোট নিয়ে মহাজোট অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জনগণের দুর্ভাগ্যের কারণ হয়ে আছে। ১৬ কোটি জনগণের ভাগ্যের কথা ভেবে ভোটারবিহীন সরকার পদত্যাগ করলেই তো দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসে। পরীক্ষার ফলাফল অস্বাভাবিক, অতিরিক্ত কৃতকার্য দেখানোর জন্য শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও প্রতিযোগিতার মূল দায়িত্ব থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে জাতিকে পঙ্গু বানিয়ে ফেলার উপক্রম করেছে সরকার। তারা আবার পরীক্ষার্থীদের ভাগ্য নিয়ে কথা বলে। রিজভী আহমেদ বলেন, এখন গণতন্ত্রের ভাগ্য চরম দুর্যোগের মুখে, মানুষের মানবিক মর্যাদা ভুলুণ্ঠিত, সার্বভৌম ক্ষমতাকে আত্মসাৎ করে জনগণকেই করা হয়েছে অপমানিত। মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতা ক্ষমতাসীনদের অধীন করা হয়েছে। একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থার বাকশাল পদ্ধতি আবার অবিকলভাবে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। দুঃশাসনের অবসানের মধ্য দিয়েই কেবলমাত্র বর্তমান অবরুদ্ধ জনগোষ্ঠীর মুক্তি সম্ভব, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অগ্রগতি সম্ভব। বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ক্ষমতার নেশায় প্রধানমন্ত্রী দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। শুধু ক্ষমতা ধরে রাখতে তিনি আইন, মানবতা, জনমত, শিষ্টাচার, দেশের বিশিষ্টজনদের পরামর্শ, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর উদ্বেগ কোন কিছুই পরোয়া করছেন না। প্রধানমন্ত্রী ও তার সহযোগীরা অনর্গল শুধু ‘দমন করো’ ‘বিচার হবে’ এই বুলিগুলিই আওড়ে যাচ্ছেন। বন্দুকযুদ্ধের অভিনব গল্প বানিয়ে নয় এখন প্রকাশ্যেই বলে কয়েই বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হচ্ছে। ক্রসফায়ারে শুধু সাধারণ স্তরের নেতাকর্মীরাই নয়, এখন ব্যবসায়ী ও কলেজের অধ্যাপক, যারা দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন তারা পর্যন্ত খুন হচ্ছেন। রিজভী আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী যদি পুলিশি দমনের দায় গ্রহণ করেন তাহলে তো সারা দেশটিকেই এখন বধ্যভূমিতে পরিণত হতে হবে। এই দায় গ্রহণের জন্যই পুলিশ, র‌্যাব, যৌথবাহিনী মরণের বার্তা নিয়ে ঝটিকা আক্রমণ চালাচ্ছে পাড়ায় মহল্লায়। বিএনপি ও জোটের নেতা-কর্মীদের বাসা ও বাড়িতে আহাজারি আর শোকের মাতম। তিনি বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে পুরস্কার ঘোষণার সুযোগ দিয়ে বিএনপি ও জোটের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার চেষ্টা জোরেশোরে চলছে। এই ভোটারবিহীন সরকার আইন, বিচার, শাস্তি সব নিজের হাতে তুলে নিয়েছে।  আইন প্রয়োগকারী বাহিনীগুলোকে ব্যবহার করা হচ্ছে সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার জন্য। আর এই দায়িত্বটি অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করছে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসের পাঠশালা। গু ামি হচ্ছে এদের শাসনপ্রণালী। সন্ত্রাসীরা যেমন আধিপত্য বিস্তার করতে গিয়ে সবকিছু দখল করে নিতে চায়, তেমনি আওয়ামী লীগও তাদের আগ্রাসী ক্ষুধায় বহুদলীয় গণতন্ত্রসহ জাতীয় জীবনের সকল অর্জন উচ্ছেদ করে গোটা দেশটাকেই তাদের জমিদারি বানাতে চায়। রিজভী আহমেদ বলেন, কঠিন কঠোর ব্রত নিয়ে পথে পথে গড়ে ওঠা শান্তিপূর্ণ অবরোধ অব্যাহত রাখতে হবে। এই অবরোধ দেশে শান্তির জন্য, নিরাপত্তার জন্য, মানুষকে তার প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। কোন চোখ রাঙানি, হুমকি আর যৌথবাহিনীর টার্গেট প্র্যাকটিস আন্দোলনকারীদের অদম্য পথ চলাকে থমকে দিতে পারবে না।

No comments

Powered by Blogger.