তিউনিসিয়ায় ঐতিহাসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত- মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আন নাহদা ও নিদার মধ্যে

তিউনিশিয়ায় গতকাল কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। উগ্রবাদীরা যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য দেশটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আরব বসন্তের সুতিকাগার তিউনিসিয়ায় গতকালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ভোটার সমাগম হয় এবং নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই নির্বাচনের মাধ্যমে আরব বিশ্বের সবচেয়ে পশ্চিমের এই ক্ষুদ্র দেশটির মানুষের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটছে। গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবিতে গোটা মধ্যপ্রাচ্যকে টালমাটাল করে দেয়া ‘আরব বসন্ত’ বিপ্লবের সূতিকাগার হলো তিউনিসিয়া।

লিবিয়া ও মিসরের তুলনায় উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ায় টেকসই গণতন্ত্র আসবে বলে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। ‘আরব বসন্তে’ ওই দেশ দু’টির সরকারেরও পতন ঘটে। তবে ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর দেশ দু’টিতে সন্ত্রাসী হামলা ও সামাজিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। তিউনিসিয়ায় বিপ্লব পরবর্তী এই প্রথম নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী মেহদি জোমা দেশটিতে সন্ত্রাসীদের সম্ভাব্য হামলা সম্পর্কে সতর্ক করে দেন। তিউনিসের পূর্বাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্রম পরিদর্শনে এসে মেহদি বলেন, ‘আমরা জানি যে নির্বাচনটি সন্ত্রাসীদের টার্গেটে পরিণত হবে। কারণ এটা এই অঞ্চলে অনন্য দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করতে যাচ্ছে। এই নির্বাচন মানুষের মনে আশার সঞ্চার করেছে।’
শুক্রবার তিউনিসিয়া পুলিশ রাজধানীর উপকণ্ঠে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পাঁচ নারীসহ ছয় সন্দেহভাজনকে হত্যা করে। এর আগে অপর এক ঘটনায় সন্দেহভাজনদের সাথে বন্দুকযুদ্ধে এক পুলিশ নিহত হয়। ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৮০ হাজার সৈন্য ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পার্লামেন্ট নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ইসলামপন্থী আন নাহদা ও সেকুলার দল নিদা তৌনিসের মধ্যে। অন্য যে দলগুলো এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- সেকুলার কংগ্রেস ফর দ্য রিপাবলিক (সিপিআর) এবং ডেমোক্র্যাটিক ফোরাম ফর লেবার অ্যান্ড লিবার্টি (এফডিটিএল)। এ ছাড়াও সাবেক স্বৈরশাসক বেন আলী আমলের কর্মকর্তাদের নেতৃত্বাধীন আরো কয়েকটি দলও এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। আন নাহদা পার্টির নেতা রশিদ ঘানুশি মনে করেন, তিউনিসিয়া শিগগিরই আরব বিশ্বের প্রথম পূর্ণাঙ্গ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আবির্ভূত হবে।

No comments

Powered by Blogger.