পাকিস্তানের শোয়েব-বাজি!

বুড়ো বাঘও তো থাবা দিয়ে দু-চারটা হরিণ ঘায়েল করতে পারে। আর তাই ‘শোয়েব আখতারকে ফেরাও’ ‘শোয়েব আখতারকে ফেরাও’ রব উঠেছে পাকিস্তানে। শুরুটা করেছিলেন ইমরান খান। আরেক সাবেক অধিনায়ক রশিদ লতিফও সুর মিলিয়েছেন ইমরান খানের সঙ্গে। এবার ওয়াসিম আকরামও বললেন, সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে অবশ্যই ফেরানো উচিত শোয়েবকে।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সাত ম্যাচের মাত্র তিনটিতে খেলেছেন শোয়েব। এর মধ্যে ১০ ওভারের বোলিং কোটা পূরণ করার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র এক ম্যাচে। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ডের ম্যাচেই সর্বনাশ। তাঁর বলেই রস টেলরকে আউট করার সুযোগ লুফে নিতে পারেননি কামরান আকমল। সেই টেলর সেটার মাশুল তুলেছেন তাঁরই এক ওভারে ২৮ রান তুলে। শোয়েবের বিশ্বকাপ-ভাগ্যও সেখানেই নির্ধারিত হয়ে গেছে। অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি বলেই দিয়েছেন, বিশ্বকাপে শোয়েবের আর খেলার সম্ভাবনা নেই।
বিশ্বকাপ খেলেই শেষ করতে চাওয়া এই ৩৫ বছর বয়সীকে খেলানোর পরামর্শ দিচ্ছেন আকরাম। তাঁর মতে, শোয়েব এমন একটা বাজির ঘোড়া, যার ওপর বাজি ধরলে সেটার হয় ফল আসবে, নয়তো নয়। মাঝামাঝি কিছু শোয়েব করবেন না, ‘হয়তো পাকিস্তান ভারতের বিপক্ষে শোয়েবকে খেলাবে। আমার মনে হয় একাদশে জায়গা ওর প্রাপ্য। ওয়াহাব রিয়াজ ভালো বোলিং করছে বটে, কিন্তু ব্যতিক্রম কিছু নয়। শোয়েব তাই ওর জায়গা নিতেই পারে।’
শোয়েব যে একেবারেই খারাপ বোলিং করেছেন, তা নয়। বরং নতুন বলে প্রথম স্পেলে আগুনই ঝরিয়েছেন। সমস্যা দেখা দিয়েছে দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় স্পেলে। সর্বকালের অন্যতম সেরা পেসার আকরামও ধরতে পেরেছেন সমস্যাটি, ‘ওকে তাই পরামর্শ দিয়েছি, দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে আসার আগে ভালোমতো ওয়ার্মআপ করতে। তা হলে সেটি ওকে আরও সাহায্য করবে।’
শোয়েবের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তো আছেই, পাশাপাশি মানসিক লড়াইয়ের জায়গাতেও তাঁর অন্তর্ভুক্তি বাড়তি রসদ পাকিস্তানকে জোগাবে। সবচেয়ে বেশিবার যেসব ব্যাটসম্যানকে আউট করেছেন, এর চারজনের তিনজনই ভারতীয়। তাঁর বিপক্ষে সৌরভ গাঙ্গুলী ভীষণ নড়বড়ে ছিলেন। ওয়ানডেতে সৌরভকে আউট করেছেন ৬ বার। ৫ বার করে আউট করেছেন পন্টিং, দ্রাবিড় ও টেন্ডুলকারকে। ২০০৩ বিশ্বকাপেও টেন্ডুলকার তাঁরই শিকার।
‘ভারতীয়দের বিপক্ষে শোয়েব কিন্তু সব সময়ই ভয়ংকর। আমি জানি ওকে নেওয়াটা অনেক বড় ঝুঁকি। কিন্তু যে সাহসীরা ঝুঁকি নেয়, ভাগ্য তাদেরই সহায়তা করে। টেন্ডুলকার-শেবাগ অন্য মাপের ব্যাটসম্যান। কিন্তু শোয়েবের সঙ্গে তাদের লড়াইটা একেবারেই অন্য মাত্রার। শোয়েব আসলে সত্যিকারের এক বিনোদনদাতা। বড় উপলক্ষ পেলেই ও ঝলসে ওঠে।’ আর তা ছাড়া বসে থাকতে থাকতে শোয়েবের হাতও নাকি নিশপিশ করছে।
এত কিছু বলার পরও আকরাম অবশ্য স্বীকার করে নিয়েছেন, সেমিফাইনালের ম্যাচটিতে ভারতই ফেবারিট। তবে তাঁর পাদটীকা, হিসাব পাল্টে দিতে পাকিস্তানই তো ওস্তাদ!

No comments

Powered by Blogger.