পরিচ্ছন্ন নগরী গড়তে চাই by মো. মনিরুজ্জামান মনি

কালের কণ্ঠ : কেসিসির মেয়র নির্বাচিত হলে আপনি নগরবাসীর জন্য কী করবেন?
মো. মনিরুজ্জামান মনি : খুলনাকে একটি সুন্দর পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।
এই নগরীর প্রধান সমস্যা নগরবাসীর কাছে পানি পৌঁছানো, ড্রেনেজ সিস্টেমের উন্নয়ন ঘটানো, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ঘটানো, মাদকমুক্ত করা।
আমি নির্বাচিত হলে অকার্যকর ওয়াসাকে একটি কার্যকর প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করব। ওয়াসা একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। এর দায়িত্ব পানি সরবরাহ ও পয়োনিষ্কাশন পদ্ধতির উন্নয়ন ঘটানো। কিন্তু স্থাপিত হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত এটি একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে কোনো ভূমিকা পালন করতে পারেনি। এটির কার্যক্রম সেই পুরনো আমলের পৌরসভার পানি সরবরাহ বিভাগের মতো। খুলনার ড্রেনেজ সিস্টেমের উন্নয়ন ঘটানো না গেলে এই নগরী একটি জলাবদ্ধতার নগরীতে পরিণত হবে। সেই সঙ্গে রাস্তাগুলো আরো সংস্কার, প্রশস্তকরণ ও নতুন নতুন রাস্তা তৈরি করতে হবে। খুলনার সঙ্গে আন্তজেলা সংযোগ রক্ষাকারী রাস্তাগুলো বিশেষত কেডিএ নির্মিত রাস্তাগুলো যা কেসিসির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, সেগুলোর ব্যবস্থাপনা জটিলতা নিরসন করা হবে।
কালের কণ্ঠ : নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে কি সুনির্দিষ্ট কোনো পদক্ষেপ নেবেন?
মো. মনিরুজ্জামান মনি : খুলনায় জলাবদ্ধতার সমস্যাটি অনেক দিনের পুরনো। আমাদের নিষ্কাশন খালগুলো সব নদীর সঙ্গে মিশেছে। নগরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া ভৈরব ও রূপসা নদীর জোয়ারের সময় এই নিষ্কাশন খালগুলো দিয়ে পানি নিষ্কাশিত হতে পারে না। নিষ্কাশনের জন্য ভাটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। এ কারণে আমাদের নিষ্কাশন খালগুলোর কার্যকারিতা আরো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। অবৈধভাবে যে খালগুলো প্রভাবশালীরা দখলে রেখেছে, তা পুনরুদ্ধার করে নিষ্কাশন খালগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা হবে।
কালের কণ্ঠ : শিল্প কল-কারখানা পুনরুজ্জীবনে কী পদক্ষেপ নেবেন?
মো. মনিরুজ্জামান মনি : বহু আগে থেকেই খুলনা শিল্প ও বন্দরনগরী। এখানে পাটভিত্তিক শিল্প গড়ে উঠেছিল। আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের চাহিদা কমে যাওয়ায় আমাদের পাটশিল্প মার খেতে থাকে। এর সঙ্গে অব্যবস্থাপনা যুক্ত হয়ে জুটমিলগুলো একে একে বন্ধ হয়ে যায়। অন্যান্য শিল্প কল-কারখানাও একে একে বন্ধ হতে থাকে। এতে শিল্পশ্রমিকরা কাজের সুযোগ হারায়। পাশাপাশি খুলনাও শ্রীহীন হয়ে পড়ে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। এখনকার সময়ের চাহিদা অনুযায়ী শিল্প কল-কারখানা গড়ে তুলতে হবে। আপনারা সবাই জানেন, শিল্পের জন্য শক্তির উৎস হিসেবে বিদ্যুৎ-গ্যাস অপরিহার্য। আমি নির্বাচিত হলে বিদ্যুৎ সংযোগ ও জেনারেটর স্থাপনের ক্ষেত্রে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কালের কণ্ঠ : ভোটারদের উদ্দেশে কী বলবেন?
মো. মনিরুজামান মনি : নগরবাসীর সমর্থন পেয়ে আমি মেয়র নির্বাচিত হলে আমার কার্যকালে হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধি করা হবে না এবং নতুন হোল্ডিংপ্রাপ্তি সহজতর করা হবে। সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কাঠামো ঢেলে সাজানো হবে। কেসিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত আবাসন নির্মাণ ও নিয়মানুযায়ী তাদের মানসম্মত শিক্ষা-চিকিৎসার সুব্যবস্থা করা এবং মাস্টার রোলের কর্মচারীদের জন্য পদ সৃষ্টি করে স্থায়ী করা হবে। হকার, রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক-বেবিট্যাক্সিচালক, নির্মাণশ্রমিক, মোটরশ্রমিক, শিল্পশ্রমিক, হোটেল কর্মচারী, গৃহকর্মীসহ শ্রমজীবী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পেশাগত সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধির ন্যায়সংগত আন্দোলনের পাশে থাকব। নগরীর হতদরিদ্র, ছিন্নমূল, ভবঘুরে ও ভিখারিদের পুনর্বাসনের জন্য কর্মরত সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগ ও তৎপরতা আরো বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কালের কণ্ঠ : আপনাকে ধন্যবাদ।
মো. মনিরুজ্জামান মনি : আপনাকেও ধন্যবাদ।

No comments

Powered by Blogger.