জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৬৬তম অধিবেশনসহ কয়েকটি বৈঠক ও আলোচনায় অংশ নিতে ১১ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে নিউইয়র্কের উদ্দেশে তিনি ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। রোববার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, তিন বাহিনীর প্রধান ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সফরে প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন। এছাড়া ২১ সেপ্টেম্বর ইউএনজিএর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও উপস্থিত থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগদান ছাড়াও জাতিসংঘ মহাসচিব আয়োজিত সন্ত্রাস দমন, সংক্রামক ব্যাধি, নারীর ক্ষমতায়ন ও খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ক সম্মেলনে যোগ দেবেন। সফরকারে প্রধানমন্ত্রী তার মেডিকেল চেকআপও করাবেন।

প্রধানমন্ত্রী ১৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ মহাসচিব আয়োজিত সন্ত্রাস মোকাবিলা বিষয়ক এক সিম্পোজিয়ামে মূলভাষণ দেবেন। সিম্পোজিয়ামে সন্ত্রাস মোকাবিলা বিষয়ে বক্তব্য উপস্থাপনের পর প্রধানমন্ত্রী মার্কিন ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের সামনে তার বক্তব্য জানাবেন। এদিন তিনি সাধারণ পরিষদ হলে ‘প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল অব নন-কমিউনিক্যাবল ডিজিস’ শীর্ষক এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে ভাষণ দেবেন। ২০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ-এর কনফারেন্স অব পার্টিজের (সিওপি) বর্তমান ও পরবর্তী সভাপতি আয়োজিত জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষক সংলাপে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি মার্কিন চেম্বার ও এশিয়া সোসাইটি আয়োজিত এক মধ্যাহ্নভোজেও যোগ দেবেন। পরে জাতিসংঘ মহাসচিবের সাথে ‘এভরি ওম্যান এভরি চাইল্ড’ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সাথে তার ওয়ালডর্প হোটেল স্যুটে শিকাগোর অটিজম প্রবক্তা ডেভিড স্ট্রেনফিল্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে মেম্বারস অব অটিজম স্পিকস সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।

শেখ হাসিনা ২১ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন দেশের ডেলিগেশন প্রধানদের সম্মানে জাতিসংঘ মহাসচিবের মধ্যাহ্নভোজ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেবেন। পরদিন ২২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী পল্লি নারীদের ক্ষমতায়ন এবং খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন। জাতিসংঘ উইমেন এবং জাতিসংঘ পপুলেশন ফান্ড এই আলোচনার আয়োজন করবে। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ককাসের কো-চেয়ারম্যান কংগ্রেসম্যান জোসেফ ক্রাউলি, কমনওয়েলথ মহাসচিব ও সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ ও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।

সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দক্ষিণ সুদানের প্রেসিডেন্ট, তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী, নেপালের প্রধানমন্ত্রী, স্লোভেনিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং জাতিসংঘ মহাসচিবের সাথে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ২৪ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের সাথে এক সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন। পরে তিনি তার সম্মানে বাংলাদেশ কমিউনিটি আয়োজিত সংবর্ধনায় যোগ দেবেন। সফর শেষে তিনি আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. রুহুল হক ও অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব এমএ করিম ও প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে আছেন। এছাড়া একটি উচ্চ পর্যায়ের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলও তার সাথে আছে।

No comments

Powered by Blogger.