ডনের কাছে ‘ডনের’ হার

সুনীল গাভাস্কার, কপিল দেব—ভারতের দুই কিংবদন্তির দুটি মাইলফলকের সাক্ষী মোতেরা স্টেডিয়াম। শচীন টেন্ডুলকারের প্রথম টেস্ট ডাবল সেঞ্চুরিও এই মাঠেই। পরশুর এমন আরেকটা মাইলফলকের সাক্ষী হওয়ার সুযোগ ছিল মোতেরার। ক্রিকেটের এই যুগের ‘ডন’ টেন্ডুলকারের সুযোগ ছিল আসল স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যানের একটা কীর্তিকে ছুঁয়ে ফেলার। ১৯৪৭ সালে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ভারতের বিপক্ষেই ডন করেছিলেন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তাঁর শততম সেঞ্চুরি।
মোতেরা ভারতের জয় দেখল। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার ১২ বছরের রাজত্বের অবসান দেখল। কিন্তু আসল যে ব্যাপারটি দেখার জন্য সাগ্রহ অপেক্ষা ছিল, সেটি ফুরোল না। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজের শততম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরিটি করতে পারলেই না ডনকে একটা জায়গায় ছুঁতে পারতেন। পারেননি মোতেরাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজের শততম সেঞ্চুরিটির সাক্ষী করতে।
যে মাঠ নিউজিল্যান্ডের রিচার্ড হ্যাডলিকে ছাড়িয়ে টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেটের মালিক হতে দেখেছে কপিল দেবকে, যে মাঠ গাভাস্কারকে দেখেছে টেস্টে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০ হাজার রান পেরোতে; সেই মাঠ একেবারে বঞ্চিত হয় কী করে! একটা মাইলফলক ঠিকই ছুঁয়েছেন টেন্ডুলকার। দেখল ওয়ানডে ক্রিকেটে টেন্ডুলকারের আরেকটি মাইলফলক। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে হেরে যাওয়ার প্রতিশোধ নিতে বড় ভূমিকা রাখা ৬৮ বলে ৫৩ রানের ইনিংসটি খেলার পথে তিনি ছুঁয়েছেন ওয়ানডে ক্রিকেটের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১৮ হাজার রানের মাইলফলক।
তবে শততম সেঞ্চুরির আশাটি তিনি ঠিকই জাগিয়েছিলেন দুর্দান্ত স্ট্রোক-প্লের মাধ্যমে। কিন্তু ফাস্ট বোলার শন টেইটের একটি বল তাঁর ব্যাটের কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে উইকেটকিপার ব্র্যাড হাডিনের হাতে। টেন্ডুলকার কিন্তু আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের জন্য এক মুহূর্ত অপেক্ষা করেননি। এবং আবার ‘হাঁটা’ই দিচ্ছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচের মতো। কিন্তু দ্বিধান্বিত আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড তাঁকে থামিয়ে বলটি বৈধ ছিল কি না, তা জানতে চান তৃতীয় আম্পায়ারের কাছে। টিভি রিপ্লে দেখায়, বলটি প্রায় ‘নো’ হতে হতেও হয়নি। টেইটের পেছনের পা-টা মাটিতে পড়েনি!

No comments

Powered by Blogger.