পোর্টসমাউথের যুবকেরা জঙ্গি হচ্ছে যে কারণে

সিরিয়ায় লড়াই করতে গিয়ে সম্প্রতি নিহত হওয়া
মেহেদি হাসান। টুইটার থেকে নেওয়া ছবি
‘আল-ব্রিটানি ব্রিগেড বাংলাদেশি ব্যাড বয়েজ’ নামে কথিত দলের যে ছয় ব্রিটিশ নাগরিক জঙ্গিদের পক্ষে লড়াই করতে সিরিয়ায় গিয়েছিলেন, তাঁদের সবাই যুক্তরাজ্যের পোর্টসমাউথ নগরের বাসিন্দা। ছয়জনের মধ্যে সম্প্রতি লড়াইয়ে চতুর্থজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর উদ্বিগ্ন সেখানকার বাসিন্দারা। খবর গার্ডিয়ানের। দক্ষিণ ইংল্যান্ডের পোর্টসমাউথ যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকাগুলোর একটি। এখানে মাত্র ১৫ বর্গমাইলে দুই লাখ ১০ হাজার মানুষের বসবাস। বিভিন্ন সূত্রের খবরে বলা হচ্ছে, স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের এসও-১৫ সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা পোর্টসমাউথের সাত হাজারের বেশি মুসলিম বাসিন্দার ওপরে সার্বক্ষণিক নজর রাখছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিমত, দ্বীপের মুসলিম যুবকদের ক্ষুদ্র একটা অংশ সিরিয়া ও ইরাকে সক্রিয় জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিভিন্ন বার্তায় প্ররোচিত হয়েছে। পোর্টসমাউথ জামে মসজিদের পাশেই অবস্থিত গ্লোবেক্স মানি ট্রান্সফার নামের একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশের সঙ্গে কথা বলেন গার্ডিয়ান-এর সাংবাদিক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, যেসব যুবক ব্রিটিশ সমাজে নিজেদের অবস্থান নিয়ে হতাশ, তারা জীবনের অর্থ খুঁজতে সিরিয়ায় গিয়ে জঙ্গি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ধর্মান্তরিত শ্বেতাঙ্গদের দিকে তাকান। তাদের বেশির ভাগই মাদক বা অন্যান্য অপরাধে অতীতে কারাগারে ছিল।
নিজের পরিচয় নিয়ে তারা বিষণ্ন ছিল। এ থেকে মুক্তি পেতে চরমপন্থী হচ্ছে।’ অন্যদের মতে, পোর্টসমাউথের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা যুবকদের চরমপন্থী হওয়ার পেছনে দায়ী। নগরটি সরকারি ও প্রতিরক্ষা খাতের ওপর নির্ভরশীল। সেখানে যুবকদের জন্য ভালো চাকরির সুযোগ নেই বললেই চলে। ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এমআই-ফাইভের এক নথি অনুযায়ী, চরমপন্থী হওয়া ঠেকানোর একমাত্র উপায় হচ্ছে ঝুঁকিতে থাকা গ্রুপগুলোকে চিহ্নিত করে তাদের সমাজের মূলধারায় নিয়ে আসার চেষ্টা করা। ২০১১ সালের দারিদ্র্য মূল্যায়ন প্রতিবেদন অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বঞ্চিত ওয়ার্ডটি পোর্টসমাউথেই। সিটি কাউন্সিলের দাবি, তারা তরুণদের মধ্যে চরমপন্থা ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি নিয়ে কয়েক বছর ধরেই কাজ করছে। কাউন্সিলের একজন মুখপাত্র বলেন, তাঁরা এরই মধ্যে সম্ভাব্য কারণগুলো শনাক্ত করতে পেরেছেন। এর মধ্যে রয়েছে চাকরির অভাব, তরুণ ও বয়োজ্যেষ্ঠদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়া এবং মুসলিম যুবকদের সামনে অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব না থাকা।

No comments

Powered by Blogger.