দেশজুড়ে ব্যাপক বোমাবাজি ককটেল বিস্ফোরণ, হামলা ভাংচুর

রোববার অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর নির্বাচন প্রতিহত করতে ১৮ দল হরতালের ডাক দেয়। নির্বাচন বানচাল করতে ১৮ দলের নেতাকর্মী ও দুর্বৃত্তরা সারাদেশে চালায় নাশকতা। ব্যাপক বোমাবাজি, ককটেল বিস্ফোরণ, হামলা, ভাংচুরের মধ্য দিয়ে দিনটি পার হয়। প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর : কোম্পানীগঞ্জ (নোয়াখালী) :শনিবার রাত ১০টার দিকে বসুরহাট উত্তর বাজারে দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাংচুর করে পিকেটাররা। শনিবার সন্ধ্যা থেকে গতকাল পর্যন্ত অর্ধ সহস্রাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। অন্যদিকে চরপার্বতী ইউনিয়নের দাসেরহাট এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি দোকান ভাংচুর করে দুর্বৃত্তরা। যৌথ বাহিনী বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে যুবদল-ছাত্রদলের চার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলো জুয়েল, ছারওয়ার, মাহমুদুর রহমান ও জাফর ইকবাল।
জকিগঞ্জ (সিলেট) :শনিবার ভাংচুরের পর পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে জকিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স জ্বালিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে আহত হয়েছেন অ্যাম্বুলেন্সচালক লিটন মিয়া। তাকে কানাইঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম :ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাচন অফিস লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। শনিবার রাত ১০টার দিকে এ ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ এক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে।
রাজবাড়ী :সকালে শহরের পান্না চত্বরে একটি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেলে আগুন দেয় পিকেটাররা।
সাদুল্যাপুর (গাইবান্ধা) :প্রেস ক্লাব ভবনের দক্ষিণ পাশের দেয়াল ঘেঁষে রোববার সকালে একটি ককটেল রেখে গেছে দুর্বৃত্তরা। এদিকে শনিবার রাতে নলডাঙ্গা বাজারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় বাজারের ১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও অগি্নসংযোগ করা হয়।
জিয়ানগর (পিরোজপুর) :উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ এবং একটি রিকশা ও একটি অটোরিকশা ভাংচুর করে পিকেটাররা।
উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) :দইভাঙ্গা এলাকায় সকালে হরতাল সমর্থকরা বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। ফলে ওই পথে কয়েক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
বাকৃবি :বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্যের বাসভবনের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেছে ছাত্রদল। এতে বাসভবনে কর্মরত দুই কর্মচারী আহত হন।
সুনামগঞ্জ :দোয়ারাবাজারের নরসিংহপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জের পশ্চিম বীরগাঁও, ছাতকের কালারুখা ও আলমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে শনিবার রাতে অগি্নসংযোগের ঘটনা ঘটে।
নেত্রকোনা : কলমাকান্দার কৈলাটী ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি সাইদুর রহমান তোতা মিয়ার বাড়িতে শনিবার রাতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) : পুলিশ একটি শাটারগান, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও সাতটি শক্তিশালী বোমা উদ্ধার করেছে। এ সময় দূর্বৃত্তরা পুলিশের টহল দলের ওপর একটি ককটেলের বিস্টেম্ফারণ ঘটায়।
ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) :পূর্ব সাপখাওয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সকালে ১০টি ককটেল বিস্টেম্ফারণের ঘটনা ঘটে। একই উপজেলার নেওয়াশী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের ভোটদানে বাধা দেওয়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিতদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং ঘরজেয়াটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ছয়জন আহত হয়। এ সময় আমির হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। রাতে কচাকাটা জাতীয় পার্টির নির্বাচনী অফিসে অগি্নসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এদিকে দক্ষিণ চর-ভূরুঙ্গামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের সময় ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার স্বপন কুমারকে পিটিয়ে আহত করা হয়। ভোটকেন্দ্রে বিশৃঙ্খলার অভিযোগে ছাত্রদল নেতা আমিনুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।
