ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল

ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কাল শুক্রবার ভোট গ্রহণ করা হবে। জয়ের সম্ভাবনায় কট্টরপন্থী প্রার্থীরাই এগিয়ে। সব মিলিয়ে এই নির্বাচন দেশটিতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পরিবর্তন আনতে পারবে না বলেই ধারণা করছেন বিশ্লেষকেরা। একমাত্র উদারপন্থী প্রার্থী এখনো প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। কট্টরপন্থীদের মধ্যে ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে তেহরানের পক্ষের প্রধান আলোচক সাইদ জলিলি এগিয়ে আছেন। তাঁর সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে আরেক কট্টরপন্থী নেতা আলী আকবর বেলায়েতির। নির্বাচনে একমাত্র উদারপন্থী প্রার্থী বলে পরিচিত হাসান রুহানি দেশটির সংস্কারপন্থী নেতাদের সমর্থন পেয়েছেন। নির্বাচনে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির কারণে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি প্রধান ইস্যু হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। কিন্তু সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ও লেবাননের কট্টরপন্থী গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রতি তেহরানের সমর্থন দেওয়ার বিষয়টি ছয় প্রার্থীর কেউই তুলছেন না। বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ তাঁর দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন সময় ইসরায়েলের ধ্বংস চেয়ে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়েছেন। পশ্চিমাদের প্রতি বিষোদগার করেছেন। নতুন প্রেসিডেন্টও তাঁর থেকে আলাদা হবেন না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাই বলা হচ্ছে, ইরানে নির্বাচনের পর গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। পশ্চিমা একজন কূটনীতিক বলেন, ‘নতুন প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে আমরা আসলে নতুন কিছু আশা করছি না। কারণ, আমরা জানি ইরানের নীতিনির্ধারণ করেন তাঁদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।’ যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইরানবিষয়ক বিশ্লেষক মোহসেন মিলানি বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি বা গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় প্রেসিডেন্ট শুধু তাঁর আসনে বসে থাকেন। এবারের নির্বাচনের পর ২০০৯ সালের মতো নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এবার সড়কে কোনো জনসমাবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। শহরে প্রার্থীদের জনসমাবেশ করারও অনুমতি দেওয়া হয়নি। স্টেডিয়াম বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে প্রচারণা চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। চার বছর আগের নির্বাচনী প্রচারণার সঙ্গে যার পার্থক্য অনেক। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইরানি সাংবাদিক হুমান মজিদ বলেন, অন্যবারের তুলনায় এবার নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার বিষয়ে সরকার বেশ সচেতন। কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের গোলযোগ ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। ইরানে সংস্কারপন্থীদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামি। এবারের নির্বাচনে তিনি একমাত্র উদারপন্থী প্রার্থী রুহানিকে সমর্থন দিয়েছেন। উদারপন্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট আকবর হাশেমি রাফসানজানিরও সমর্থন পেয়েছেন রুহানি। রাফসানজানি প্রেসিডেন্ট থাকার সময় তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন রুহানি। রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.