গাদ্দাফির পতন ঘনিয়ে এসেছে

লিবিয়ার বিদ্রোহীদের বেনগাজিভিত্তিক ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিলের (এনটিসি) প্রধান মুস্তাফা আবদেল জলিল গতকাল শনিবার বলেছেন, লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতন ঘনিয়ে এসেছে। তিনি বলেন, আমরা গাদ্দাফি সরকারের ভেতরের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সব তথ্য-প্রমাণে এটি স্পষ্ট যে অচিরেই গাদ্দাফির পতন হবে।
লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখল করার দাবি করেছে বিদ্রোহীরা। তবে সরকার বিদ্রোহীদের এই দাবি অস্বীকার করে বলেছে, শহর দুটি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বিদ্রোহীদের মিসরাতা মিলিটারি কাউন্সিলের কর্মকর্তা মুনির রামজি বলেন, গত শুক্রবার গাদ্দাফি বাহিনীর সঙ্গে প্রচণ্ড লড়াই শেষে ত্রিপোলির ১৬০ কিলোমিটার পূর্বাঞ্চলীয় জ্লিতান এবং ৩০ কিলোমিটার পশ্চিমাঞ্চলীয় জাওয়িইয়া শহর দখল করা হয়।
মুনির রামজি বলেন, বিদ্রোহীরা জ্লিতান দখলের পর শহরটির পশ্চিমাঞ্চলে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, শুক্রবারের লড়াইয়ে ৩১ জন বিদ্রোহী নিহত ও আরও ১২০ জন আহত হয়। মিসরাতা থেকে ত্রিপোলি যাওয়ার ক্ষেত্রে জ্লিতান শহর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এত দিন গাদ্দাফির অনুগত বাহিনী শহরটি ঘিরে রেখেছিল।
জাওয়িইয়ার একজন বিদ্রোহী বিবিসিকে বলেন, এখানকার সব জায়গা থেকে গাদ্দাফির অনুগত বাহিনীকে হটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এখন আমরা শহরের কেন্দ্রে ব্যাপক উল্লাস করছি।
বিদ্রোহীরা জাওয়িইয়া দখলের পর ত্রিপোলি থেকে তিউনিসিয়া যাওয়ার মূল সড়ক বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এতে গাদ্দাফির বাহিনীর কাছে রসদ পৌঁছানোর প্রধান সড়কটি বন্ধ হয়ে গেছে। গত মঙ্গলবার বিদ্রোহীরা জাওয়িইয়ার বাইরে একটি তেল শোধনাগার দখল করে নেয়। এ শোধনাগার থেকে গাদ্দাফি বাহিনীর জন্য জ্বালানি সরবরাহ করা হতো। শুক্রবার রাতে গাদ্দাফি সরকারের তথ্যমন্ত্রী মুসা ইব্রাহিম বলেন, জ্লিতান ও জাওয়িইয়া দুটি শহরের ওপরই তাঁদের সেনাদের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
এ ছাড়া বিদ্রোহীরা দাবি করেছে, লিবিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আবদেল সালাম জাল্লাউদ তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। তবে তাঁর অবস্থান সম্পর্কে বিদ্রোহীরা কিছু জানায়নি। ১৯৬৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে জাল্লাউদ গাদ্দাফিকে সহায়তা করেছিলেন। তবে নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে গাদ্দাফির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন তিনি।

No comments

Powered by Blogger.