পীরগাছায় সংঘর্ষে জামায়াত শিবিরের দুই নেতা নিহত

(অগি্নসংযোগে ৪০ কেন্দ্রে ভোট স্থগিত) পীরগাছায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জামায়াত-শিবিরের দুই নেতা নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন_ পারুল ইউনিয়ন জামায়াতের ওয়ার্ড সভাপতি মেরাজুল ইসলাম ও দেউতি বাজার ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাদিউজ্জামান।
শনিবার গভীর রাতে ব্যালট বাক্স ছিনতাই, কেন্দ্রে ও গাড়িতে অগি্নসংযোগ, পুলিশ, আনসার এবং প্রিসাইডিং অফিসারের ওপর হামলার সময় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ৪০টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।
পীরগাছার দেউতি বাজার এলাকায় শনিবার সন্ধ্যা থেকেই জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী জড়ো হয়। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় মিঠাপুকুর উপজেলা থেকে আসা জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা। এরপর রাতে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা এবং দেশি অস্ত্র নিয়ে দেউতি উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ঢুকে পড়ে। এরপর তারা ভাংচুর ও অগি্নসংযোগ এবং ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্স ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এতে তারা পিছু হটে যায়। পরে তারা ফের সংগঠিত হয়ে রাত ২টার দিকে ৪০-৫০টি ককটেল বিস্টেম্ফারণ ঘটিয়ে আবারও ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করে। প্রবেশ করেই তারা কেন্দ্রে থাকা পুলিশসহ সবাইকে মারধর শুরু করে। এ সময় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ও কয়েকটি ভটভটিতে আগুন দেয় তারা। পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছোড়ে।
এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে পীরগাছা উপজেলার দেউতি গুঞ্জরখাঁ এলাকার মৃত আজিমুদ্দিনের ছেলে মেরাজুল ইসলাম ও বিরাহিমপুর এলাকার ওজায়ের মিয়ার ছেলে হাদিউজ্জামান মারা যান। আহত হন প্রিসাইডিং অফিসার মনোয়ার হোসেন, এসআই জুলফিকার আলী, এএসআই বিধান চন্দ্র, কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা, এনামুল হক এবং জামায়াত-শিবিরকর্মী ইছাহাক আলী, রোকন, সামু, কবির, লেবু, মোস্তাক, কবিরসহ ২৫ জন।
দেউতি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের আহত প্রিসাইডিং অফিসার মনোয়ার হোসেন জানান, যত লোক এসে আমাদের ওপর হামলা করেছে তাতে আমাদের বেঁচে থাকার কথা নয়। পুলিশ সদস্যরা গুলি চালানোর পর তারা একটু শান্ত হয়।
নিহত মেরাজুলের স্ত্রী মমতাজ বেগম জানান, লোকমুখে শুনতে পান তার স্বামী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। তবে সকাল ১০টায় ওই বাড়িতে গিয়ে কোনো লাশ দেখা যায়নি। পরে বিকেলে লাশ দাফন করা হয়েছে। পীরগাছা থানার ওসি মকবুল হোসেন জানান, জামায়াত-শিবির ও বিএনপি ক্যাডারদের হামলায় দেউতিতে পুলিশের ৫ সদস্য আহত হন।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাতভর পীরগাছা উপজেলার ৯০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৮০টিতে হামলা চালায় জামায়াত-শিবির ও বিএনপি। তারা ব্যালট পেপার এবং ব্যালট বাক্সে অগি্নসংযোগ করে। এ কারণে পীরগাছায় ৪০টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়।
পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলিয়া ফেরদৌসী জানান, নিরাপত্তা ও ঘন কুয়াশার কারণে বেশির ভাগ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করতে কিছুটা দেরি হয়েছে।
রংপুর-৪ পীরগাছা-কাউনিয়া আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগের টিপু মুনশি ও জাপার করিম উদ্দিন ভরসা। তবে করিম উদ্দিন মাঠে নেই।

No comments

Powered by Blogger.