মাগুরা :সদরের পারনান্দুয়ালী ও স্টেডিয়ামপাড়া এলাকার দুটি ভোটকেন্দ্রে ব্যাপক ককটেল বিস্টেম্ফারিত হয়। এ সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে পারনান্দুয়ালী বোর্ড অফিস কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ আধা ঘণ্টার জন্য স্থগিত করেন প্রিসাইডিং অফিসার আবু নাসির মজনু। ককটেল বিস্টেম্ফারণের ঘটনায় সন্দেহভাজন পাঁচ কিশোরকে আটক করে পুলিশ। পরে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম ভাতিজা ও নির্দোষ দাবি করে তাদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) : আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে শনিবার রাতে দুর্বৃত্তরা জানালায় পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে আগুন ধরিয়ে দেয়।
কেশবপুর (যশোর) :শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে রোববার ভোর পর্যন্ত বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ও সংখ্যালঘু পল্লীতে ব্যাপক বোমাবাজি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। নির্বাচনবিরোধী দুর্বৃত্তদের হাতে পাঁজিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম মুকুল ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইয়ার মাহমুদ আহত হয়েছেন। বায়সা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট জয়দেব দত্তকে অপহরণ করে জখম করা হয়। বেলকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে যাওয়ার সময় সাগদত্তকাটি গ্রামের অনীল মণ্ডল, সরস্বতী মণ্ডল, অনুমতি মণ্ডল, আরতি মণ্ডল, হাজারী মণ্ডলকে মারধর করে মাছের ঘেরের পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। ওই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের ৫/৬টি বসতবাড়ি ভাংচুর করা হয়েছে। বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পোলিং এজেন্টদের কাছ থেকে ভোটার তালিকা কেড়ে নিয়ে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়। কমলাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে যাওয়ার তিনটি সড়ক রাতে কেটে বিচ্ছিন্ন করে ব্যাপক বোমাবাজি করে দুর্বৃত্তরা।
কসবা (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) :শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে পিকেটিং করে নেতাকর্মীরা। এ সময় কয়েক স্থানে ৪-৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে।
খুলনা :ভোট গ্রহণ চলা অবস্থায় রোববার তিনটি ভোটকেন্দ্রের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। এ ছাড়া নগরীর মহেশ্বরপাশা, বণিকপাড়া, নতুন রাস্তার মোড়, সোনাডাঙ্গা আল ফারুক সোসাইটিসহ বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরিত হয়। পুলিশ জানায়, নগরীর পিটিআই ইনস্টিটিউট ভোটকেন্দ্র, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের শিশুমেলা স্কুল ও টুটপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
মহম্মদপুর (মাগুরা) :রাজাপুর ইউনিয়নের রাহাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে রোববার বিকেল ৩টায় হামলা ও ভাংচুর করে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে ব্যালট। এ সময় তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ইরফান ও দুলাল নামের দুই আনসার সদস্য আহত হন। ভোটবিরোধীরা নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত একটি নছিমন ও ভোটকেন্দ্রে ভাংচুর চালায়। একই ঘটনা ঘটেছে ওই ইউনিয়নের নিত্যানন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে। ফলে দুটি কেন্দ্রেই বিকেল ৩টার পর ভোট গ্রহণ স্থগিত করে দেওয়া হয়।
চাটমোহর (পাবনা) :শনিবার রাতে ৮/১০টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া উপজেলার বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দুর্বৃত্তরা পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারে। এদিকে উপজেলার হরিপুরে ভোটারদের বাধা দেওয়ার অভিযোগে এলাকাবাসী স্থানীয় ছাত্রদল নেতা শুভ্রকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
জামালপুর :চারটি আসনে হামলা-ভাংচুর, অগি্নসংযোগ, ককটেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।
