জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি গণজাগরণ মঞ্চের

গণজাগরণ মঞ্চের অভয়নগর মালোপাড়া অভিমুখে রোডমার্চ গতকাল শনিবার শেষ হয়েছে। বিকেলে যশোরের চিত্রা মোড়ে জনসভার মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানানো হয় এ জনসভায়। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা রুখে দেওয়ার প্রত্যয় ও সাম্প্রতিক হামলায় জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবিতে গত শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগের প্রজন্ম চত্বর থেকে এ রোডমার্চ শুরু হয়। রোডমার্চ গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অভয়নগর উপজেলার চাপাতলা মালোপাড়ায় পেঁৗছায়। গাড়িবহর প্রথমে চাপাতলায় পেঁৗছে। এরপর নেতাকর্মীরা সেখান থেকে মিছিল সহকারে ক্ষতিগ্রস্ত মালোপাড়ায় যান। সেখানে মানুষের ঢল নামে। সমাবেত হাজার হাজার মানুষের উদ্দেশে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেন, ধর্ম আর সাম্প্রদায়িকতা এক নয়। কোনো ধর্মই মানুষকে হত্যা, তাদের বাড়িঘরে আগুন, লুটপাট, ধর্ষণের মতো নিকৃষ্ট কাজের অনুমতি দেয় না। তিনি বলেন, যারা এসব অপকর্ম করছে, তারা ইসলামের শত্রু, মানবতার শত্রু। তিনি হামলাকারী সন্ত্রাসীদের উদ্দেশে বলেন, যারা এসব অপকর্ম করে তারাই সংখ্যালঘু, নির্যাতিতরা নন। গণজাগরণ মঞ্চের সমাবেশ শেষে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে শাড়ি, লুঙ্গিসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করা হয়। পরে গণজাগরণ মঞ্চের নেতৃবৃন্দ মালোপাড়া ঘুরে দেখেন। এখানে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক বাপ্পাদিত্য বসু, লাকি আক্তার,
মাহমুদুল হক মুন্সী, হাসান তারেক, শাহজাহান আলী সাজু, গণজাগরণ মঞ্চ যশোরের আহ্বায়ক কাজী আবদুস শহীদ লাল, যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ, সানোয়ার আলম খান দুলু প্রমুখ। এর আগে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে ডা. ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বে গণজাগরণ মঞ্চের চার শতাধিক নেতাকর্মী যশোরে আসেন। শনিবার সকাল ১০টার দিকে বহরটি মালোপাড়ার উদ্দেশে যশোর শহর ত্যাগ করে। বিকেলে যশোরের চিত্রা মোড়ে গণজাগরণ মঞ্চের রোডমার্চ সমাপনী সমাবেশে বক্তব্য দানকালে মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেন, জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি বহাল রেখে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণ হবে না। তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।
দু'দিনব্যাপী যশোরমুখী রোডমার্চের তিন দফা দাবি তুলে ধরে তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বন্ধে কঠোর আইন করতে হবে। এসব ঘটনার বিচারে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ইমরান এইচ সরকার বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলা হলেই এক দল আরেক দলের ঘাড়ে দোষ চাপায়। এভাবে দোষারোপের রাজনীতি করে সহিংসতার বিচার হবে না। দোষারোপের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। প্রত্যেক পাড়া-মহল্লায় সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটি গঠনের তাগিদ দেন ইমরান এইচ সরকার। একই সঙ্গে তিনি অভয়নগরের মালোপাড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি পরিবারপ্রতি ২০ হাজার ও বাকি ১০০ পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে প্রদানের ঘোষণা দেন। এ ছাড়া তিনি মনিরামপুরের ধর্ষর্ণের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন। গণজাগরণ মঞ্চ যশোরের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কাজী আবদুস শহীদ লালের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মঞ্চের সংগঠক মাহমুদুল বাঁধন, বাপ্পাদিত্য বসু, শামসুল ইসলাম সুমন, হাসান তারেক, রাহাত আহমেদ, গণজাগরণ মঞ্চ যশোরের যুগ্ম আহ্বায়ক এএইচএম মুযহারুল ইসলাম মন্টু, সদস্য সচিব সুকুমার দাস, অ্যাডভোকেট মাহমুদ হাসান বুলু প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.