বাগেরহাট :পিকআপে অগি্নসংযোগ, বাস ভাংচুর ও ককটেল বিস্ফোরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় পিকআপের চালক হাফিজ অগি্নদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) :উপজেলার ঘরজ্জেয়াটারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ১৮ ও ১৪ দল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ৬ জন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে আহত দু'জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একজনকে আটক করেছে পুলিশ। অন্যদিকে ভূরুঙ্গামারীতে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আহত হয়েছেন প্রিসাইটিং অফিসার।
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) :উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের গারাডোবা সিরাতুন্নবী আলিম মাদ্রাসা ও ভবানীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কেন্দ্রে নির্বাচনবিরোধীরা অস্ত্রের মুখে প্রিসাইটিং কর্মকর্তাদের জিম্মি করে ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে ওই কেন্দ্র দুটিতে ভোট গ্রহণ স্থগিত করে কর্তৃপক্ষ। সাতপোয়া ইউনিয়নের চর সরিষাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে ভোটার ও নির্বাচন বিরোধীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে উম্মত আলী ও মোয়াজ্জেম আলীসহ অন্তত ৭ জন গুরুতর আহত হন। পৌরসভার আরামনগর আলিয়া মাদ্রাসা ও শিমলাপল্লী সাইদুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ব্যালট বাক্স ভাংচুর ও ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজার :শহরে শনিবার রাত ৯টার দিকে জেলা নির্বাচন কার্যালয় লক্ষ্য করে ৩টি ককটেল বিস্টেম্ফারণ ঘটায় জামায়াত-শিবির। রোববার সকাল ৭টার পর থেকে দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের বাজারঘাটার ও টেকপাড়া, বার্মিজ মার্কেট, ঝাউতলাসহ প্রধান সড়কের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় তারা। এ সময় তারা অর্ধশত যানবাহন ভাংচুর করে।
ছাগলনাইয়া (ফেনী) :উপজেলা সদরের জিরো পয়েন্টে পুলিশ বক্সে ও আওয়ামী লীগ কর্মীর দোকানে শনিবার রাতে তাণ্ডব চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তারা উপজেলার জমদ্দার বাজারের জিরো পয়েন্টে সম্প্রতি স্থাপিত পুলিশ বক্সে হামলা চালিয়ে চেয়ার-টেবিল, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, সিলিং ফ্যান ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। বক্সের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কর্মী নুরুল আবছারের ভাই ভাই স্টোরের ব্যাপক ক্ষতি করে তারা। হামলা, ভাংচুর ও অগি্নসংযোগের আগে দুর্বৃত্তরা উপজেলা সদরের মাইলের মাথা, জিরো পয়েন্ট, কলেজ রোড ও উপজেলা পরিষদের সামনে শত শত ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।
শেরপুর :শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনের শ্রীবরদী উপজেলার গড়জরিপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুর্বৃত্তরা রোববার ভোরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিলে ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম পুড়িয়ে দেয়। ফলে ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বাতিল করা হয়। এদিকে শ্রীবরদী উপজেলার পোড়াগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ককটেল বিস্টেম্ফারণের ঘটনায় ওই কেন্দ্রে কর্তব্যরত এক আনসার সদস্য আহত হন। কুড়িকাহনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকালে তিনটি ককটেল বিস্টেম্ফারণের ঘটনায় ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ভোট গ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করেন। শেরপুর-১ আসনের সদর উপজেলার চরজঙ্গলদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে শনিবার রাতে দুর্বৃত্তরা আগুন দিলে কয়েকটি বেঞ্চ পুড়ে যায়।
ঝালকাঠি/রাজাপুর :রাজাপুরের আলগী কেন্দ্রের সামনে দুপুরে একটি ককটেল বিস্টেম্ফারণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা এবং পুলিশ শুক্তাগড় কেন্দ্রের মাঠ থেকে সকালে একটি ককটেল উদ্ধার করেছে। বলারজোর বাজারে আওয়ামী লীগ কর্মী হায়দার আলীকে শনিবার রাতে কুপিয়ে আহত করেছে প্রতিপক্ষরা।
লালমনিরহাট :লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনে হোসনাবাদ ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে পুলিশের রাইফেল ছিনতাই করে ১৮ দল কর্মীরা। পরে পুলিশ তা উদ্ধার করে। পাটগ্রামে সহিংসতার কারণে ৫টি ভোটকেন্দ্র বাতিল করা হয়েছে। লালমনিরহাট-৩ (সদর) আসনের পৌর এলাকার গিয়াস উদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১৮ দল কর্মীরা হামলা চালিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারের গাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় আ'লীগ-বিএনপি কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে পুলিশ টিয়ার শেলের গ্যাস ছোড়ে ও গুলি করে। নিজপাড়া ভোটকেন্দ্রে ১৮ দল কর্মীরা হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর ও ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় সাংবাদিকসহ ৫ জন আহত হন।
পিরোজপুর :কেএম লতিফ ইনস্টিটিউট ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা অবস্থায় সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার আলমগীর হোসেন এবং পোলিং অফিসার জয়নাল আবেদীনকে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান এমপি ডা. আনোয়ার হোসেন।
ভোলা :শহরের চরনোয়াবাদ এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। হরতাল সমর্থকরা বেশ ক'টি ককটেলের বিস্টেম্ফারণ ঘটায়। এতে ৪ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে কমপক্ষে ১০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের শেল ছোড়ে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মোহা মনিরুজ্জামান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ :ভোলাহাট উপজেলার দলদলি ইউনিয়নের আদাতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ৮-৯টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এর আগে সকাল ১০টার দিকে গোমস্তাপুর উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের মকরমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই জন ভোটারকে মারধর করা হয়। এ সময় দুই বিএনপি কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) :উপজেলায় শনিবার রাতে চিরাং ইউনিয়নের বাট্টা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুর্বৃত্তরা ককটেল বিস্টেম্ফারণ ঘটায়। এ সময় তারা নির্বাচনী সরঞ্জামাদি বহনে ব্যবহৃত টমটমে আগুন দেয়। পাহারারত আনসার সদস্যরা আগুন নেভাতে গেলে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপরও হামলা করে।
হবিগঞ্জ :রোববার ভোরে ৪০-৫০ জনের একদল দুর্বৃত্ত বানিয়াচঙ্গ উপজেলার রেদোয়ানা দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে প্রবেশ করে দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসারকে মারধর করে। তারা ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেয়। এ সময় সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার গোপাল দাশ, আনসার হাবিজুর রহমান ও আবু তাহের আহত হন। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু'জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগের দিন রাতে একই উপজেলার তোপখানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে অগি্ন সংযোগ করা হলে ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স পুড়ে যায়। ফলে ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হয়নি। এদিকে গতকাল দুপুরে চৌধুরীপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪টি পেট্রোল বোমা বিস্টেম্ফারিত হয়। এ সময় পুলিশ গুলি ছুড়লে কমল নামে এক পথচারী গুলিবিদ্ধ হন। তাকে সংকটাপন্ন অবস্থায় হবিগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার রাতে তাকবাজখানি প্রাইমারি স্কুল ভোটকেন্দ্রে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ও নিরাপত্তায় নিয়োজিত ৪ আনসার সদস্যকে পিটিয়ে আহত করেছে দৃবৃর্ত্তরা। এ সময় নির্বাচনী সরঞ্জাম ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালালে পুলিশ ১৩ রাউন্ড গুলি ছুড়লে দুবৃর্ত্তরা পালিয়ে যায়।
ছাতক (সুনামগঞ্জ) :উপজেলার কালারুকা ইউনিয়নের দাখিল মাদ্রাসার ভোটকেন্দ্রে শনিবার রাতে দুর্বৃত্তরা ভাংচুর চালিয়েছে। একই সময় উত্তর খুরমা ইউনিয়নের আলমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোটকেন্দ্রে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।
কুড়িগ্রাম :উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর মাদ্রাসা কেন্দ্রে একদল দুর্বৃত্ত হামলা চালিয়ে একটি ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে গেলে দুপুর আড়াইটা থেকে ভোট গ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় হামলায় আহত হন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার এরশাদ হোসেন। ভূরুঙ্গামারী সিনিয়র মাদ্রাসা কেন্দ্রে দুটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে একটি কক্ষের দরজা-জানালায় আগুন ধরে যায়।

No comments

Powered by Blogger.